শিশু ধর্ষণের অভিযোগে প্রতিবন্ধি অপু কারাগারে

সারাদেশ

গ্রামবাসির দাবি এটা মিথ্যা সাজানো নাটক
মো:রফিকুল ইসলাম, নড়াইল: নড়াইলের উজিরপুর গ্রামে ৪ বছরের শিশু ধর্ষণের অভিযোগে নিরপরাধী প্রতিবন্ধি অপু বিশ্বাস (১৩) জেল হাজতে কারাভোগ করছে।
উজিরপুর গ্রামের একাধিক ব্যক্তি জানান,৪ বছরের শিশু কে ধর্ষণ করবে একটা বুদ্ধি প্রতিবন্ধি ছেলে এটা কি আপনাদের বিশ্বাস হয়।
এটা একটি সাজানো মিত্থ্যা কাহিনী,শিশুটি সকাল থেকে আমাদের সামনে বিকাল পর্যন্ত খেলাধুলা করছিল কিছুই দেখলাম না বা জানলাম না কিন্তু রাতে শুনি বাচ্চাটিকে নাকি অপু ধর্ষণ করেছে,এজন্য রাতে পুলিশ ছাড়া কিছু ছেলে এসে অপু কে ধরে নিয়ে গেল,পরে শুনলাম রাস্তা থেকে পুলিশ অপুকে থানায় নিয়ে গেছে।
শিশুটি যদি ধর্ষণই হবে সকালে তাহলে মহর্রমের কাফেলা দেখতে বিকালে গেল বাবার সাথে কি করে এটা হিন্দু পরিবারের প্রতি নির্যাতন বলেও জানান।
এদিকে মামলা ও ধর্ষণের প্রথম স্বাক্ষী,সাগরী খাতুন জানান,আমার সামনে দিন ভর খেলাধুলা করেছে শিশুটি,অসুস্থ্য বা ধর্ষণ হয়েছে কিছুই জানলাম না কিন্তু রাতে লোক মূখে শুনি শিশুটি ধর্ষণ হয়েছে এবং পরের দিন শুনি আমি মামলা ও ধর্ষণের স্বাক্ষী,আমি কিছুই জানিনা তাহলে স্বাক্ষী হলাম কিভাবে।
দ্বিতীয় স্বাক্ষী,রিক্তা খাতুন বলেন,আমি যখন শুনেছি তখন বাচ্চাটিকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখলাম কিছুই হয়নি ও বাচ্চাটির বাবা-মা আমাকে বলে ধর্ষণ হয়নি,কিন্তু আমার মেয়েকে অপু বাগানে নিয়ে গেছিলো যদি আমার মেয়ের কিছু হয়ে যেত তাহলে কি হতো এই শুনে বাড়ি চলে আসি।
দুই দিন পরে শুনি আমি ধর্ষণ মামলার স্বাক্ষী, আমি তো কিছুই দেখিনি তাহলে কেন আমাকে স্বাক্ষী বানানো হলো।
অপু বিশ্বাসের মা কান্নাজনীত কন্ঠে বলেন,আমার ছেলে যদি অন্যায় করে তাহলে পুলিশ বিচার করবে,রাসেল বিল্লাহ্ কে যে আমার ছেলেকে রাতের অন্ধকারে ধরে নিয়ে গেলা এবং মাশরাফীর পরিচয় দিয়ে যে মাশরাফী তাদের পাঠিয়েছে আমার ছেলে কে ধরে নিয়ে যেতে।
আমার ছেলেকে ধরে নিয়ে যাওয়ার পরে রাত ১টার সময় আবারও আমার বাড়িতে রাসেল বিল্লাহ্ ও সাকিব মোল্লা এসে আমার বড় ছেলে সজিব কে ডেকে বলে আমার ছেলে সজিব ও আমার স্বামী সজিবের বাবা শিশির বিশ্বাসের নামে মামলা হচ্ছে আমি বন্ধ করে এসেছি সজিব তুমি এদিকে আসো তোমার সাথে পার্সোনাল কথা আছে তখন আমি ছেলেকে ওদের কাছে যেতে দেইনি আমার স্বামী ওদেরকে বলে এখন তোমাদের সাথে কোন কথা নাই আমার নিরপরাধ ছেলেকে ধরে নিয়ে গেছ তোমরা যাও এবং আমাদের বাড়িতে গ্রামের লোকজন দেখতে পেয়ে তাড়াতাড়ি চলে যায়।
কাতেবর মোল্লার সাথে আমাদের যায়গা জমি নিয়ে ঝামেলা চলছে আমাদের জমির টাকা এখনো দেইনি আরো কাতেবরের স্ত্রী আমাকে বলেছিলো ব্যারাক সমিতি থেকে লোন তুলে দিতে,আমি দেইনি,আমরা হিন্দু মানুষ এজন্য আমাদের সাথে তারা ঝামেলা করছে আমি এসব মিথ্যাবাদিদের ও ইন্দোনদাতাদের বিচার চাই বলেও জানান।
অপুর বড় ভাই সজিব বিশ্বাস বলেন,আমার প্রতিবন্ধি ভাই কোন দিন ও এসব করতে পারেনা কারন ও নিজেই শিশু কারন অপুর মাথায় সমস্যা প্রতিবন্ধি,আমার ভাই যদি অপরাধ করে তাহলে আমি আমার ভায়েরও বিচার চাই।
আমার ভাই ধর্ষণ করেনি,দাক্তারী রিপোর্টে ধর্ষণের কোন আলামত পাওয়া যায়নি তাহলে আমার প্রতিবন্ধি ভাই কেন অন্ধকার কারাগারে মা মা বলে চিৎকার করছে,আমার নিরপরাধ প্রতিবন্ধি ভাই কে মুক্তি দেয়া হোক।
