করোনায় আক্রান্ত ১৮ হাজার ৫৮৯

অপরাধ জাতীয় জীবন-যাপন সারাদেশ স্বাস্থ্য

মারা গেছেন ৮০ জন পুলিশ


বিজ্ঞাপন

 

বিশেষ প্রতিনিধি : দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে পুলিশের ৮০ সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। তবে শুরুতে সম্মুখ যোদ্ধা হিসেবে পুলিশ সদস্যরা যেভাবে আক্রান্ত হয়েছেন ও করোনায় মারা গেছেন, সে হার এখন অনেক কম। শনিবার পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৮ হাজার ৫৮৯ জন পুলিশ সদস্য। পুলিশ সদর দফতরের পক্ষ থেকে সময়োপযোগী পদক্ষেপ ও সুরক্ষা নিশ্চিত করার কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
পুলিশ সদর দফতর থেকে পাওয়া তথ্যে জানা যায়, করোনা মহামারির সময়ে শুরুতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি করোনায় দেশের মানুষকে সেবা দিতে গিয়ে পুলিশ সদস্যরা ব্যাপকভাবে আক্রান্ত হন। রুটিন দায়িত্বের বাইরে গিয়েও পুলিশ সদস্যরা চেষ্টা করেছে জনগণের কাছে সেবা পৌঁছে দিতে। এতে পুলিশের কনস্টেবল থেকে পুলিশ সুপার পদমর্যাদার কর্মকর্তারাও মারা গেছেন।

পুলিশ সদর দফতরের জনসংযোগ বিভাগের এআইজি মো. সোহেল রানা বলেন, যখন কোনও সুরক্ষা সামগ্রী ছিল না, প্রস্তুতি ছিল না, তখন পুলিশ সদস্যরা মানুষকে সেবা দিয়ে গেছেন। দায়িত্ব এবং কর্তব্য থেকে তারা সরে দাঁড়াননি। করোনায় আক্রান্ত রোগীদের হাসপাতালে নিয়ে গেছে পুলিশ। এমনকি মৃত করোনা রোগীর লাশ দাফনেও যখন স্বজনরা এগিয়ে আসেননি, তখন পুলিশ সদস্যরা দাফন-কাফন ও জানাজার ব্যবস্থা করেছেন। মুসলিম ধর্মের বাইরে অন্য ধর্মের ক্ষেত্রে লাশের সৎকারের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করেছেন। রিলিফ বিতরণের কাজ করেছেন। যে কারণে করোনার শুরুতে পুলিশের অনেক সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।

এসব কার্যক্রম চালাতে গিয়ে করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে ৮০ জন পুলিশ সদস্য মারা গেছেন। সর্বমোট আক্রান্ত হয়েছেন ১৮ হাজার ৫৮৯ জন। এর মধ্যে র‌্যাব সদস্য আছেন ২ হাজার ৪৬০ জন। আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১৮ হাজার ১০৩ জন। সুস্থ হয়ে তারা ইতোমধ্যে কাজেও ফিরেছেন।

করোনা দুর্যোগের প্রথম দিকে কিছু সমস্যা হয়েছে জানিয়ে এআইজি মো. সোহেল রানা বলেন, আইজিপির নির্দেশনায় সারাদেশে দ্রুততম সময়ে দুই লাখ পুলিশ সদস্যের জন্য সুরক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাদের মধ্যে মাস্ক, গ্লাভস, পিপিই, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ওষুধ সামগ্রী বিতরণ করা হয়। পুলিশ সদস্যদের মনোবল ঠিক রাখার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক তদারকি করেন। পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসার জন্য রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালকে কোভিড হাসপাতালে রূপান্তর করা হয়। ২৫০ বেডের এই হাসপাতালকে ৫০০ বেডে উন্নীত করা হয়। এছাড়া পাশের একটি ব্যারাক খালি করে সেখানে আরও ২৫০ বেড বসিয়ে এই হাসপাতালের সক্ষমতা বাড়ানো হয়। এর বাইরেও ২৫০ বেডের আরও একটি বেসরকারি হাসপাতাল ভাড়া করা হয় পুলিশ সদস্যদের উন্নত চিকিৎসার জন্য। সারাদেশে পুলিশ সদস্যদের সুচিকিৎসার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।