করোনায় ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু ৪৩ জনের

এইমাত্র জাতীয় জীবন-যাপন স্বাস্থ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশে করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে ভাইরাসটি মোট এক হাজার ৫৪৫ জনের প্রাণ কেড়ে নিলো। একই সময়ে করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে আরও তিন হাজার ৪১২ জনের দেহে। ফলে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল এক লাখ ১৯ হাজার ১৯৮ জনে।
মঙ্গলবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস বিষয়ক নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানান অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
তিনি নতুন যুক্ত তিনটিসহ মোট ৬৫টি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষার তথ্য তুলে ধরে জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৭ হাজার ৫৬৩টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় ১৬ হাজার ২৯২টি। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো ছয় লাখ ৪৪ হাজার ১১টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে আরও তিন হাজার ৪১২ জনের মধ্যে। ফলে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল এক লাখ ১৯ হাজার ১৯৮ জনে। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরও ৪৩ জন। এ নিয়ে মোট মারা গেলেন এক হাজার ৫৪৫ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরও ৮৮০ জন। সব মিলিয়ে মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যা এখন ৪৭ হাজার ৬৩৫ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় যারা মারা গেছেন তাদের ৩৮ জন পুরুষ, পাঁচজন নারী। এদের মধ্যে ১১ থেকে ২০ বছরের একজন, ত্রিশোর্ধ্ব একজন, চল্লিশোর্ধ্ব ছয়জন, পঞ্চাশোর্ধ্ব ১৮ জন, ষাটোর্ধ্ব ১০ জন, সত্তরোর্ধ্ব পাঁচজন এবং ৮০ বছরের বেশি বয়সী দুজন রয়েছেন। ১৬ জন ঢাকা বিভাগের, ১৫ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ছয়জন রাজশাহী বিভাগের, দুজন করে খুলনা ও ময়মনসিংহ বিভাগের এবং একজন করে বরিশাল ও সিলেট বিভাগের। ৩০ মারা গেছেন হাসপাতালে, ১২ জন বাসায় এবং একজনকে হাসপাতালে আনার পর মৃত ঘোষণা করা হয়।
গত সোমবারের (২২ জুন) বুলেটিনে জানানো হয়, করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। ১৫ হাজার ৫৫৫টি নমুনা পরীক্ষায় করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে আরও তিন হাজার ৪৮০ জনের মধ্যে। সে হিসাবে আগের ২৪ ঘণ্টার তুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত রোগীর সংখ্যা কমলেও বেড়েছে মৃত্যু। দেশে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড আছে ৫৩ জনের। সে তথ্য জানানো হয় ১৬ জুনের বুলেটিনে। আর সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড আছে চার হাজার আট জনের। এ তথ্য জানানো হয় ১৭ জুনের বুলেটিনে।
মঙ্গলবারের বুলেটিনে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার তুলনায় রোগী শনাক্তের হার ২০ দশমিক ৯৪ শতাংশ। এ পর্যন্ত রোগী শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৩৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩০ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে আরও ৬৮০ জনকে এবং এ পর্যন্ত আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে ২১ হাজার ১১২ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ২২০ জন এবং এ পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন আট হাজার ১৮৫ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে রয়েছেন ১২ হাজার ৯২৭ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে দুই হাজার ৪১৪ জনকে, এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে তিন লাখ ৪৪ হাজার ৬৬০ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড় পেয়েছেন দুই হাজার ১৬৪ জন, এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইন থেকে মোট ছাড় পেয়েছেন দুই লাখ ৮০ হাজার ৫১৪ জন। বর্তমানে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ৬৪ হাজার ১৪৬ জন।
করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকতে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানানো হয় বুলেটিনে।
এদিকে পরিসংখ্যান বিষয়ক ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্যমতে, বিশ্বব্যাপী নোভেল করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯২ লাখ ৩ হাজার ৩৮৬ জন। আর এখন পর্যন্ত এ ভাইরাসে মৃত্যু হয়েছে ৪ লাখ ৮৪ হাজার ৬৬২ জনের। সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৪৯ লাখ ৫৩ হাজার ৭৮০ জন। মঙ্গলবার (২৩ জুন) সকাল পর্যন্ত করোনার সার্বক্ষণিক পরিসংখ্যান প্রদানকারী ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারের সবশেষ হিসাবে এই তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশে গত ৮ মার্চ প্রথম করোনা ভাইরাসের রোগী শনাক্ত হলেও প্রথম মৃত্যুর খবর আসে ১৮ মার্চ। দিন দিন করোনা রোগী শনাক্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ায় নড়েচড়ে বসে সরকার। ভাইরাসটি যেন ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য ২৬ মার্চ থেকে বন্ধ ঘোষণা করা হয় সব সরকারি-বেসরকারি অফিস। কয়েক দফা বাড়িয়ে এ ছুটি ৩০ মে পর্যন্ত করা হয়। ছুটি শেষে করোনার বর্তমান পরিস্থিতির মধ্যেই ৩১ মে থেকে দেশের সরকারি-বেসরকারি অফিস খুলে দেয়া হয়। তবে বন্ধ রাখা হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।


বিজ্ঞাপন