আমার ভায়ের নামে এমন যঘন্য মিথ্যা অপবাদ দেয়ায় আমার পরিবারের সন্মানহানী হয়েছে,আমি এমন মিথ্যা বানোয়াটকারীদের সকলের বিচারে আওতায় নিয়ে বিচার দাবি করছি বলে সাংবাদিকদের জানান।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে,ধর্ষণের অভিযোগে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরের দিন ধর্ষণের পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য তিন সদস্যের একটি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়।
শিশুটি ধর্ষিত হয়নি বা ধর্ষণের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি বলেও জানা যায়।
এমন প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে রাসেল বিল্লাহসহ কয়েকজন যুবক হাসপাতালে প্রবেশ করে চিকিৎসকদের অস্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ সহ দেখে নেবার হুমকী প্রদান করে।
এ সময় রাসেল বিল্লাহ্ চিৎকার করে বলতে থাকেন আমি মাশরাফির লোক,এটা আমার মান-সম্মানের ব্যাপার।
শিশুটি ধর্ষিত হয়েছে এমন প্রতিবেদন দিতে হবে,নইলে দেখে নেবার হুমকী দেন,পরে তিনি কয়েকজন ছেলে নিয়ে শহরে মানববন্ধন করেন।
মানববন্ধনে চিকিৎসকদের সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য প্রদানসহ মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ধর্ষণের আলামত বিক্রি করার অভিযোগ করেন,এতে চিকিৎসকদের সম্মানহানি হয়েছে।
এর প্রতিবাদে গত মঙ্গলবার দুপুরে চিকিৎসকরা নড়াইল প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করেন।
সম্মেলনে হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার মো.মশিউর রহমান,প্যাথলজি চিকিৎসক সুজল বকসী,গাইনী চিকিৎসক সুব্রত বাগচী,শিশু বিশেষজ্ঞ আলীমুজ্জামান,চিকিৎসক কেয়া,হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ্য সেবিকা অনিমা দাসসহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সম্মেলনে মো.মশিউর রহমান বলেন,অর্থের বিনিময়ে একটি শিশুর ধর্ষণ আলামত বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে ! এমন অভিযোগে শহরে মানববন্ধন করে চিকিৎসকদের মানুষের কাছে হেয় প্রতিপন্ন করবে এটা আমরা আশা করিনি,এর তীব্র নিন্দা করেন।
তিনি বলেন,ধর্ষণ ঘটনা পরীক্ষা-নীরীক্ষা করতে হলে তিন সদস্যের একটি মেডিকেল টিম গঠন করতে হয়। কমিটির সভাপতি থাকেন শারীরীক পরীক্ষাকারী একজন নারী চিকিৎসক,রেডিওলজিষ্ট প্যাথলজি,গাইনী তিনটি বিভাগের রিপোর্ট পেয়ে নারীচিকিৎসক আবাসিক মেডিকেল অফিসারের কাছে প্রতিবেদন জমা দেন।
তিনি বলেন, ৪ বছরের শিশুকে ধর্ষণ করা হলে তার কি অবস্থা হয় আপনারাই ভাবুন,শিশুটির শরীরের এমন কোনো আলামত পাওয়া যায়নি,অথচ রাসেল বিল্লাহ্ নামে এক যুবক নিজেকে সাংসদ মাশরাফি বিন মর্তুজার হাতে গড়া স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে হাসপাতালের ভেতরে ঢুকে চিকিৎসকদের কটুক্তি করেন।
তিনি নিজেকে টিম তারুণ্য স্বেচ্ছাসেবি সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা দাবি করেন।
চিকিৎসকদের ভয় ভীতি দেখিয়ে শিশুটি ধর্ষিত হয়েছে এমন স্বীকারোক্তি রেকর্ড করার চেষ্টা করেন।
এ সময় তার সঙ্গে ২/৩ জন সাংবাদিকও উপস্থিত ছিলেন বলেও জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত চিকিৎসক সুব্রত নাগ বলেন,আমি ওই দিন জরুরী বিভাগে কর্মরত ছিলাম,রাসেল বিল্লাহসহ কয়েকজন য


বিজ্ঞাপন