চিকিৎসকদের হোটেল বিল ৩ কোটি টাকা

সারাদেশ স্বাস্থ্য

জানেনা পরিচালক-সিভিল সার্জন

 

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামে করোনাকালিন চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের আবাসিক হোটেল ভাড়া বাবদ সরকারের কাছে তিন কোটি টাকা হোটেল ভাড়া দাবি করেছেন আবাসিক হোটেলগুলো। তবে দাবিকৃত এই টাকার বিষয়ে কিছুই জানেন না স্বাস্থ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের পরিচালক হাসান শাহরিয়ার কবির ও সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বী। বিতর্কিত এই বিলের দাবিতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দুশ্চিন্তায়। তবে এমন দাবি অযৌক্তিক বলেও মনে করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা যায়, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে কোভিড রোগীদের চিকিৎসা সেবা চালু হওয়ার পর নগরীর সাতটি আবাসিক হোটেলে সেবাদানকারী চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়। অল্প কিছুদিন এসব হোটেলে হাসপাতালের চিকিৎসকসহ ১৮০ জন রাখার ভুয়া বিল করেছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। ১৮০ জন উল্লেখ করা হলেও প্রকৃত পক্ষে হোটেলগুলোতে ১০০ জনের কম লোককে রাখা হয়েছিল বলে সূত্রে জানায়। চট্টগ্রামের আবাসিক হোটেলগুলোর পক্ষ থেকে প্রায় তিন কোটি টাকার ভুয়া বিল ভাউছার করেছে। হোটেলগুলো অতিরিক্ত বিল করায় সাতটি আবাসিক হোটেলের সাথে চুক্তি বাতিল করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আগেই এসব হোটেলে ইউটিলিটি বিল (বিদ্যুাৎ, পানি ও ওয়াইফাই) বাবদ প্রায় কোটি টাকার বিল হাতিয়ে নিয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর সম্প্রতি এসব হোটেলের রুমভাড়া পরিশোধ নিয়ে চিঠিও দিয়েছেন চমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম হুমায়ুন কবীর স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়, স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশনা মোতাবেক নগরীর হোটেল রিজেন্ট প্যালেস, হোটেল এম্বাসেডর, হোটেল দি এভেনিউ, হোটেল লাভা ইন, হোটেল লর্ডস ইন, হোটেল আশরাফী, হোটেল ওয়েল পেলেসসহ ৭টি হোটেল ৩ কোটি টাকা সরকারের কাছে দাবি করছে। এ বিষয়ে চট্টগ্রাম আবাসিক হোটেল মালিক সমিতির সভাপতি সাবেক কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান বলেন, করোনাকালিন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের রাখার জন্য তিন কোটি টাকার যে বিল করা হয়েছে সেটা অনেকটা অতিরিক্ত, তবে হোটেলগুলো বরাদ্দ নেয়ার ক্ষেত্রে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের সাথে কোন ধরণের যোগাযোগ করেনি এবং তাঁরা কার পরামর্শে এইসব হোটেল ভাড়া করছিল তা জানি না। এর চেয়ে কম দামে অনেক ভাল হোটেল চট্টগ্রামে রয়েছে। তবে মানবিক বিবেচনা না করে এভাবে সরকারের কাছ থেকে অতিরিক্ত বিল চাওয়ার পক্ষে নন হোটেল মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগের পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির বলেন, হোটেলগুলোর বিলের বিষয়ে আমি কিছু জানিনা। বিষয়টি সিভিল সার্জন ও চমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ভালো বলতে পারবেন।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বী বলেন, আমার কোন চিকিৎসক হোটেলে ছিলনা মূলত চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের কিছু চিকিৎসক আবাসিক হোটেলে ছিল। এ বিষয়ে বিস্তারিত তারাই বলতে পারবে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. মোহাম্মদ আফতাবুল ইসলাম বলেন, হোটেলগুলো দাবিকৃত বিল অনুমোদনের জন্য মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হয়েছে। তবে টাকার অংকটা আমার সঠিক জানা নেই।


বিজ্ঞাপন