হকারদের খবর কেউ রাখে না

এইমাত্র জাতীয় জীবন-যাপন

নিজস্ব প্রতিবেদক : পত্রিকা ও পত্রিকার খবরের গুরুত্ব থাকলেও নাগরিকদের হাতে হাতে এসব পত্রিকা পৌঁছে দেওয়া হকারদের গুরুত্ব তেমন নেই। তাদের খোঁজ কেউ রাখে না। এই খেদ খোদ হকারদের। করোনাভাইরাস প্রার্দুভাবে কার্যত অচল ঢাকা। কমে গেছে পত্রিকার বিকিকিনিও। এই বাস্তবতায় দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে তাদের। আয় কমে এসেছে প্রায় আশিভাগ। দুশ্চিন্তায় কপালে ভাজ পড়েছে তাদের।
প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে ওঠার আগে দুয়ারে আসে খবরের কাগজ। ধল প্রহরে শান্তির ঘুম বিসর্জন দিয়ে একটি সাইকেলে চেপে বাড়ি বাড়ি খবর কাগজ পৌঁছে দেন হকাররা। লোকে তাদের চেনে পেপারওয়ালা বলে। সম্প্রতি করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) প্রভাব পড়েছে এসব হকারদের ওপর। পত্রিকা বিক্রি প্রায় বন্ধের পথে।
পত্রিকার হকারদের এমন করুণ পরিস্থিতির কথা জানালেন আব্দুল মজিদ। তিনি মোহাম্মদপুর-২ হকার পয়েন্ট থেকে ওই এলাকার দুটি সড়কের বাড়িতে বাড়িতে পত্রিকা বিতরণ করেন। তিনি জানান, প্রতিদিন তিনশ ত্রিশ কপি পত্রিকা বিক্রি হতো তার। বর্তমানে সে সংখ্যা পঞ্চাশে নেমে এসেছে। বিক্রি কমে গেছে প্রায় আশি শতাংশের বেশি। মজিদের মতো অন্যদের অবস্থাও একই।
মজিদ বলেন, আমার লাইনে মাসে তিনশো ত্রিশটার বেশি পত্রিকা বিক্রি হইতো। মাসে ২৫ থেকে ২৬ হাজার টাকার মতো ইনকাম থাকত। কিন্তু এই মাসে ১৭ হাজার টাকাই নাই। বাকিদেরও একই অবস্থা।
বড় এই আর্থিক ক্ষতিতে আগামী মাসের বাসা-ভাড়া, খাওয়া-দাওয়াসহ জীবনযাপনের ব্যয়ের বাকি সব কিছু অনিশ্চয়তা ডুবে আছে বলে জানান আব্দুল মজিদ। বলেন, আগামী মাস চলমু কেমনে আল্লাহ জানে! পত্রিকার হকারদের খবর কেউ রাখে না বলেও আক্ষেপ প্রকাশ করেন তিনি।
আইয়ুব আলী নামে বাড্ডা এলাকার একজন হকার বলেন, মানুষ পত্রিকায় খবর দেখে। সবার কাছে পত্রিকা, খবরের গুরুত্ব আছে। কিন্তু আমরা পেপারওয়ালা তো, আমাদের কোনো গুরুত্ব নাই। করোনাভাইরাস আসার পর থেকে কেউ বাসায় ঢুকতে দেয় না। আমরাও পত্রিকা দিতে পারি না।
পত্রিকার মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়ায় না, বিষয়টি আরো আগেভাগে গণমাধ্যমে প্রচার করা দরকার ছিল বলে মনে করেন তিনি। বলেন, পত্রিকায় লেখা হয়েছে, পত্রিকার মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়ায় না। কিন্তু তাও অনেকের মধ্যে সন্দেহ আছে। ভয় আছে। এই লেখাটা আরও আগে লেখা উচিত ছিল। তাইলে আমাদের এতো ক্ষতি হইতো না।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *