পেঁয়াজের দাম কমলেও স্বস্তি দিচ্ছে না সবজি

অর্থনীতি এইমাত্র জাতীয় জীবন-যাপন

নিজস্ব প্রতিবেদক : পেঁয়াজ রফতানিতে ভারত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার পর দেশের বাজারে পেঁয়াজের ঝাঁজ কমতে শুরু করেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারগুলোতে পেঁয়াজের দাম কেজিতে কমেছে ৫০ টাকা পর্যন্ত।


বিজ্ঞাপন

তবে পেঁয়াজের দাম কমলেও স্বস্তি দিচ্ছে না সবজি। শিম, টমেটো, গাজর, ফুলকপি, বাঁধাকপি, শালগমে বাজার ভরপুর থাকলেও বেশিরভাগ সবজির দাম বেশ চড়া। এমনকি সপ্তাহের ব্যবধানে নতুন করে দাম বাড়ারও ঘটনা ঘটেছে।

শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, রামপুরা, মালিবাগ হাজিপাড়া, খিলগাঁও অঞ্চলের বিভিন্ন বাজার ঘুরে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

গত বছরের শেষের দিকে ভারত রফতানি বন্ধ করায় পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যায়। রেকর্ড ২৫০ টাকায় পৌঁছে যায় পেঁয়াজের কেজি। তবে নতুন দেশি পেঁয়াজ বাজারে আসার পর দাম কিছুটা কমে। নতুন দেশি পেঁয়াজের কেজি ১০০ টাকা মধ্যে চলে আসে।

কিন্তু দুই সপ্তাহ আগে হঠাৎ করেই নতুন দেশি পেঁয়াজ ১৮০ টাকায় ওঠে যায়। গত সপ্তাহেও বাজার ভেদে নতুন দেশি পেঁয়াজ ১৪০-১৫০ টাকা কেজি বিক্রি হয়।

এ পরিস্থিতিতে ভারত থেকে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার খবর আসে। এতে দেশের বাজারেও কমতে শুরু করে পেঁয়াজের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ৫০ টাকা কমে ভালো মানের দেশি পেঁয়াজ খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা।

পেঁয়াজের দাম কমার বিষয়ে কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী নোয়াব আলী বলেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ আসা বন্ধ হওয়ায় দাম অস্বাভাবিক বাড়ে। এখন ভারত পেঁয়াজ দেয়ার কথা বলছে, এ কারণে দামও কমে গেছে। সামনে দাম আরও কমবে।

খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী জুয়েল বলেন, গত সপ্তাহে দুই বস্তা পেঁয়াজ কিনেছিলাম ১৩০ টাকা কেজি দরে। এখন সেই পেঁয়াজ ১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছি। কেজিতে ৩০ টাকা লোকসান। হঠাৎ করেই ভারত পেঁয়াজের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ায় এমন দাম কমেছে।

তবে ক্রেতারা বলছেন, বাজারে এখনো পেঁয়াজের দাম অনেক বেশি। রামপুরার বাসিন্দা মামুন বলেন, এখন দেশি পেঁয়াজের ভরা মৌসুম। এ সময় পেঁয়াজের কেজি ১০০ টাকা হওয়া কিছুতেই স্বাভাবিক না। পেঁয়াজের কেজি ৫০ টাকার নিচে থাকা উচিত।

এদিকে বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, গত সপ্তাহে ২০-৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া শসার দাম বেড়ে ৪০-৬০ টাকা হয়েছে। শসার মতো চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে বেশিরভাগ সবজি। আগের সপ্তাহে বাজার ও মানভেদে পেঁপের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০-৬০ টাকা। করলা ৫০-৭০, দেশি পাকা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৪০-৬০ টাকা কেজি দরে।

সপ্তাহের ব্যবধানে দাম অপরিবর্তিত রয়েছে শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, গাজরের। ভালো মানের শিমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা। ফুলকপি পিস বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩৫ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে বাঁধাকপি। গাজর বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা কেজি। মুলা পাওয়া যাচ্ছে ২০-২৫ টাকার মধ্যে।

নতুন গোল আলু ২৫-৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। শালগম বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকায়। বেগুন পাওয়া যাচ্ছে ৪০-৫০ টাকার মধ্যে।

হাজিপাড়া বৌ-বাজার থেকে বাজার করা রমিজা বেগম বলেন, শীতের সময় সবজির এতো দাম থাকে না। কিন্তু এবার বাজারে কোনো সবজির দামই কমতে চাচ্ছে না। গত বছর এমন সময় শিমের কেজি ১০-২০ টাকা ছিল। টমেটো ছিল ২০ টাকার মতো। কিন্তু এখন বেশিরভাগ সবজির কেজি ৫০ টাকার ওপরে। আমাদের মতো গরিব মানুষের পক্ষে এতো দাম দিয়ে তো বেশি সবজি কিনে খাওয়া সম্ভব নয়।

রামপুরা থেকে বাজার করা মনির হোসেন বলেন, শীতের সময় নানারকম সবজির সরবরাহ থাকে। এ কারণে দামও কম থাকে। ফলে শীতের সময় মানুষ সবজি খেয়ে তৃপ্তি পায়। তবে প্রতি বছরের চেয়ে দাম তুলনামূলক বেশি।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *