বাবুবাজারে ব্রীজের নিচে ২০ টাকার রশিদে ১৫শ টাকা পার্কিং আদায়!

অপরাধ আইন ও আদালত ঢাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক : পুরানো ঢাকার বাবুবাজারে বুড়ীগঙ্গা ২ নম্বর সেতুর নিচে প্রতি পণ্যবাহী পরিবহণে ২০ টাকার রশিদ দিয়ে ১৫ শ টাকা পার্কিং ভাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিদিন ভোরে রাজধানীসহ পাশ্ববর্তী জেলার বিপুল সংখ্যাক ফল ব্যবসায়ীরা ট্রাক, কন্টেইনার, কভার্ডভ্যান, পিকআপ এ সেতুর নিচে পার্কি করিয়ে বাদামতলী মোকাম থেকে ফল কিনে বোঝাই করে আবার খালাসও করে। এজন্য প্রতিদিন মধ্য রাত থেকে শত শত পণ্যবাহী পরিবহণ এখানে পার্কিং শুরু করে। এক শ্রেণির পরিবহণ চাঁদাবাজরা গাড়ীর চালক বা ব্যবসায়ীর হাতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের নির্ধারিত একটি ২০ টাকার রশিদ ধরিয়ে সর্বনি¤œ ২৫০ থেকে ১৫শ টাকা পর্যন্ত চাঁদা নিচ্ছে।
তথ্যানুসারে জানা গেছে, বিরোধী দলের এক স্থানীয় নেতা হাজী পিনচুর নেতৃত্বে জুয়েল, ছোট মাসুম, বড় মাসুম, বাবু, নজীর ও বশির, সকাল ৭টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করছে। এছাড়া বাবুবাজার বাসষ্ট্যান্ড থেকে গাবতলী ছেড়ে যাওয়া সেন্ট্রাল লাইন পরিবহণের লাইনম্যান উজ্জ্বল ও আলমগীরে থেকে দৈনিক ৭শ এবং প্রত্যয় ট্রান্সপোর্ট পরিবহনের প্রত্যেক চালক থেকে দৈনিক ১২০ টাকা, এছাড়া বাবুবাজার টু সিকশন চলাচলকারী ৪০টি লেগুনা পরিবহণের প্রত্যেকটি থেকে দৈনিক ১শ টাকা পাকিংয়ের জন্য আদায় করছে। গণপরিবহনের এসব চাঁদা হাজী পিনচু স্ব-শরীরে তুলছে। এসব গণপবিহনের কয়েকজন প্রতিনিধি নাম প্রকাশ না করার শর্তে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন-আমরা রোজের বেতনে চাকরি করি, এরা এখানকার স্থানীয় প্রভাবশালী লোক, এদের অনেক সান্ডা-পান্ডা আছে। তাছাড়া পুলিশের লোকদের সাথে তাদের গভীর সখ্যতা রয়েছে এবং পুলিশের লোকেরা প্রায়ই সময় তাদের সাথে আড্ডা করে। ফলে শারিরীক নির্যাতন ও পরিবহণের ক্ষয়-ক্ষতি থেকে রক্ষা পাবার জন্য বাধ্য হয়ে আমাদেরকে এ চাঁদা দিতে হচ্ছে। তা না দিলে এখানে গাড়ী পার্কিং করতে দেয় না, বিভিন্ন রকমের ঝামেলা করে। তারা যেটা করছে পুলিশ প্রশাসন হাতে রেখেই করছে। আমরা উভয়ের কাছে জিম্মি। সেহেতু আমাদের কিছুই করার নেই। অপরদিকে নিয়মিত ওই পার্কিং ব্যবহারকারী গাড়ীগুলির মধ্যে ঢাকা মেট্রো-ট-১৪-৫৫৩৬ নম্বরযুক্ত কন্টেইনার পরিবহণের চালক আরিফ জানান-আমি প্রতি সপ্তাহে স্থলবন্দর থেকে ফলের ট্টিপ নিয়ে এখানে আসি। পাকিংয়ে রেখে লোড-আনলোডের জন্য প্রতিবারে চাঁদা তাদের নির্ধারিত ১৫শ, ঢাকা মেট্রো-ট-২০-৭৪৪০ কন্টেইনার এর চালক কালাম জানান আমার খালি গাড়ী শুধু পাকিংয়ের জন্য ৬শ, আবার ঢাকা মেট্রো-ন-১৪-৭৬৪২ নম্বর তিন টনি পিকাপ এর চালক সোহেল বলেন, আমার গাড়ীতে প্রতিবার পাকিংয়ের জন্য ৩৫০ এবং ঢাকা মেট্রো-ন-১৭-৭৪১৪ দেড় টনি পিকাপের চালক নজরুল জানান-আমার এই ছোট গাড়িতে প্রতিবার পার্কিংয়ের জন্য নিয়মিত ২৫০ টাকা করে পিনচু হাজীর লোকেরা চাঁদা নেয়। এ চাঁদা না দিলে গাড়ী রাখতে দেয় না। এসব চাঁদা তোলার বৈধতা নিয়ে হাজী পিনচুর কাছে স্ব-শরীরে জানতে চাইলে তিনি প্রকাশ্যে বলেন-আমার চাঁদা তোলার বৈধ কোন কাগজপত্র নেই। তবে আমি যেটা করছি প্রশাসনের দশজনকেই নিয়েই করছি। তাদের দিতে-দিতে অবশেষে আমার প্রতিদিন ৫ হাজার ও থাকে না। আমার ঘাড়ে বদনামের ভাগটা অনেক বড়।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *