করোনা চিকিৎসায় বিশেষ ভূমিকা রাখবে সিকদার মেডিকেল কলেজ : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

জাতীয় স্বাস্থ্য

করোনাযোদ্ধাদের জন্য ২০ শতাংশ ছাড়

 

নিজস্ব প্রতিবেদক : সংবাদকর্মী, ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং যারা সামনে থেকে করোনা মোকাবেলায় কাজ করছেন তাদের কোভিড-১৯ চিকিৎসার খরচের উপর ২০ শতাংশ ছাড়ের ব্যবস্থা রেখে একটি পূর্ণাঙ্গ কোভিড-১৯ হাসপাতাল হিসেবে যাত্রা শুরু করলো জয়নুল হক সিকদার ওমেন্স মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালের গুলাশান শাখা। গতকাল শনিবার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী জাহেদ মালেক স্বপন এমপি প্রধান অতিথি হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে এ হাসপাতালের উদ্বোধন করেন। প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি বলেন, সিকদার গ্রুপ বাংলাদেশের চিকিৎসা খাতের পথ প্রদর্শক। করোনা সংকট মোকাবেলায় সিকদার গ্রুপের এই এগিয়ে আসা আমাদের জন্য একটি আনন্দ সংবাদ। তিনি আরও বলেন, এই হাসপাতালটি গত ২০ বছর ধরে সুনামের সাথে চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছে। এখানে একটা কথা না বল্লেই নয় বহু বছর আগে আমার মা এর স্ত্রেন্তিং করা হয় এই হাসপাতাল থেকে। হৃদ রোগ চিকিৎসা সিকদার হাসপাতাল এ দেশের পথিক্রিত। এখান থেকে ই দেশের প্রথম ওপেন হার্ড সার্জারি হয়। আমি আশাবাদী কোভিড-১৯ চিকিৎসায় ও তারা তাদের সুনাম অক্ষুন্ন রাখবে।
পঞ্চাশ শয্যা বিশিষ্ট এই হাসপাতালে রয়েছে দেশ-বিদেশের অভিজ্ঞ ডাক্তার, নার্স এবং অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি। করোনা স্যাম্পল সংগ্রহের জন্য আলাদা ইউনিট, আইসোলেশন ওয়ার্ড ছাড়াও এখানে রয়েছে ২১ডি নতুন সিসিইউ এবং আইসিইউ বেড, পিসিআর ল্যাব, ভে›িডলেডর, নেবুলাইজার মেশিন, কার্ডিয়াক মনিডর, বহনযোগ্য ডিজিডাল এক্সরে মেশিন, সিডি স্ক্যান মেশিন, ইসিজি, ইকো, এমআরআই এবং অত্যাধুনিক সুবিধা সম্বলিত কেবিন ও ওয়ার্ড। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিকদার গ্রুপের পরিচালক এবং বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সদস্য পারভিন হক সিকদার। তিনি বলেন, আজকে সিকদার গ্রুপের জন্য একডি বিশেষ দিন। আমরা আরও একবার মানুষের সেবা করার সুযোগ পাচ্ছি। আমার বাবা, সিকদার গ্রুপের চেয়ারম্যান জয়নুল হক সিকদার করোনা সংকটের একদম শুরুর দিকে সরকারকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছিলেন যে, সরকার চাইলে আমাদের সব হাসপাতাল প্রয়োজনমত ব্যবহার করতে পারবে। কিছুটা বিলম্ব হলেও আজকে আমরা সেবা দেবার জন্য যাত্রা শুরু করেছি। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার পাশে থেকে সাধারণ মানুষের জন্য কিছু করতে পেরে আমরা গর্বিত এবং আনন্দিত। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, এই সংকডময় সময় দেশের জন্য যে সহযোগিতাডা সবচেয়ে বেশি জরুরি ছিল সেটি নিয়ে এগিয়ে আসার জন্য আমি সিকদার গ্রুপের কাছে বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ। সিকদার গ্রুপের এই এগিয়ে আসা করোনা মোকাবেলায় আমাদের অনেক দূর এগিয়ে নেবে বলে আমি বিশ্বাস করি। হাসপাতালের গুলশান শাখায় অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালটির পরিচালক, স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক (হাসপাতাল) এবং স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা খাতের সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিগণ। সিকদার গ্রুপের পরিচালক রন হক সিকদারের ব্যাক্তিগত প্রচেষ্টায় এই হাসপাতালটি প্রস্তুত হয়। তিনি অসুস্থ হয়ে বিদেশে চিকিৎসাধীন থাকায় এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারেন নি।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, দেশের চিকিৎসা খাতের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ও বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠানের নাম জয়নুল হক সিকদার ওমেন্স মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতাল। বাংলাদেশের চিকিৎসা সেবা খাতের অনেক প্রথমের সাথে জড়িয়ে আছে এই প্রতিষ্ঠানটির নাম। এর মধ্যে, ১৯৯২ সালে নারীদের জন্য চিকিৎসা শিক্ষা নিশ্চিত করতে আলাদা মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা, প্রথমবারের মত হার্টের চিকিৎসা এবং দেশে প্রথমবারের মত সফল ওপেন হার্ড সার্জারি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ২০০০ সালে গুলশানে প্রতিষ্ঠা করা হয় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালডির দ্বিতীয় শাখা। করোনা মহামারি মোকাবেলায়, বঙ্গবন্ধু কন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডাকে দ্বিতীয় হাসপাতালকে সম্পূর্ণরূপে কোভিড-১৯ রোগের চিকিৎসা উপযোগী করে তোলা হয়।


বিজ্ঞাপন