কৃষকের জন্য ৫০০০ কোটি টাকার তহবিল

এইমাত্র জাতীয় জীবন-যাপন রাজধানী রাজনীতি সারাদেশ স্বাস্থ্য

সর্বোচ্চ সুদের হার ৫ শতাংশ

 

বিশেষ প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোভিট-১৯ এর সম্ভাব্য ক্ষতিকর প্রভাব কাটিয়ে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধিতে আগামী বাজেটে সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকির ঘোষণার পাশাপাশি কৃষিখাতের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার প্রনোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ক্ষুদ্র ও মাঝরি কৃষকদের খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে সহায়তার জন্য সর্বাধিক ৫ শতাংশ হার সুদে ৫ হাজার কোটি টাকার একটি নতুন প্রকল্প গ্রহণ করতে যাচ্ছি।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বরিশাল এবং খুলনা বিভাগের ১৬টি জেলার স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, সশ¯্র বাহিনীর সদস্য, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর সদস্য, সিভিল সার্জন এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে সর্বশেষ করেনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময়কালে একথা বলেন।
কৃষকদের বিশেষ প্রণোদনা দেয়া হবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কৃষিখাতে চলতি মূলধন সরবরাহে বাংলাদেশ ব্যাংক ৫ হাজার কোটি টাকার নতুন একটি পুনঃঅর্থায়ন স্কিম গঠন করবে। এখান থেকে শুধু কৃষিখাতে গ্রাহক পর্যায়ে ঋণ দেয়া হবে। যার সর্বোচ্চ সুদহার হবে ৫ শতাংশ।’
তিনি বলেন, ‘এই তহবিল থেকে গ্রাম অঞ্চলে যারা ক্ষুদ্র ও মাঝারি চাষী তাদের জন্য ঋণ দেওয়া হবে। কৃষি, ফুল, ফল, মৎস্য, পোল্ট্রি, ডেইরি ফার্ম ইত্যাদি সকল কর্মকা-ে এখান থেকে সহায়তা পাবেন।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘কোনো মানুষ যেন কষ্ট না পায় সেদিকে লক্ষ্য রেখেই ৫ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা ঘোষণা করছি। কৃষি মানে গ্রাম অঞ্চলের ক্ষুদ্র ও মাঝারি চাষী। কারণ, আমাদের দেশের কৃষক শ্রমিক দিনমজুর থেকে শুরু করে কামার-কুমার তাঁতি জেলে সবার জন্য সাহায্য করতে আমরা প্রস্তুত।’
‘পাশাপাশি সারের ভর্তুকি হিসেবে আগামী অর্থবছরের বাজেটে ৯ হাজার কোটি টাকার বরাদ্দ দেওয়া হবে। যাতে কৃষকের উৎপাদন ব্যাহত না হয়,’ যোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে শিল্প খাতের জন্য ৭২ হাজার কোটি টাকার বেশি কয়েকটা প্রণোদনা ঘোষণা করা হয়েছে। কৃষিক্ষেত্রে বিশেষ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে বোরো ফসল উঠবে। কৃষক যেন সঠিক মূল্য পায় বিষয়টি লক্ষ্য রেখে খাদ্য মন্ত্রণালয় গত বছরের তুলনায় এবছর বেশি ধান চাল ক্রয় করবে। অর্থাৎ দুই লাখ মেট্রিক টন চাল বেশি ক্রয় করবে, সেই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ধান কাটা ও মাড়াই যান্ত্রিকীকরণের জন্য ইতোমধ্যে কৃষি মন্ত্রণালয়কে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আরও ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হবে। এছাড়া বীজ, চারা রোপণের জন্য আরো ‘দেড়শ’ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হবে।’
তিনি বলেন, কেউ পেঁয়াজ, রসুন, আদাসহ মসলা জাতীয় কিছু উৎপাদন করলে মাত্র ৪ শতাংশ সুদে ঋণ দেওয়ার আরেকটি উদ্যোগ বর্তমানে চলমান রয়েছে। আগেই চালু এই উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে।
শেখ হাসিনা বলেন, করোনাভাইরাসের ক্ষতি মোকাবিলায় বেশ কিছু প্রণোদনা দিয়েছি। শিল্প-কৃষি সব ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে প্রণোদনা দেওয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
করোনার কারণে অনেক উন্নয়ন কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিন্তু এখন সবচেয়ে বড় কথা মানুষ বাঁচানো। মানুষের জীবনযাত্রা যেন অব্যাহত থাকে সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দেওয়া।
