গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ সমীচীন নয়: তথ্যমন্ত্রী

জাতীয় রাজধানী

নিজস্ব প্রতিবেদক : পুঁজি বিনিয়োগ করে গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা কোনোভাবেই সমীচীন নয় বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।


বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, গণমাধ্যমে অবশ্যই যে কেউ বিনিয়োগ করতে পারেন। বিনিয়োগ করে যেকোনো গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠা করতে পারেন। এটা কোনো অপরাধ নয়। কিন্তু পুঁজি যখন সেই গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করতে চাইবে, সেটি কোনোভাবেই সমীচীন নয়। এক্ষেত্রে সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।

বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি আয়োজিত ‘বাংলাদেশে সাংবাদিকতার সঙ্কট ও সম্ভাবনা: বর্তমান প্রেক্ষিত’ শীর্ষক এক স্মারক বক্তৃতায় ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

ডিআরইউর সাবেক সভাপতি, রজতজয়ন্তী উদযাপন কমিটির চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ জার্নালের সম্পাদক শাহজাহান সরদারের সভাপতিত্বে স্মারক বক্তৃতায় প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

স্মারক বক্তৃতায় বিএফইউজের সাবেক সভাপতি ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন, বিএফইউজে ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ.আ.ম.স. আরেফিন সিদ্দিক, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ ও জাতীয় প্রেসক্লাব সভাপতি সাইফুল আলম।

এছাড়া বাংলাভিশনের হেড অব নিউজ ড. আবদুল হাই সিদ্দিক ও ডিআরইউর সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ প্রমুখ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

স্মারক বক্তৃতায় ব্যাংকের উদাহরণ দিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে যারা ব্যাংকের পরিচালক, তারা পুঁজি বিনিয়োগ করেন। ব্যাংকের পরিচালক কিন্তু সেই ব্যাংক থেকে কোনো লোন নিতে পারেন না। সেই ব্যাংকের পরিচালনায় পাঁচ বছর পর পর পরিবর্তন আনতে হয়। সুতরাং সংবাদ মাধ্যমেও যে কেউ বিনিয়োগ করতে পারেন। পুঁজি বিনিয়োগের মাধ্যমে সংবাদপত্র তৈরি হওয়া ভালো। সংবাদমাধ্যম বা গণমাধ্যম বিকশিত হওয়ার জন্যও ভালো। কিন্তু সেটি যখন গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করতে চাইবে তা কোনোভাবেই সহায়ক নয়। এই ক্ষেত্রে কী করা প্রয়োজন তা ভেবেচিন্তে আমাদের অগ্রসর হওয়া দরকার।

বর্তমান সরকারের আমলে গণমাধ্যমের বিকাশ সবচেয়ে বেশি হয়েছে দাবি করে আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা যখন ২০০৯ সালে সরকার গঠন করি, তখন দেশে দৈনিক পত্রিকার সংখ্যা ছিল সাড়ে চারশ। এখন তা সাড়ে বারোশতে উন্নীত হয়েছে। টেলিভিশনের সংখ্যা ছিল ১০টি। এখন ৩৪টি। আরো ৪৫টির লাইসেন্স দেয়া হয়েছে। ২২টির বেশি রেডিওর লাইসেন্স দেয়া আছে। তখন হাতে গোনা কয়েকটি অনলাইন ছিল। এখন কয়েক হাজার অনলাইন প্রচারে আছে। বাংলাদেশে প্রাইভেট টেলিভিশনের যাত্রা শুরু হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরেই।

হাছান মাহমুদ বলেন, আমাদের দেশে দেখা যায় অনেক দৈনিক পত্রিকা নিয়মিত বের হয় না। হঠাৎ হঠাৎ বের হয়। বা যেদিন বিজ্ঞাপন পায় সেদিন বের হয়। এসব প্রত্রিকা আসলে গণমাধ্যমের সুষ্ঠু বিকাশে কতটুকু সহায়ক তা নিয়ে প্রশ্ন আছে।

তিনি বলেন, আমি মনে করি এগুলো নিয়ে একটা শৃঙ্খলা প্রয়োজন। কলকাতার দিকে যদি তাকান সেখানে ১০-১৫টি প্রত্রিকা বের হয়। আমরা তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে একটি নীতিগত সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি। যেগুলো নিয়মিত বের হয় না, পত্রিকার ডিক্লারেশন নেয়ার সময় কিন্তু নিয়মিত প্রচারের কথা বলা থাকে, সেই অনুযায়ী সেই পত্রিকাগুলোর ডিক্লারেশন বাতিলযোগ্য।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, সেখানে যে প্রচার সংখ্যা দেখানো হয় তা অনেক পত্রিকার ক্ষেত্রে সঠিক; আবার অনেকগুলোর ক্ষেত্রে বাস্তবতার সঙ্গে মিল নেই। এ ক্ষেত্রে একটি বাস্তবতার নিরিখে প্রচার সংখ্যা যাতে হয় তা নিয়েও আমরা কাজ করছি।