লড়াই হবে নৌকা ধানের

রাজনীতি

ঢাকা-৫ ও নওগাঁ-৬ উপ-নির্বাচন

নিজস্ব প্রতিবেদক : আগামী ১৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ঢাকা-৫ ও নওগাঁ-৬ আসনের ভোট। মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ সময় নির্ধারিত করা হয়েছে ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এর আগে গত ৬ মে বার্ধক্যজনিত কারণে হাবিবুর রহমান মোল্লা মারা গেলে ঢাকা-৫ আসন শূন্য হয়ে যায়। ৯০ দিনের হিসাবে এ আসনে ভোট করার শেষ সময় ১ নভেম্বর। এছাড়া গত ২৭ জুলাই নওগাঁ-৬ আসনের সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলম করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যান। ফলে আসনটি শূন্য হয়ে যায়। সে অনুযায়ী ৯০ দিনের হিসাবে ২৪ অক্টোবরের মধ্যে এই আসনে ভোট করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে নির্বাচন কমিশন এর আগেই এ দুটি আসনে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছে।
এদিকে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি আগে থেকেই নিয়ে রেখেছে। কিন্তু অন্যদিকে বাংলাদেশের অন্যতম রাজনৈতিক দল বিএনপি উপ-নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে কি না সে বিষয়ে সংশয় ছিল আগে থেকেই। তবে নানা জল্পনা কল্পনার পর শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি।
বিশিষ্টজনেরা বলছেন, বিএনপি যেহেতু নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে তাহলে আবারো হয়তো নৌকা এবং ধানের শীষের একটা লড়াই দেখা যাবে। লড়াইটা বেশ জমজমাট হবে বলেই আশাবাদী তারা।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য সকালের সময়কে বলেন, আমরা আগে থেকেই বলে আসছি যে কোনো নির্বাচনেই ক্ষমতাসীনদের ছাড় দিব না। সেক্ষেত্রে আসন্ন ঢাকা-৫ ও নওগাঁ-৬ আসনের নির্বাচনেও আমরা আ. লীগকে কোনো প্রকার ছাড় দিব না।
নির্বাচন কমিশন সূত্র বলছে, ঢাকা-৫ ও নওগাঁ-৬ আসনের উপ-নির্বাচনে ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ঢাকা-৫ ও নওগাঁ-৬ আসনের ভোট অনুষ্ঠিত হবে ১৭ অক্টোবর। এদিকে ২০ সেপ্টেম্বর মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ও ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সুযোগ থাকবে। অন্যদিকে নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দ হবে ২৮ সেপ্টেম্বর। এর মধ্যেই যদি কেউ প্রার্থীতা প্রত্যাহার করতে চায় তাহলে ২৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যেই তা করতে হবে।
কমিশন সূত্র থেকে জানা যায়, ঢাকা-৫ ও নওগাঁ-৬ এই দুটি আসনেই ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট গ্রহণ হবে। ভোট হবে সকাল ৯টা থেকে শুরু করে বিকাল ৫টা পর্যন্ত। স্বাস্থ্যবিধি মেনেই সেদিন সারাদিন ভোট গ্রহণ চলবে।
এ বিষয়ে ইসি সচিব বলেন, নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ১৭ অক্টোবর ভোট অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকা-৫ ও নওগাঁ-৬ দুটি আসনেই ভোট হবে ইভিএমে। এদিকে সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর স্থগিত হওয়া নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা শুরু হবে। সেদিনই আমরা স্থানীয় সরকার নির্বাচনের চূড়ান্ত তারিখ ঘোষণা করবো।
নির্বাচন কমিশনের এই সিনিয়র সচিব আরো বলেন, আগামী অক্টোবর মাস থেকেই পৌরসভার বিভিন্ন নির্বাচন শুরু করা হবে। যে নির্বাচন বন্ধ রয়েছে বা আইনি জটিলতা আছে, সেগুলো নিয়েও আমরা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করছি। এছাড়া ইউনিয়ন পরিষদের স্থগিত বা উপ-নির্বাচনগুলো সেরে ফেলা হবে।
এ বিষয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং কর্মকর্তা সাইরুল কবির খান সকালের সময়কে বলেন, শুরুর দিকে উপ-নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণের বিষয়ে দলের মধ্যে মতবিরোধ ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত দলের হাইকমান্ড নির্বাচনে অংশ নেয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়।
তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নিলে দলের জন্য অনেক ক্ষতিকর। দলের নীতিনির্ধারকরা মনে করেন বিএনপি মাঠে আছে এটা প্রমাণ করার জন্য হলেও আমাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা উচিৎ। তবে দলের প্রার্থীরা ক্ষমতাসীনদের বিন্দু পরিমাণ ছাড় দিতে নারাজ।
এদিকে ঢাকা-৫ আসনের উপনির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ঢাকার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাকে, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে ডেমরা থানা নির্বাচন অফিসার ও মতিঝিল থানা নির্বাচন অফিসারকে। নওগাঁ-৬ আসনের উপনির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে এবং সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন নিয়ামতপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা।


বিজ্ঞাপন