আটা ময়দা ও বিষাক্ত কেমিক্যালে তৈরি হচ্ছে নামিদামি ওষুধ, কালুরঘাটে ফ্ল্যাট বাসায় ফ্যাক্টরি

অপরাধ এইমাত্র সারাদেশ স্বাস্থ্য

আজকের দেশ রিপোর্ট : চট্রগ্রাম নগরীতে একটি সংঘবদ্ধ চক্র দীর্ঘদিন যাবৎ বিভিন্ন নামিদামি কোম্পানির ওষুধের নাম ব্যবহার করে ভেজাল ওষুধ তৈরি করে বেশি দামে বাজারজাত করে আসছে। এমনকি তারা নিজস্ব কেমিস্ট নিয়োগ করে ও ওষুধ তৈরির বিভিন্ন নিম্নমানের ক্যামিকেল দিয়ে ওষুধ তৈরি করে তা ফার্মেসিতে সরবরাহ করছে। গতকাল শুক্রবার সকালে নগরীর চান্দগাঁও থানার মোহরার পুরাতন কালুরঘাট এলাকায় বেলালের বিল্ডিংয়ের একটি ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে মোহাম্মদ হোসেন নামের এক প্রতারককে আটক করে ডিবির (উত্তর) একটি টিম। সেখান থেকে বিভিন্ন সরঞ্জামের পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ নকল ওষুধ জব্দ করা হয়। প্রতারক মোহাম্মদ হোসেন চাঁদপুর সদরের আব্দুর রশিদের ছেলে। এ ঘটনায় তার সহযোগী রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়া এলাকার মো. আজিজুল হকের ছেলে মোহাম্মদ মাহমুদুল হক (৪৫) পলাতক রয়েছে।
গোয়েন্দা উত্তর বিভাগের উপকমিশনার আলী হোসেন বলেন, প্রতারক মোহাম্মদ হোসেন সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে ইউনানী ওষুধ প্রস্তুত করার জন্য অনুমতির আবেদন করেছিলেন। কিন্তু কোনো অনুমতি এখনো তিনি পাননি। এরই মধ্যে বাসা ভাড়া নিয়ে রীতিমতো ওষুধের ফ্যাক্টরি খুলে বসেছেন। তার ফ্যাক্টরিতে শযড় গধী, গধী ষরভব, বীপরঃবসবহঃ, সড়হভবফরহ, যড়সব পধভ, শ-ীরহ, মৎড়ংং-ঁঢ়, কত নরড় নধৎ প্রভৃতি ওষুধ উৎপাদন হতো। তিনি আরো বলেন, সবুজ রঙের একটি ট্যাবলেট এসব নামে মোড়ক করে তারা বাজারজাত করতো। আর ওই ট্যাবলেট মূলত আটা ময়দা ও বিষাক্ত কেমিক্যাল দিয়ে তৈরি করা। এই ওষুধ মানব শরীরে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে।
এক প্রশ্নের জবাবে ডিসি আলী হোসেন জানান, নগরীর একেবারে পূর্ব প্রান্তে নিরিবিলি গ্রাম্য পরিবেশে জনৈক বেলালের ভাড়া করা ফ্ল্যাটে মোহাম্মদ হোসেন নকল ওষুধ তৈরির কারখানা স্থাপন করে। তবে সেখানে কী হচ্ছিল তা স্থানীয় বাসিন্দারা কখনো টের পেতেন না। সব সময় দরজা বন্ধ করেই এই ধরনের নকল ওষুধ তৈরি করতো। একই ধরনের ওষুধ ভিন্ন ভিন্ন নামে বাজারজাতও করে আসছে সে। যার ফলে রোগীর সুস্থতার বদলে অসুস্থ হওয়ার পাশাপাশি মৃত্যুর মুখোমুখি হওয়ার কথা এসব নকল ওষুধ খেয়ে। এই চক্রটি তিন বছরেরও বেশি সময় এই প্রতারণা করে আসছে। পুলিশ যে ওষুধ জব্দ করেছে প্রতারক চক্রের কাছে তার বাজার প্রায় পঁচিশ থেকে ত্রিশ লাখ টাকা।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ যৌন উত্তেজক ওষুধের চাহিদা বেশি থাকায় তারা বিদেশি বিভিন্ন ওষুধের নাম ব্যবহার করে অধিক দামে তাদের পরিচিত ফার্মেসিতে বিক্রি করে আসছে। অভিযানের সময় তিনি বৈধ কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। আটককৃত ব্যক্তির বিরুদ্ধে চান্দগাঁও থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।


বিজ্ঞাপন

স্থানীয় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের ছত্রছায়ায় এসব অন-অনুমোদিত ক্ষতিকর ও ভেজাল যৌন উত্তেজক ঔষধ সামগ্রীর উতপাদন ও বাজারজাত করে আসছিল। এর মধ্যে প্রগ্রেসিভ ল্যাবরেটরিজ ইউনানির মালিক হেলাল দীর্ঘদিন যাবত অবৈধ ও ভেজাল ঔষধ সামগ্রীর উতপাদন ও বাজারজাত করলেও ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অদ্যাবধি প্রগ্রেসিভ ল্যাবরেটরিজ ইউনানির বিরুদ্ধে কোন প্রকার ব্যাবস্থা নিচ্ছে না। এ বিষয়ে চট্টগ্রামের ঔষধ তত্তাবধায়কের বক্তব্য জানতে তার মোবাইলে কল করলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে তাতক্ষনিক মোবাইল কেটে দেন পরে তাকে আবারও মোবাইলে কল করলে তিনি রং নাম্বার বলে মোবাইল কেটে দেন। আগামীতে আজকের দেশে চট্টগ্রামের নকল ভেজাল ও নিম্নমানের ঔষধ সামগ্রীর উতপাদন ও বাজারজাতের বিরুদ্ধে রিপোর্ট প্রকাশিত হবে এ বিষয়ে অত্র নিউজ পোর্টাল এর সাংবাদিকরা তাদের তদন্ত অব্যাহত রেখেছে।