ভেজাল-নিম্নমানের ওষুধ বাজারজাতের অভিযোগ

অপরাধ অর্থনীতি এইমাত্র জাতীয় সারাদেশ স্বাস্থ্য

জেনেসিস-ইউনিটি ফার্মাসিউটিক্যালস

আজকের দেশ রিপোর্ট : রাজধানীর জুরাইনের জেনেসিস ফার্মাসিউটিক্যালস (আয়ু) এবং খুলনার ইউনিটি ফার্মাসিউটিক্যালস (ইউনানী) এর বিরুদ্ধে অবৈধ, ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ সমগ্রীর উৎপাদন ও বাজারজাতের অভিযোগ উঠেছে। কোম্পানী দু’টির বর্তমান মালিক তাসলিমা বেগম ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ওষুধ নিয়ন্ত্রন অধ্যাদেশকে বৃদ্ধাঙুলি প্রদর্শন পূর্বক অবৈধ, ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ উৎপাদন ও বাজারজাত অব্যাহত রেখেছে। এই অভিযোগ ওষুধ ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত একাধিক সূত্রের। অভিযোগ মতে জেনেসিস ফার্মাসিউটিক্যালস (আয়ু) এবং ইউনিটি ফার্মাসিউটিক্যালস (ইউনানী) নামক এই দু’টি কোম্পানীর পূর্বের মালিক শহীদুল ইসলাম কচির মৃত্যুর পর তার স্ত্রী তসলিমা বেগম কোম্পানী দু’টির মালিক বনে গিয়ে-ই শুরু করে বেপরোয়া অবৈধ, ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ প্রস্তুত ও বাজারজাতের রমরমা ব্যানিজ্য। জুরাইনের জেনেসিস ফার্মাসিউটিক্যালস (আয়ু) যে সকল ওষুধ উৎপাদন করে এর মধ্যে বলারিষ্ট ও জিও-ভিট নামে ৪৫০ মিলি. সিরাপে একই ডিএআর নং-(আয়ু-১২৮-এ-০১০) ব্যবহার করছে। আবার ভিগো-১০ও দশমুলারিষ্ট নামে একই ডিএআর নং-(আয়ু-১২৮-এ-০৩২) ব্যবহার করে দুই নামে ওষুধ উৎপাদন ও বাজারজাত করছে। ওষুধের বাজারে খবর নিয়ে জানা যায় ভারজিটন (ভীমরস) নামে পুষ্টি বর্ধক, বল বর্ধক ও রুচি বর্ধক- ৪৫০ মিলি. সিরাপে ফাঙ্গাস জন্মানো অবস্থায় ক্ষতিকর এই ফাঙ্গাসযুক্ত ভারজিটন সিরাপ বাজারজাত করা হচ্ছে, যা সম্পূর্ন বে-আইনি। আমলকি প্লাস রসায়ন নামে যে সিরাপ বাজার জাত করা হচ্ছে তার ডিএআর নং-অস্পষ্ট। জি-জামীনি (জামীনি অর্ক) নামে রুচিকারক ও হজমিকারক সিরাপ বাজারজাত করছে তা মিডফোর্র্ডের পাইকারী ওষুধ এর দোকানে ৩৫০ টাকার এই সিরাপ মাত্র ৩৫-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বলারিষ্ট, জিও-ভিট, দশমুলারিষ্ট, আমলকি প্লাস রসায়ন, ভিগো-১০, জি-যামীনি, ও ভারজিটন নাম সিরাপে কি আছে? ওষুধ না ক্যেমিকেল। এই প্রশ্নের উত্তর খুজতে মিডফোর্ড এর পাইকারী বাজারে গিয়ে দেখা যায় এই সব ভিটামিন ওষুধ মাত্র ৩৫-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রসঙ্গ পূর্বক উল্লেখিত যে, জি-যমানী সিরপের মূল্য ৩৫০ টাকা মুদ্রিত রয়েছে। এই ভাবে ভারজিটনের মূল্য ৩৬০ টাকা, জি-ভিট ৪০০ টাকা, ভিগো-১০ এর মূল্য ১৮০ টাকা, অমলকি প্লাস রসায়ন এর মূল্য ৩৫০ টাকা, দশমুলারিষ্ট এর মূল্য ২৫০ টাকা, এবং বলারিষ্ট এর মূল্য ১৫০ টাকা মুদ্রিত আছে। বলারিষ্ট সিরাপে মানুষ এর ছবি এবং দশমুলারিষ্ট সিরাপে ফ্যামেলি ছবি ব্যবহার করা হয়েছে, যা ওষুধ নিয়ন্ত্রন অধ্যাদেশ পরিপন্থী। আবার ভিগো-১০ ও দশমুলারিষ্ট সিরাপে একই ডিএআর নং-(আয়ু-১২৮-এ-০৩২) ব্যবহার করছে এবং বলারিষ্ট ও জি-ভিট সিরাপের লেভেল কাটুনে একই ডিএআর নং-(আয়ু-১২৮-এ-০১০) ব্যবহার করাটা সম্পূর্ণ বে-আইনি। এখানে প্রশ্ন উঠে যে, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরে সংশ্লিষ্ট এলাকার ওষুধ তত্ত্বাবধায়ক কি এই সব অনিয়মের বিষয়ে কিছুই জানেন না? নাকি তিনি এইসব অনিয়মের বিষয়ে অবগত হওয়া সত্ত্বেও তিনি দেখেও না দেখার ভান করছেন। ইউনিটি ফার্মাসিউটিক্যালস (ইউনানী) নামে খুলনাতে তাসলিমা বেগম এর আরো একটি ইউনানী ওষুধ কোম্পানী রয়েছে। উক্ত কোম্পানীর ব্যানারে ও বিভিন্ন প্রকার ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ উৎপাদন ও বাজরজাত করছেন। এর মধ্যে ইউলিকা নামক সিরাপের লেভেল কার্টুনে ফ্যামেলি ছবি ব্যবহার করেছেন, যার ডিএআর নং-ইউ-২৭-এ-০০১, ব্যাচ নং-০০৫ মূল্য ১৮০ টাকা। এছাড়া মুমসিক নামে যৌন উত্তেজক ক্যাপসুল এর প্যাকেটে ঘোড়ার ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। উক্ত ক্যাপসুল এর ডিএআর নং-ইউ-২৭-এ-২৪। অথচ ওষুধ নিয়ন্ত্রন অধ্যাদেশ অনুসারে ওষুধের লেভেল কার্টুন বা প্যাকেটের গায়ে মানুষ বা কোন জীব-জন্তুর ছবি ব্যবহার করা সম্পূর্ন নিষিদ্ধ। এই সব অনিয়মের বিষয়ে উলেখিত কোম্পানীর দুইটির মালিক তাসলিমা বেগম এর বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি জানান ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. সালা উদ্দিন এবং জুরাইন এলাকার দায়িত্বরত ওষুধ তত্ত্বাবধায়ক সহ ও খুলনার সহকারী পরিচালক ও এই সব বিষয়ে অবগত আছেন। এই বিষয়ে ওষুধ প্রসাশন অধিদপ্তরের উল্লেখিত কর্মকর্তাদের বক্তব্য জানতে তাদের মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে মোবাইল রিসিভ না করায় তাদের বক্তব্য দেয় সম্ভব হয়নি।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *