যৌতুকের বলি সাংবাদিক কন্যা মৌসুমী

অপরাধ আইন ও আদালত

ঘাতকরা মামলা প্রত্যাহারের হুমকি দিচ্ছে

 

নিজস্ব প্রতিবেদক: যৌতুক লোভী ঘাতক স্বামী গ্রেফতার হলেও কলেজ ছাত্রী মিতু খানম মৌসুমী হত্যা মামলার আসামিদের পুলিশ গ্রেফতার করছে না। ফরে মামলার আসামিরা মামলার আসামিরা মামলা তুলে নেওয়ার জন্য বিভিন্ন প্রকার হুমকি দিয়ে আসছে বলে গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুরের কাশালিয়ার এলাকার সাংবাদিক শেখ মোহাম্মদ আলীর মেয়ে কলেজ ছাত্রী মিতু খানম মৌসুমী (২৫) কে একই এলাকার মো. আব্দুল আহাদ মোল্লার সঙ্গে ২০১৮ সালের ৬ সেপ্টেম্বর পারিবিকভাবে বিয়ে দেন। বিয়ের সময় প্রায় আট ভরি ওজনের স্বর্ণের অলঙ্কার ও নগদ ১ লাখ ২৫ হাজার টাকাসহ প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র প্রদান করা হয়। বিয়ের পর মোসা. আম্বিয়া বেগম, আব্দুল মান্নান মোল্লা, মো. রেজাউল মোল্লা, আব্দুস সাত্তার শেখ, মোসা. মমতাজ বেগম, মো, ময়না শেখ, মো. পান্নু শেখ, মো. রনি মোসা. লিলি বেগম মিতুকে তার বাবার বাড়ি থেকে ৩ লাখ টাকা যৌতুক এনে দেওয়ার দাবি করেন। তখন মিতু তাদের দাবির প্রতিবাদ করে এবং তার বাবার কাছ থেকে যৌতুক এনে দিতে পারবে না বলে জানায়। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে মিতুর উপর জুলুম নির্যাতন চালানো হয়।
নিহতের বাবার শেখ মোহাম্মদ আলী অভিযোগ করে বলেছেন, গত ২০১৯ সালের ১৬ নভেম্বর সকালে উক্ত ব্যক্তিগণ তার মেয়ে মিতুকে বলেন, তোমার বাবার কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা যৌতুক এনে দাও। আর যদি তা না কর, তাহলে তাদের ছেলে নুন্নাহার ওরফে কুটি ময়নাকে তাদের ছেলেকে দিয়ে বিয়ে করাবে এবং তার কাছ থেকে তাদের দাবিকৃত টাকা নিয়ে নেবে। মিতু তাদের কথার প্রতিবাদ করলে তার স্বামী আব্দুল আহাদ মোল্লা মিতুকে লোহার রড দিয়ে এলোপাথারি আঘাত করে। এতে তার শরীরের বিভিন্ন জায়গা গুরুতর রক্তাত্ব জখমপ্রাপ্ত হন। এরপর মিতুকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার গলায় উড়না পেচিয়ে হত্যার চেস্টা করে। এসময় তার ডাক চিৎকার শুনে প্রতিবেশী লোকজন এগিয়ে এলে যৌতুকলোভী স্বামীসহ তার পরিবারের লোকজন পালিয়ে যায়। পরে প্রতিবেশীরা মিতুকে উদ্ধারের পর মোকসেদপুর উপজেলা কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন। এরপর খবর পেয়ে তার বাবা শেখ মোহাম্মদ আলী মিতুকে সেখান থেকে এনে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এনে ভর্তি করেন। এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে গত বছরের ১২ ডিসেম্বর তাকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ ঘটনায় মিতুর বাবা বাদি হয়ে গত ৭আগস্ট গোপালগঞ্জের মোকসেদপুর থানায় মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ মিতুর ঘাতক স্বামীকে গ্রেফতার করলেও অন্যান্য আসামিদের এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি বলে জানা গেছে। ফলে মামলার আসামিরা মামলা তুলে নেওয়ার জন্য মিতুর বাবাসহ পরিবারের সদস্যদের বারবার হুমকি দিয়ে আসছে।
এ ব্যাপারে মিতুর বাবা ঘাতকদের গ্রেফতারের জন্য প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পুলিশের আইজিসহ সংশ্লিস্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন।


বিজ্ঞাপন