প্রাণ নাশের শঙ্কা বাদীর পরিবারের

অপরাধ আইন ও আদালত

নারী নির্যাতন-যৌতুকের মামলা করায়

 

 

বিশেষ প্রতিবেদক : রাজধানীর হাজারীবাগে যৌতুক লোভী স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুক ও নারী নির্যাতনের মামলা করায় এক কলেজ শিক্ষার্থী ও তার পরিবারকে মিথ্যা মামলায় হয়রানীসহ নানাভাবে হুমকি দেওয়ার গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযোগে জানা গেছে, পিরোজপুর সদর থানার বাঁশবাড়ি গ্রামের আব্দুল হামিদ শেখের ছেলে শেখ সাইফুল ইসলাম ওরফে রাহাতের সঙ্গে গত ২০১৯ সালের ১৭ফেব্রুয়ারি পারিবারিকভাবে সাহারা খান ওরফে রিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের সময় রিয়ার পরিবার ৪৬ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও আসবাবপত্রসহ ২৭লাখ টাকার মালামাল দেন। এছাড়া বিয়ের দিন আরো ৫ লাখ টাকার উপহার সামগ্রী দেওয়া হয়। বিয়ের ৬/৭দিন পর রিয়া তার বাবার বাড়িতে চলে আসেন। এসময় রিয়াকে বাবার বাড়ি থেকে দেওয়া স্বর্ণালঙ্কার তার শ্বশুর-শ্বাশুড়ি নিয়ে আসতে না দিয়ে তাদের বাড়িতে রেখে দেন।
রিয়া আইডিয়াল কলেজে লেখা-পড়া করতেন। এজন্য তিনি স্বামীর বাড়িতে বেশী যাতায়াত করতেন না। কিন্তু রিয়ার স্বামী শেখ সাইফুল রাহাত তাদের বাড়িতে নিয়মিত আসা-যাওয়া করতেন। এসময় রিয়ার বাবা তার স্বামী রাহাতকে হাত খরচের জন্য অনেক টাকা পয়সা দিতেন।
অভিযোগে জানা গেছে, রিয়ার স্বামীর বাড়ির লোকজন অত্যন্ত খারাপ প্রকৃতির মানুষ। আর রিয়ার কলেজ বন্ধ হলে তিনি স্বামীর বাড়িতে যান। এসময় তার স্বামী ও তাদের বাড়ির লোকজন যৌতুকের জন্য রিয়াকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতেন। গত বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১০টার দিকে রিয়ার বাবার বাড়িতে তার স্বামী সাইফুল ইসলাম রাহাত আসেন। এরপর তার সঙ্গে রিয়ার কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে রিয়াকে সে মারধর করে। এতে রিয়া গুরুতর জখম হন। পরে রিয়ার বাবা গত ২০১৯ সালের ১৬জুন রিয়াকে দেওয়া স্বর্ণালঙ্কারের জন্য হাজারিবাগ থানায় ৮২৪ নম্বরের একটি জিডি করেন। এরপর রিয়ার স্বামী ব্যবসার কথা বলে তার বাবার কাছ থেকে ১লাখ ৫০হাজার টাকা যৌতুক নিয়ে দিতে বলে।
রিয়া অভিযোগ করে জানান, তার স্বামী সাইফুল ইসলাম রাহাত ও তার বাড়ির লোকজনের নির্যাতন ও অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে যায়। তাদের নির্যাতন ও অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে গত ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে রিয়া তার বাবার বাড়ি ঢাকায় চলে আসেন। পরে তার স্বামী সাইফুল ইসলাম রাহাত মোবাইল ফোনে অকথ্য ভাষায় রিয়াকে গালাগালি ও খারাপ খারাপ ম্যাসেজ পাঠায় তার মোবাইলে। সর্বশেষ গত ১৫এপ্রিল সকালে রিয়ার স্বামী সাইফুল ইসলাম রাহাত, তার বাবা আব্দুল হামিদ শেখ, তার মা- লাইলী বেগম, বড় ভাই ওবাদুর শেখ রিয়ার বাবার বাড়িতে আসেন। এরপর ওই দিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে রিয়াকে তার রুমে একা পেয়ে তার বাবার কাছ থেকে ১৫লাখ টাকা যৌতুক নিয়ে দিতে বলা হয়। আর যদি সে যৌতুকের টাকা নিয়ে দিতে না পারেন তাহলে তাকে সংসার করতে দিবে না বলে হুমকি দেওয়া হয়। এসময় রিয়াকে তারা কিল, ঘুষি ও লাথি মেরে মাটিতে ফেলে দেয়। এতে সে মারাত্মকভাবে আহত হন। পরে তার ডাক চিৎকার শুনে রিয়ার মা-সহ পরিবারের লোকজন এগিয়ে গেলে তারা বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় রাজধানীর হাজারিবাগ থানায় রিয়া বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেছেন।
আর এই মামলার সংবাদ পেয়ে যৌতুক লোভী রিয়ার স্বামী ও তার পরিবারে লোকজন রিয়াকে বিভিন্নভাবে ভয়-ভীতিসহ হুমকি দিয়ে আসছেন। রিয়ার স্বামীসহ আসামিদের গ্রেফতার ও নির্যাতনে বিচার দাবি করেছে রিয়া ও তার পরিবার।


বিজ্ঞাপন