অসময়ে সাংবাদিকদের দেখার কেউ নেই

জাতীয় সারাদেশ

মো: রফিকুল ইসলাম, নড়াইল: সাংবাদিকের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে কিন্তু এ অসময়ে সাংবাদিকদোর দেখার কেউ নেই। দেশের এই অসময়ে দূর্ণীতিবাজ, ঘুষখোর, টেন্ডারবাজ, ত্রাণচোর ও রাজনৈতিক সন্ত্রাসিরা সাংবাদিকদের প্রতিপক্ষ মনে করে একেরপর এক হামলা-মামলায় সাংবাদিকরা আজ চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্থ।
সারাদেশে অব্যাহত নির্যাতন, মামলা-হামলা, লাঞ্ছিতের ঘটনা ঘটেই চলছে কিন্তু দেখের কেউ নেই।
পুলিশি জুলুম হয়রাণীতে সাংবাদিকের প্রাণ ওষ্ঠাগত। পুলিশও সাংবাদিকদের প্রতিপক্ষ ভাবছে।
এ অবস্থা চলতে থাকলে জাতির জনকের সোনার বাংলা স্বপ্নই রয়ে যাবে।
রাষ্ট্রের চারটি স্তম্ভের একটি গণমাধ্যম আজ মামলা-হামলায় পঙ্গুত্ববরণ করতে চলছে।
বাকি তিনটি যতই শক্তিশালী হোকনা কেন রাষ্ট্র কোন শক্তিতে মাথা উচুঁ করে দাঁড়াবে তা বোধগম্য নয়। করোনার মহামারী শেষ হলে বাংলাদেশকে ঘুরে দাঁড়াতে হবে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বাংলাদেশের সাংবাদিকরা বলতে চায়-আপনি বিশ্ববরেন্য মানবতাবাদী স্বীকৃত, আপনি বিশ্বে সাহসি প্রধানমন্ত্রী। আপনি করোনায় দেশের সকল পেশার মানুষের পাশে জানপ্রাণ দিয়ে দাঁড়িয়েছেন।
রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে সকল পেশাজীবীরা আপনার মাধ্যমে সুবিধা পেয়েছেন।
ঈদের আগে করোনায় ক্ষতিগ্রস্থ সকল পেশার মানুষ কমবেশি আর্থিক সুবিধা পেয়েছেন আপনার থেকে তথা সরকার থেকে।
যদি প্রশ্ন করা হয় আপনার কাছে, কোন পেশার মানুষ সরকারের আর্থিক সুবিধা পায়নি? নি:সন্দেহে উত্তরটা মিলবে সাংবাদিক।
দেশে সাংবাদিকরাই আজ সুষম সুবিধাবঞ্চিত, অবহেলিত ও নিরাপত্তাহীন।
যেমনটি নেই কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা,চলছে সাংবাদিক ছাটাই।
যেন কচু পাতার পানি আর সাংবাদিকের চাকরী একইহাল,প্রয়োজন একটি নীতিমালা।
দেশ গঠনের ৪৯টি বছরেও এটি সম্ভব হয়নি,আর কবেইবা হবে কেউ জানেনা।
সাংবাদিক নির্যাতনমুক্ত বাংলাদেশ গড়া সম্ভব হলেই কেবল জাতির জনকের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে।
সরকারের হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবেনা,এজন্য প্রয়োজন সরকারের সদিচ্ছা।
সাংবাদিকরা বেতন চায়না, তারা রাষ্ট্রের কাছে দায়বদ্ধ। তাইতো জীবন-সংসারের নিরাপত্তার কথা চিন্তা না করে, প্রতিদিন তারা অন্যায়-অনিয়ম ও দূর্ণীতিবাজদের বিরুদ্ধে কলম যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন।
সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে সাংবাদিক যখন হত্যা মামলার আসামি হয়, তখন আর সাংবাদিকের নিরাপত্তা কোথায়।
ঘটনাস্থল বাউফল,পুলিশি পিটুনিতে অটোচালকের মৃত্যু।
সংবাদ প্রকাশ করেন সাংবাদিকেরা, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ৩ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলার ঘটনাস্থল নরসিংদী।
করোনার মাঝেও বাস চলাচল করায় শ্রমিক নেতা বিচ্চুর বিরুদ্ধে ফেসবুকে ষ্ট্যাটাসে মামলা অত:পর কারাগার, ঘটনাস্থল গাইবান্ধার পলাশবাড়ী। সাংবাদিকের নিজস্ব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে করোনায় ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের স্বার্থে ওষুধের মূল্যহ্রাস ঘোষণায় আহসান হাবিব সোহাগকে জুতাপেটার হুমকি; ঘটনাস্থল ঝালকাঠির রাজাপুর।
সাংবাদিকের বিরুদ্ধে সাংবাদিকের মামলা: ঘটনাস্থল কক্সবাজার ও হবিগঞ্জ।
মাদকের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করায় মানবজমিন প্রতিনিধিসহ পরিবারের ৫জনের ওপর হামলা: ঘটনাস্থল সুনামগঞ্জের তাহিরপুর।
সাংবাদিকের ওপর হামলার স্বাক্ষ্য দেয়ায় জামালপুরের সাংবাদিক শেলু আকন্দ আজ পঙ্গু।
দেশে এরকম বহু শেলু আকন্দ আজ বিপর্যস্ত, পলাতক,কারাবন্দী।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী; আপনি দেশের সাংবাদিকের শেষ ভরসাস্থল বলে আমরা আপনাকেই বলছি…।
আপনার আশপাশে ঘুরঘুর করা কিছু বিশ্বাস ঘাতকের কথায় বিশ্বাস না করে সাধারণ নিরপেক্ষ সাংবাদিক ও সংগঠনসমুহের নেতৃবৃন্দের মনোকষ্টের কথা গুলো শুনুন।
ঢাকার বাইরের সাংবাদিকদের সুখদুঃখে যারা কাজ করে তারা আপনাকে কী বলতে চান,আপনি তাদের ডাকুন,কথা শুনুন।
মফস্বলের সাংবাদিকদের পিঠ আজ দেয়ালে ঠেকে গেছে।
তাই সময় এসেছে দেয়ালে পিঠ ঠেকানো সাংবাদিকদের ঘুরে দাঁড়ানোর।
বিএমএসএফ ঘোষিত ১৪ দফা দাবি বাস্তবায়ন আজ সময়ের দাবিতে পরিনত হয়েছে।
চাই অপ-সাংবাদিকতামুক্ত বাংলাদেশ। তাই প্রয়োজন সাংবাদিকদের তালিকা প্রণয়ন।
আসুন,আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে ওইসকল সাংবাদিক নির্যাতনকারী অন্যায়-অনিয়ম, জুলুমবাজ,দূর্ণীতিগ্রস্থ সন্ত্রাসি,হায়েনার বিরুদ্ধে শপথ গড়ে তুলি।
কোথাও কোন সাংবাদিকের বিপদে আমরা যে যার জায়গা থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ি,প্রতিবাদের ঝড় তুলি।
দাবি তুলি সাংবাদিক নির্যাতন বন্ধে যুগোপযোগী আইন প্রণয়নের।
সাংবাদিকদের রুটিরুজি, নিরাপত্তা, মর্যাদা রক্ষায় আপনিও সহযোগী হোন।
(প্রচারে বিএমএসএফ)


বিজ্ঞাপন