দাম কমতে পারে যেসব পণ্যের

অর্থনীতি

বিশেষ প্রতিবেদক : ‘অর্থনৈতিক উত্তরণ ও ভবিষ্যৎ পথপরিক্রমা’ শিরোনামে ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এটি ক্ষমতাসীন সরকারের চলতি মেয়াদের দ্বিতীয় এবং দেশের ৪৯তম বাজেট। অর্থমন্ত্রী হিসেবে দ্বিতীয়বারের মতো আ হ ম মুস্তফা কামালের উত্থাপিত এই বাজেটে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য চাল, আটা, আলু, পেঁয়াজ, রসুনের স্থানীয় পর্যায়ে সরবরাহের ক্ষেত্রে উৎসে আয়কর কমানো হয়েছে। পাশাপাশি আমদানি করা চিনি ও রসুনের অগ্রিম আয়কর কমানো হয়েছে। ফলে এসব নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমবে। প্রস্তাবিত বাজেট তুলে ধরতে গিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবসায়ীদের হাতে চলতি পুঁজির ঘাটতি লাঘবকল্পে এবং উৎসে করহার যৌক্তিকীকরণের লক্ষ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসহ কতিপয় পণ্যে আমি উৎসে আয়কর কর্তনের হার কমানোর প্রস্তাব করছি।’ ‘বর্তমানে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য যেমন-চাল, আটা, আলু, পেঁয়াজ, রসুন ইত্যাদি স্থানীয় পর্যায়ে সরবরাহের ক্ষেত্রে উৎসে আয়কর কর্তনের সর্বোচ্চ হার ৫ শতাংশ, যা ভিত্তিমূল্য নির্বিশেষে ২ শতাংশে নির্ধারণের প্রস্তাব করছি।’
‘বর্তমানে স্থানীয়ভাবে সংগৃহীত এম এস স্কাপ সরবরাহের ওপর উৎসে আয়কর কর্তনের সর্বোচ্চ হার ৫ শতাংশ। স্থানীয়ভাবে সংগৃহীত এম এস স্কাপ সরবরাহকারী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের আর্থিক সক্ষমতার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এবং লৌহ উৎপাদন শিল্পের বিকাশের লক্ষ্যে আমি স্থানীয়ভাবে সংগৃহীত এম এস স্কাপের সরবরাহের উপর উৎসে আয়কর কর্তনের হার ভিত্তিমূল্য নির্বিশেষে দশমিক ৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করছি।’
‘বর্তমানে রসুন ও চিনি আমদানি পর্যায়ে ৫ শতাংশ অগ্রিম আয়কর সংগ্রহ করা হয়। আমি এই হার ৫ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ২ শতাংশে নির্ধারণের প্রস্তাব করছি’, বলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। ‘এছাড়া বর্তমানে হাঁস-মুরগির খাদ্য উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত কাঁচামাল আমদানি পর্যায়ে ৫ শতাংশ অগ্রিম আয়কর আরোপ করা হয়। পোল্ট্রি শিল্পের বিকাশের লক্ষ্যে আমি এই অগ্রিম আয়কর আরোপ ৫ শতাংশের পরিবর্তে ২ শতাংশ প্রস্তাব করছি।’ ২০২০-২০২১ অর্থবছরের বাজেটে জনস্বার্থে কিংবা দেশীয় শিল্প সুরক্ষায় কিছু পণ্যে থাকবে শুল্ক ও ভ্যাট ছাড়ের প্রস্তাব। এর ফলে কিছু পণ্যের দাম কমতে পারে।
যেসব পণ্যের দাম কমার সম্ভাবনা রয়েছে সেসবের মধ্যে রয়েছে স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদিত কৃষি যন্ত্র ও যন্ত্রাংশ। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় মাস্ক, পিপিই, গ-াভস, গগলস, নানা ধরনের রাসায়নিক পণ্য ও চিকিৎসা সরঞ্জাম আমদানিতে সব ধরনের কর মওকুফ করা হয়েছে। ফলে এসব পণ্যের দাম কমতে পারে। করোনাভাইরাস শনাক্তে কিট উৎপাদনের কাঁচামাল, এ সংক্রান্ত কাজে গবেষণার জন্য ব্যবহৃত রাসায়নিক দ্রব্য ও যন্ত্রাংশের ওপর শুল্ক ও ভ্যাট প্রত্যাহার করা হতে পারে। ফলে এসবের দামও কমবে।
দাম কমতে পারে হাসপাতালের আইসিইউ, সিসিইউসহ জরুরি সেবায় ব্যবহৃত যন্ত্রাংশের। জরুরি অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসকে উৎসাহিত করতে এ সংক্রান্ত যাবতীয় যন্ত্রাংশের ওপর শুল্ক ও ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া হতে পারে। ভ্যান্টিলেটর উৎপাদনে দেশীয় কোম্পানিগুলোকে গবেষণা ও উৎপাদনে আরো আকৃষ্ট করতে এ সংক্রান্ত যন্ত্রাংশে বিশেষ শুল্ক ও ভ্যাট ছাড় থাকবে বাজেটে। তাই এসব পণ্েযর দাম কমবে।
স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদিত ক্ষুদ্র শিল্পের কাঁচামালে অগ্রিম কর কমতে পারে। ফলে ক্ষুদ্র শিল্পের পণ্যে দাম কমতে পারে। শুল্ক ছাড়ের ফলে কমতে পারে পোল্ট্রি, ডেইরি ও মৎস্য শিল্প এবং অগ্নিনির্বাপণে ব্যবহৃত উপকরণের দাম।


বিজ্ঞাপন