করোনাভাইরাসের প্রকোপে বিশ্বব্যাপী মারাত্মক খাদ্য সংকট দেখা দেওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যদি নিজেরা উৎপাদন ঠিক রাখি তাহলে এই সঙ্কট মোকাবিলা করতে পারব। এজন্য আমাদের উৎপাদন বাড়াতে হবে, যাতে আমার দেশের মানুষ কষ্ট না পায়। পাশাপাশি আমরা অনেক দেশকে সহযোগিতা করতে পারি, রফতানি করতে পারি সেই বিষয়টা মাথায় রেখেই আপনারা উৎপাদন বাড়াবেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কারও এতোটুকু জমিও যেন অনাবাদি না থাকে। আপনারা বাড়ির পাশে এবং ছাদে টবের মধ্যেও গাছ লাগান। যেটাই উৎপাদন করবেন সেটাই কাজে লাগবে।’
প্রধানমন্ত্রী এদিন পুণরায় এবারের নববর্ষ ঘরে অবস্থান করে এবং বাইরে কোন জনসমাগম না করে পালনের আহ্বান জানান এবং নববর্ষের সকল সরকারি অনুষ্ঠান বাতিল করার কথা পুণরোল্লেখ করে সকলকে ঘরে থাকার আহ্বান পুণর্ব্যক্ত করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুর্যোগ আসে, সেই দুর্যোগ সাহসের সঙ্গে মোকাবেলা করতে হয়। যারা মৃত্যুবরণ করছেন তাঁদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে এবং শোক সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে তিনি বলেন,‘আপনারা সবাই নিজেরা সুরক্ষিত থাকেন, ভাল থাকেন, সুস্থ থাকেন সেভাবেই নিজেদেরকে নিজেরা সুরক্ষিত করেন।
তিনি বলেন, ‘যে নির্দেশগুলো আমরা দিয়েছি বা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে দেওয়া হচ্ছে বা প্রতিনিয়ত রেডিও, টিভি,গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে দয়া করে সেগুলো একটু মেনে চলুন। এটা মেনে চললে নিজে যেমন ভাল থাকবেন তেমনি অন্যকেও আপনি সুরক্ষিত করবেন।’
‘নিজের জন্য নিজের ওপরে যেমন আপনার দায়িত্ব আছে তেমনি অন্যের ওপরেও রয়েছে। সেকথাটা সবাইকে মনে রাখতে হবে,’ বলেন তিনি।
আর যারা হাত পাততে পারে না তাঁদের সকলের ঘরে খাদ্য পৌঁছে দেওয়ার আহ্বানও পুণর্ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘কাজ না থাকায় অনেকে কাজ করতে পারছেন না আবার রিলিফও চাইতে পারছেন না, এরকম বহু পরিবার রয়েছে। তাঁদেরকে ঘরে বাইরে বাইরে খাবার পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা আমরা ইতোমধ্যে নিয়েছি। সেটা সংশ্লিষ্টদের নিশ্চিত করতে হবে।’
তাছাড়া, ১০ টাকা কিলোয় চাল বিক্রী, ওএমএস-এর চালেরও দাম কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। কাজেই, আমাদের খাদ্যের কোন অভাব নেই বরং যথেষ্ট খাদ্য সামগ্রী রয়ে গেছে সেটা আমরা প্রয়োজনে দিতে পারবো, বলেন তিনি।
তিনি ত্রাণ সরবরাহে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর হুশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেন, ‘প্রয়োজনে মোবাইল কোর্ট বসিয়ে এ ধরনের ঘটনার তাৎক্ষণিক শাস্তি বিধান করা হবে। কারণ, এই ধরণের দুর্নীতি আমরা কখনোই বরদাশত করবো না।’ মুখ্য সচিব ড.আহমদ কায়কাউস ভিডিও কনফারেন্সটি সঞ্চালনা করেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া, প্রেস সচিব ইহসানুল করিম এবং প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ ভিডিও কনফারেন্সে উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক যত কমানো যায়, সেটিই ভাল। ফসল তরি-তরিকারি, ফলমূল আর নষ্ট হওয়ার কোন আশংকা নেই। কারণ, এগুলো বিক্রয় কেন্দ্রে পাঠানোর জন্য তাঁর সরকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বাজারজাত করার সময়ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ওপর গুরুত্বরোপ করে প্রধানমন্ত্রী পরামর্শ দেন যে, হাট-বাজার একেবারে বন্ধ না রেখে বড় একটি মাঠে সামাজিক দূরিত্ব বজায় রেখে সপ্তাহে একদিন হলেও এগুলো বিক্রীর উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। তিনি বলেন, সেখান থেকে মানুষ পণ্য কিনে নেবে, কিন্তু অনেক মানুষের ভীড় যেন না হয় সেদিকে সকলে লক্ষ্য রাখবেন।
তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনী, স্থানীয় প্রশাসন এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা মিলিতভাবে এবং পরিকল্পনা করে যদি এ ধরনের উদ্যোগ নেন তাহলে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যহত হবে না।
তিনি এ সময় সাতক্ষীরার সঙ্গে মতবিনিময়কালে দুধের মুল্য নিশ্চিত করতে এটি রিলিফে দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণে এবং দুগ্ধজাত সামগ্রী প্রস্তুত করে এই দুধকে কাজে লাগানোর উদ্যোগ গ্রহণেও আহ্বান জানান।
ধানকাটার মওসুম শুরু হয়ে যাওয়ায় এবং অনেকেরই হাতে কাজ না থাকায় দিনমজুর শ্রেনীর লোকজন ধানকাটায় সম্পৃক্ত হতে পারেন এবং সেই সুযোগ তাঁর সরকার করে দেবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন তিনি।
ভিডিও কনফারেন্সে ঝালকাঠি জেলা প্রশাসকের কার্যালযে উপস্থিত একজন ইমাম জানান, তাঁরা নির্দেশনা অনুযায়ী জুমার নামাজ দশজনে পড়েছেন এবং ওয়াক্তর নামাজে পাঁচজনের বেশি উপস্থিতি রাখছেন না।
এ বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আসলে সবাইকে দোয়া করতে হবে। যেন এ করোনাভাইরাস থেকে আমরা রক্ষা পাই। আপনারা জানেন, সৌদি আরবে মক্কা এবং মদিনাতেও কারফিউ দিয়ে দেয়া হয়েছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘ঘরে বসে দোয়া করলে আল্লাহ সে দোয়া কবুল করবেন। কাজেই, ঘরে বসে যত বেশি দোয়া পড়া যায়। আর এখনতো কাজ নেই বেশি। কাজেই, বেশি বেশি করে দোয়া করতে হবে। যাতে আল্লাহ আমাদের এ বিপদ থেকে রক্ষা করেন।’
শেখ হাসিনা বলেন, করোনা ভাইরাস সম্পর্কে দেশবাসীকে অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে। কারণ, এটি সংক্রামক। কখন সংক্রামিত হবে তা বোঝা খুব কষ্টকর। এটাই হচ্ছে এ ভাইরাস নিয়ে সবচেয়ে বড় চিন্তার বিষয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অদৃশ্য শক্তির মত করোনা ভাইরাস আমাদের ভেতরে হানা দিয়েছে। এ ভাইরাসে শুধু একটি দেশ নয়, পৃথিবীর প্রতিটি দেশের মানুষই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, আক্রান্ত হচ্ছে।
তিনি বলেন, ১ লাখ ৩ হাজারের মতো মানুষ ইতিমধ্যে মারা গেছেন এবং লাখ লাখ মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। বিভিন্ন উন্নত দেশ এটা মোকাবিলা করতে হিমশিম খাচ্ছে। সেসব দেশে হাজার হাজার লোক মারা যাচ্ছে। করোনাভাইরাসের কারণে যারা মারা গেছেন তাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী সমবেদনা জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা সারাদেশে এ ভাইরাস মোকাবিলায় বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়েছি। এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু খুব কম থাকলেও এটা মানুষকে ভোগায় বেশি। তিনি বলেন, এ ভাইরাস থেকে বাঁচার জন্য সব কর্মসূচি বন্ধ করে দিয়েছি। সবাই ঘরে থাকুন। বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। জানি, মানুষের কষ্ট হবে কিন্তু আমরা করণীয় করে যাচ্ছি। এজন্য আমরা ২৩টি নির্দেশনা তৈরি করেছি। তিনি এ সময় সর্দি-কাশি হলে সকলকে প্রচুর গরম পানি খাওয়ার এবং ঘরে থাকারও পরামর্শ দেন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘হাসপাতালগুলোতে আইসোলেশন খোলা হয়েছে। করোনা রোগীর জন্য হাসপাতালে আলাদা ওয়ার্ড করে দিয়েছি। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছি।
তার সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সংবাদমাধ্যম অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে সচেতনতামূলক জিনিস প্রচার করছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আগামী ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর দিবস, সবসময় আমরা এটি উদযাপন করি। এবার তো আমরা সেভাবে জনসমাগম করতে পারব না। যেটুকু সীমিত আকারে ঘরে বসে করা যায়, সেটুকু করবেন, জনসমাগম যেন না হয়। তিনি বলেন, ইনশাল্লাহ, এ অবস্থা চলে গেলে আমরা ভালোভাবে করতে পারব। কারণ, স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার প্রথম শপথ নিয়েছিল এই মেহেরপুরে-এ কথা আমাদের সবসময় স্মরণ রাখতে হবে।’
তিনি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকে এ সময় সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপের এবং বাংলাদেশে যেন কেউ ঢুকতে না পারে তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন এবং কেউ ঢুকে পড়লে তাকে সেখানেই কোয়ারেন্টিনে রাখার ব্যবস্থা গ্রহণেও নির্দেশ প্রদান করেন।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *