হামলার শিকার সাংবাদিক

অপরাধ আইন ও আদালত সারাদেশ

নিজস্ব প্রতিনিধি: মুন্সীগঞ্জে জমি দখলের বিরোধে সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম ওরফে চপল ও তার ভাই শিমুল আহত হয়েছে। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জেলার রামকৃষ্ণদি বাজারের মোড়ে এই হামলার ঘটনা ঘটে। সাংবাদিকদের জমির উপর ক্লাব বানিয়ে জবর দখল করে। এতে সাইফুল এর বাবা বাধা দেয়। এতে ক্ষীপ্ত হয়ে তাদের উপর হামলা চালানো হয়। এর আগে গত ২০১২ সাল থেকে একাধিকবার সাইফুলের পরিবারের উপর হামলা চালানো হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েও কোন প্রকার সহযোগিতা পাননি তারা। ভুক্তভোগি সাইফুল জানায়, গত ৪ মার্চ দুপুরে হঠাৎ স্থানীয় মহসিন খানের নেতৃত্বে আমজাদ হোসেন, স¤্রাট খানসহ ২৫-৩০ জনের একটি দল তাদের জায়গায় খুঁটি গাড়তে থাকলে বাধা দেওয়া হয়। এসময় তারা চলে যায়। পরে সন্ধ্যায় দলবল নিয়ে ক্লাবের টাঙানো বঙ্গবন্ধুর ছবি নামিয়ে পা দিয়ে ভাঙ্গতে থাকে। আমি তখন মোবাইল দিয়ে ছবি তুলতে গেলে তারা আমাকে ও ভাইকে মারধর করে। এতে আমরা আহত হই। পরে সিরাজদিখান থানার পুলিশ আসলে আমাদের উপর উল্টো অভিযোগ দেয়। বিষয়টি সিরাজদিখান থানা পুলিশ তদন্ত করছেন। আমার বাবা বিষয়টি নিয়ে সাক্ষাতে ওসির সঙ্গে কথা বলেছেন।
সূত্রে জানা যায় কয়রাখোলা মৌজার আর এস ৭২ নং খতিয়ানের আর এস ১০ নং দাগে মুজিবর এর মালিকানাধীন ১৭.৫০ শতাংশ ভূমির মধ্যে ৩০ ফুট দৈঘ্য ও ১৫ ফুট প্রস্থ ভূমি সামসুদ্দিন গংরা ৫ ফেব্রুয়ারী ২০১২-তে অতর্কিত দখল করে পাকা ঘর নির্মাণ শুরু করে। এ ঘটনায় মুজিবরের পরিবারের লোকজন বাঁধা দিলে তারা বিভিন্নভাবে প্রাণনাশের হুমকী ধামকী দিয়ে পিছু হাটে। মুজিবর বাদী হয়ে মুন্সিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এর আদালতে ফৌজদারী কার্যবিধি’র ১৪৫ ধারায় মামলা করেন। ওই মামলা নং- ১৪৭ পি/ ১২। ৭ ফেব্রুয়ারী ১২ তে মামলাটি নথীভুক্ত হয়। এ মামলায় আসামীরা হলেন, একই গ্রামের সামসুদ্দিন সহ ৯জন। অন্যদের মধ্যে মৃত তোফাজ্জল খানের ছেলে মহসিন, ওরফে মন্টু, মহিউদ্দিনের ছেলে আরিফুর রহমান মিন্টু, রেজ্জাক খানের ছেলে শামিম, বজলুর ছেলে আজিজ, হারুন অর রশিদ এর ছেলে রতন, মৃত ছাদেকের ছেলে শাহ্ আলী, মৃত রববান খানের ছেলে জাহাঙ্গীর, মজনু ভূইয়ার ছেলে মিজানুর। এ মামলায় ২ অক্টোবর ২০১২, বিজ্ঞ আদালত বাদী- বিবাদীর বৈধ মালিকার কাগজপত্র ও যুক্তি তর্ক গভীরভাবে পর্যালোচনা করে ওই জায়গায় বিবাদীদের অনুপ্রবেশ নিষেধাজ্ঞা জারি করেন এবং স্থায়ী নিস্পত্তির জন্য সরকারী কানুনগো ও সার্ভেয়ার দ্বারা উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, সিরাজদিখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, মিয়ার হোঃ উচ্চ বিঃ প্রধান লুতুব্দী ইউনিয়নের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের উপস্থিতিতে সীমানা নির্ধারণের জন্য সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে আদেশ দেন। কিন্তু অদ্যবদি পর্যন্ত এ আদেশ কার্যকর হয়নি। এরপর থেকে ওই বিবাদীরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। ২২ আগষ্ট ২০১৯, তারা পুনরায় বলপূর্বক অবৈধ অনুপ্রবেশ করে দলবদ্ধ হয়ে একই জায়গায় ঘর নির্মাণ শুরু করে। ওই সময় মুজিবর ও তার পরিবারের লোকেরা বাধা দিলে দখলদাররা তাদের উপর চড়াও হয়ে বেপরোয়াভাবে মারধর দিয়ে মুজিবরের ছেলে সাইফুল ইসলাম চপল সহ অন্যান্যদের গুরুতর জখম করে। এ ঘটনার পর মুজিবর মামলা দিতে থানায় গেলে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামলা না নিয়ে আদালতে যেতে পরামর্শ দেন। মুজিবর মুন্সিগঞ্জের একই আদালতে ফোঃ কাঃ বিঃ ১৪৫ ধারায় একটি পিটিশন মামলা করেন। মামলা নং- ৮০/২০১৯ এ মামলায় আদালত পিবিআই এর প্রতিবেদন মূল্যায়ন করে বিবাদীদের উপর ওই জায়গায় অনুপ্রবেশ পুনরায় নিষেধাজ্ঞা দিয়ে মুজিবরের পক্ষে আদেশ দিলেও তারা তা মানছে না। বিবাদীরা বারবার আদালতে এসব ঘটনা থেকে বিরত থাকার মূচলেখা দিয়ে ও তা রক্ষা করছেনা। ওই জায়গাটি অবৈধ দখলে নেয়ার অপচেষ্টা করছে। বাদী বারবার থানায় গিয়ে ও কোন সহযোগিতা পাচ্ছে না।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *