নারী কণ্ঠে ভয়াবহ প্রতারণা মেহেদির

অপরাধ আইন ও আদালত

নিজস্ব প্রতিবেদক : ২৭ বছরের যুবক মেহেদি হাসান। অবিকল নারী কণ্ঠে কথা বলার অদ্ভুত দক্ষতা রয়েছে তার। আর এটি কাজে লাগিয়ে ভয়াবহ প্রতারণার ফাঁদ পেতেছিলেন তিনি। আবার রাত গভীর হলে জ্বিনের বাদশা পরিচয়ে মানুষকে ফোন দিতেন গাইবান্ধার শাহাদাত। দু’জনই গ্রেফতার হয়েছে গোয়েন্দা পুলিশের হাতে। মাদকসেবনের টাকা জোগাড় করতেই তারা এ পথে নেমেছিলেন বলে জানায় পুলিশ।
সরকারি বেসরকারি কর্মকর্তা কিংবা তাদের ব্যক্তিগত সহকারীর কাছে ফোন করেন কোনো এক রহস্যময় নারী। নিজেকে পরিচয় দেন ভাবি বলে। কথার যাদুতে সম্মোহিত করে ধার চান টাকা। অনেকেই দেন, আবার কেউ, কেউবা হন সাবধানী।
গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, দিন কয়েক আগে পুলিশের একটি কাজের দরপত্র আহ্বান করে বিজ্ঞপ্তি ছাপা হয় পত্রিকায়। সেখানে ছিল এক কর্মকর্তার ল্যান্ডফোন নম্বর। সেই নম্বরে ফোন দিলে ধরেন ওই কর্মকর্তার সহকারী। ওপাশ থেকে এক নারী কণ্ঠ নিজেকে ওই পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দেন। সন্দেহ হয় সহকারীর, শুরু হয় তদন্ত।
নারী কণ্ঠী মেহেদী জানান, শুরুতে নারীকণ্ঠে বন্ধুবান্ধবকে ফোন দিয়ে মোবাইল রিচার্জে টাকা নিতেন। ধীরে ধীরে শুরু করেন বড় মাপের প্রতারণা।
মেহেদী বলেন, আমি নিজে ইয়াবায় আশক্ত। ফ্লেক্সিলোডের টাকায় আমার হচ্ছিল না। তাই বাড়তি টাকার জন্য এটা শুরু করি।
গ্রেফতারের খবর শুনে গোয়েন্দা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন বেশকজন ভুক্তভোগী।
তারা বলেন, আমাকে ফোন দিয়ে প্রিন্সিপাল স্যারের স্ত্রী পরিচয় দিয়ে ১০ হাজার টাকা ধার চান। বলেন বিকেলে দিয়ে দেবে। তখন আমি পাঁচ হাজার টাকা দেই।
এছাড়া গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থেকে গ্রেফতার হয়েছেন শাহাদাত নামে আরেক যুবক। রাত গভীর হলে জ্বিনের বাদশা পরিচয়ে প্রতারণা করতেন তিনি।
পুলিশ বলছে, অভিযুক্ত ব্যক্তি হতে পারেন একজন নারী এমন ধারণা নিয়েই অভিযানে নামেন তারা। পরে একটি ফোন কলের সূত্রে নিশ্চিত হন, আসলে কোনো নারী নয়, অপরাধী এক যুবক। ইয়াবা সেবনের টাকা জোগাড় করতেই মেহেদি এ অভিনব প্রতারণার কাজে নেমেছিল বলে দাবি পুলিশের।
গোয়েন্দা ও অপরাধ তথ্য বিভাগের উপ কমিশনার মশিউর রহমান বলেন, যেহেতু ম্যাডাম পরিচয়ে ফোন দেয় অনেকে ম্যাডামের মাধ্যমে স্যারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াতে টাকা দিয়ে থাকতো।
মেহেদি কিংবা শাহাদাতের মতো প্রতারকদের ব্যাপারে সচেতন থাকতে সবার প্রতি অনুরোধ পুলিশ কর্মকর্তাদের।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *