স্বাস্থ্যখাতে নয়-ছয়

অপরাধ এইমাত্র জাতীয় স্বাস্থ্য

দুদক সুপারিশ দিলেও, নীরব মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতর

 

নিজস্ব প্রতিবেদক : স্বাস্থ্যখাতের দুর্নীতি বন্ধে দুদকের দৌড় মামলা করা পর্যন্তই। দুর্নীতি দমন কমিশন দফায় দফায় সুপারিশ দিলেও, নীরব মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতর। সংকটকালে সুরক্ষা সরঞ্জাম কেনাকাটায় নয়-ছয় বন্ধেও উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নেই বলে জানালেন বিশেষজ্ঞরা। তবে দুদকের সুপারিশ বাস্তবায়নে ধীরগতির জন্য রদবদলকে দায়ী করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। অন্যদিকে দুদক ও স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মন্ত্রণালয়, দফতরগুলো উদ্যোগী না হলে, দুদকের একার পক্ষে দুর্নীতি দমন সম্ভব নয়।
ফরিদপুর মেডিকেলে পর্দা কেনায় দুর্নীতির পর, একে একে দেশের মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালগুলোর যন্ত্রপাতি কেনাকাটা ও অর্থ আত্মসাতের গড়মিলে চক্ষু চড়ক হতে বাধ্য, যে কারো। নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অন্তত অর্ধশত হাসপাতাল পরিচালক, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ের কর্মচারীকে আসামি করে ১১ টি মামলা করে দুদক। দুর্নীতি বন্ধে গত দু- তিন বছরে কয়েকদফা মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট দপ্তরে সুপারিশ করার পর শেষ পর্যন্ত গত ১৪ ডিসেম্বর স্বাস্থ্যখাতের বেহাল দশা জানিয়ে মন্ত্রীপরিষদ সচিবের কাছে সুপারিশ পাঠায় তারা। কিন্তু দুর্নীতির অবস্থার কোন পরিবর্তন হয় নি।
দুদুক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, মামলা করে সব সময় দুর্নীতি বন্ধ করা সম্ভব নয়। মামলা করে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কিছু প্রভাব দেখাতে পারেন। যেসকল সুপারিশ আমরা সেগুলো প্রয়োগ ও বাস্তবায়নের দায়িত্ব আমাদের না। যদি তারা মনে করেন সিস্টেম পরিবর্তন করা দরকার, তারাই পরিবর্তন করতে পারেন।
আগের দুর্নীতির বিচার না হতেই বর্তমান সংকটময় পরিস্থিতিতে ৪ জুন করোনা সুরক্ষা সামগ্রী কেনাকাটায় দু থেকে চার গুন বেশি দাম নির্ধারণ ও নি¤œ মানের সামগ্রী কেনার তথ্য সামনে আসে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. রশিদ-ই মাহবুব বলেন, স্বাস্থ্যখাতের যে ম্যানেজমেন্ট সেটা দুর্নীতি পরায়ণ। সেখানে স্বচ্ছ লোকজন নেই। অভিজ্ঞ লোক নেই। স্বাস্থ্যখাতের ম্যানেজমেন্টকে যদি নতুনভাবে বন্দোবস্ত না করেন, সংস্কার না করেন, এটা বন্ধ হবে না।
টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, স্বাস্থ্যখাতের দুর্নীতি বন্ধে কিছু পদক্ষেপের জন্য দুদক কিছু সুপারিশ করেছিল যেগুলো গ্রহণ করলে অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ হত। এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দাবি, সুপারিশ অনুযায়ী কাজ হচ্ছে। তবে তা বাস্তবায়নে গতিরোধকের কাজ করছে প্রশাসনিক রদবদল।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, দুদকের পরামর্শ অনুযায়ী কাজ হচ্ছে। যখন একটু পরিবর্তন হয় তখন তো চেইন অব সিস্টেমে একটু নাড়া পড়ে। পাশাপাশি, ২০২০-২১ অর্থবছরের বরাদ্দকৃত বাজেট সম্পূর্ণ কার্যকরী করতে, স্বাস্থ্য খাতের পূর্বের দুর্নীতির রেকর্ড বিবেচনা ও দুদকের সুপারিশ আমলে নিয়ে পরিকল্পনা করতে হবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।


বিজ্ঞাপন