নারায়ণগঞ্জে চাঁদা দিয়ে বিনা বাধায় চলছে অবৈধ পরিবহন

সারাদেশ

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি : নারায়ণগঞ্জে বিনা বাধায় দাপটের সঙ্গে চলাচল করছে অবৈধ যানবাহন। সর্বত্র অবাদে ঘুরে বেড়াচ্ছে পিটনেসবিহীন যাত্রীবাহী বাস, দূরন্ত পরিবহন, লেগুনা, ইজিবাইক ও ব্যাটারিচালিত রিকশা। এসব যানবাহন চলাচলের জন্য সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে গড়ে তোলা হয়েছে অবৈধ স্ট্যান্ড। চলছে চাঁদাবাজির উৎসব। সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। স্থানীয়দের অভিযোগ এসব অবৈধ পরিবহন চলাচল রোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো তৎপরতা নেই।
নারায়ণগঞ্জ শহর ও বিভিন্ন এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে যাত্রী সাধারণ যানজটে ভোগলেও করোনা পরিস্থিতিতে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে ছিল। বর্তমানে আবার তা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। যেখানে সেখানে অবৈধ পার্কিং, সড়ক দখল করে অবৈধ স্ট্যান্ড, দিনে পণ্যবাহী ট্রাক চলাচলসহ বিভিন্ন কারণে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। সড়কের এই নৈরাজ্য দমনে জেলা ট্রাফিক বিভাগ ও নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের উল্লেখ যোগ্য কোনো প্রদক্ষেপ নেই। এত নিত্যদিন চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছে জেলাবাসী।
স্থানীয়রা জানায়, করোনা পরিস্থিতির কারণে সরকারি ভাবে গণপরিবহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকায় গত কয়েক মাস সড়কে নৈরাজ্য ছিলনা। গত ঈদ উপলক্ষ্যে মার্কেট খুলে দেওয়া ও সম্প্রতি বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান চালু হওয়ার পর থেকে সড়ক গুলোতে বিনা বাধায় নির্বিগ্নে চলাচল করেছে অবৈধ যানবাহন। যানবাহন চলাচলে সরকারি ভাবে স্বাস্থ্য বিধি মানার বিধি থাকলেও এসব পরিবহন কর্তৃপক্ষ তা মানছেনা। কোন নজরধারী না থাকায় যাত্রীদের মধ্যে নেই স্বাস্থ্য বিধি মানার মন মানসিকতা। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুকি থাকা সত্যেও যাত্রীরা গাদাগাদি করেই চলাচল করছে। ফলে দেখা দিয়েছে সেই আগের চিত্র।
অভিযোগ উঠেছে, পরিস্থিতি বদলে গেলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ভূমিকা বদলায়নি। লকডাউনের পর থেকে জেলা ট্রাফিক পুলিশের তেমন কার্যক্রম লক্ষ করা যায়নি। সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষও নিরব।
সরেজমিনে দেখা গেছে, শহরের চাষাঢ়া মোড়, জিমখানা মোড়, ডিআইটি, ২ নম্বর রেল গেইট চত্ত্বর, গলাচিপা, ১ নম্বর রেল গেইট, কালিরবাজার, খাঁজা মার্কেট, শহীদ মিনার, সরকারি মহিলা কলেজ, চাষাঢ়া রেল স্টেশনের সামনে, সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল মোড়, আদমজী, সাইনবোর্ড, ফতুল্লার শিবু মার্কেট, সোনারগাঁয়ের কাঁচপুর, মোঘরাপাড়া, রূপগঞ্জের তারাব বিশ্বরোর্ডসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে অবৈধ ইজিবাইক, লেগুনা ও সিএনজি স্ট্যান্ড গড়ে তুলা হয়েছে। এসব অবৈধ পরিবহন থেকে আদায় করা হচ্ছে লাখ লাখ টাকা চাঁদা। জেলায় ইজিবাইক ও ব্যাটারি চালিত রিকশার সঠিক পরিসংখ্যান জানা না থাকলেও সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ইজিবাইকের সংখ্যা কমপক্ষে অর্ধলক্ষ আর ব্যাটারী চালিত রিকশার সংখ্যা লক্ষাধিক হবে। তাছাড়া মহাসড়কে সিএনজি ও ইজিবাইক চলাচল সরকারি ভাবে নিষিদ্ধ থাকলেও তা নারায়ণগঞ্জে মানা হচ্ছে না।
এ বিষয়ে জেলা ট্রাফিকের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার সালেহ উদ্দিন আহমেদ জানান, বিষয়টি আমরা অবগত আছি। এ নিয়ে পুলিশ সুপার সাহেবের সঙ্গে কথা বলেছি। আসলে ইজিবাইক ও অটোরিকশা চলাচল রোধ করতে হলে আমাদের জেলা পরিষদ, অক্টো অফিস, মন্ডলপাড়া, মেট্রোহলসহ বিভিন্ন পয়েন্টে লোক লাগবে। আমাদের জনবলের অভাব রয়েছে। জেলা ট্রাফিক বিভাগে লোক আছে একশ জন। যা পর্যাপ্ত নয়। আরো অন্তত ৫০ জন লোক প্রয়োজন।


বিজ্ঞাপন