ধন্যবাদ প্রধানমন্ত্রীকে

অন্যান্য বিবিধ

ব্যারিস্টার শামিম হায়দার পাটয়ারি : করোনা পরিস্থিতি নিয়ে আমার কিছু চিন্তা ভাবনা এখানে তুলে ধরলাম। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ তিনি কৃষিতে অত্যন্ত ভালো প্রনোদনা দিয়েছেন। সামনে আমাদের যে অর্থনৈতিক মন্দা আসছে সেখানে একমাত্র কৃষিই কিছুটা চাপ কমাতে পারবে।


বিজ্ঞাপন

১) কৃষিতে প্রনোদনা দেয়া উচিত। কৃষিপন্যের বাজার ব্যবস্থাপনা সুনিশ্চিত করা উচিত। প্রয়োজনে সরকার কৃষি পন্য বা সবজিগুলো কৃষকদের কাছ থেকে কিনে নিবে।এগুলি সেচ্ছাসেবী দলে ভাগ করে দিবে যারা এসব পন্য গরীব মানুষের মাঝে বিতরণ করে দিবে।কৃষকদের হাতটা যেন সচল থাকে কারণ কৃষি কাজের মধ্যেমে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিটা একটু কম যেহেতু এখানে দুরত্ব বজায় রেখে কাজ করা যায়।

২)ক্ষুদ্র ও এসএমই তে প্রনোদনার সবচেয়ে বড় অংশটি দেয়া উচিত। আমাদের ৭৮ লক্ষ এসএমই উদ্দ্যোক্তা আছে যাদের অধীনে প্রায় ৩ কোটি লোক কাজ করে।এই ৭৮ লক্ষের মধ্যে যদি ৫০ লক্ষ করোনার পরে থাকে তাহলে হয়তো আমরা এই অর্থনৈতিক মন্দা ভাবটা কাটিয়ে উঠতে পারবো।

৩) ডাক্তার, নার্স,স্বাস্থ্যকর্মী,ইন্টানী ডাক্তার, মেডিকেল প্রযুক্তিবিদ,মেডিকেল স্টুডেন্ট, নার্স স্টুডেন্ট সবাইকে নিয়ে বৃহদায়তনে মেডিক্যাল টিম গঠন করে ফেলতে হবে। সকল সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে এর অন্তর্ভুক্ত করে ফেলতে হবে।

৪) প্রাইভেট হাসপাতালগুলিকে প্রনোদনার মাধ্যমে তাদের ভাড়া ও অন্যান্য সহযোগিতা দিয়ে স্বাস্থ্যসেবার কার্যক্রমের আওতাভুক্ত করে ৩ মাসের জন্য সরকারের অন্তর্ভুক্ত করে ফেলতে হবে।প্রাইভেট মেডিক্যাল গুলির ইনকিউবেটর,অক্সিজেন সিস্টেম, আইসিইউ, সিসিইউ এগুলিকে এর আওতাভুক্ত করতে হবে।তাহলে সমবেত হারে আমাদের আইসিইউর সংখ্যা বাড়বে তখন সামনে আমাদের করোনা রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেলেও সেটা আমরা কিছুটা সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে পারবো।

৫) প্রনোদনার মাধ্যমে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে সহযোগিতা করতে হবে কারন তারাও বিরাট ঝুঁকির মধ্যে আছে।বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদেরকে বিনা সুদে লোন দেয়া উচিত জেনো তারা তাদের টিউশন ফি দিতে পারে।

৬) প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া বিশেষ করে পত্রিকাগুলি এখন প্রায় বন্ধের পথে।এদেরকে এখন অবশ্যই প্রনোদনা দেয়া প্রয়োজন।

৭) ব্যাংক আরও সীমিত পরিসরে পরিচালনা করা প্রয়োজন। প্রয়োজনে অনলাইন ব্যাংকিং সেবা বাড়িয়ে দিতে হবে।

৮) আমি মনে করি এই মুহুর্তে সরকারি ও বেসরকারী ডাক্তারদেরকে উৎসাহিত করা সবচেয়ে বড় প্রয়োজন। তাদেরকে প্রনোদনা দেয়া, পিপিই দেয়া,তাদেরকে অনুপ্রাণিত করা। ডাক্তার, নার্স সহ সকল মেডিকেল টিম যদি মোটিভেটেড না থাকে তাহলে ভবিষ্যতে চিকিৎসা ব্যাবস্থা ভেংগে পড়তে পারে।তাই আমাদের সম্মুখভাগের যোদ্ধাদের অবশ্যই উৎসাহিত রাখতে হবে।

৯) স্বল্প পরিসরে কোর্ট খোলা রাখতে হবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় যখন লন্ডনে বোমা পড়লো তখন Winston Churchill জিজ্ঞেস করেছিলেন আজকে পত্রিকা বের হয়েছে কি না এবং কোর্ট বসেছে কি না। যখন তিনি জানলেন এই দুটোই ঠিকমতো চলছে তখন তিনি আশ্বস্ত হলেন। আমাদের কে সীমিত পরিসরে আদালতের কার্যক্রম অনলাইনের ভিত্তিতে করা উচিত। অল্প অল্প করে আদালতের কার্যক্রম করলে মানুষ ন্যায়বিচারের আস্থা পাবে নয়তো law and order পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে।

১০) সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ত্রাণ বিতরণ। আমরা এখনো যখনই লক ডাউন করতে যাচ্ছি মানুষকে ঘরে থাকতে বলছি তখন সবাই যে কথাটি বলছে আমরা খাবো কি?? এই দেশে ৩ থেকে ৫ কোটি লোক প্রাত্যহিক কাজে নিয়োজিত মানে দিন আনে দিন খায়। চায়ের দোকানদার,হোটেল ও রেস্টুরেন্টের কর্মচারী, রিক্সাওয়ালা , ভ্যানওয়ালা,গার্মেন্টস শ্রমিক,কৃষক এই যে প্রতিদিনের ভিত্তিতে কাজ করে এই লোকগুলোকে অবশ্যই আমরা এখন ত্রাণের আওতাভুক্ত করতে হবে।আমাদের এখন তালিকাভুক্ত করার মতো সময় নেই।সরাসরি ত্রাণের ট্রাক নিয়ে গিয়ে বাংলাদেশের প্রতিটি ওয়ার্ডে গিয়ে সেখানে যতোজনের প্রয়োজন প্রত্যেককে চাল দিয়ে ১০ দিন পর পর নির্দিষ্ট দিনে নির্দিষ্ট সময়ে প্রতি ওয়ার্ডে সরকারের সুব্যাবস্থাপনায় চাউলের গাড়ি আসে তাহলে মানুষ আস্বস্ত হবে এবং ঘরে থাকবে।বৃহদায়তনে ত্রাণ ছাড়া তালিকাভুক্ত ত্রাণ বিতরণে এখন কোন সমাধান হবে না।

১১) পাশাপাশি এমপিদের যে TR, কাবিখা,সোলার বরাদ্দ আছে সেটিকে যদি এমপিদেরকে সুযোগ দেওয়া হয় করোনা প্রতিরোধে খাদ্য সরবরাহর আমরা এটিকে খাদ্যে পরিবর্তিত করে মানুষদেরকে দিতে পারি।এটিও একটি বিকল্প ব্যাবস্থা হিসেবে আসতে পারে।