বঙ্গবন্ধুর নামে জাতিসংঘে পুরস্কার প্রবর্তন

আন্তর্জাতিক এইমাত্র জাতীয়

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিজয়ের মাসে নতুন সুখবর দিয়েছে জাতিসংঘের অঙ্গ সংগঠন ইউনেস্কো। বঙ্গবন্ধুর নামে ‘ইউনেস্কো-বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইন্টারন্যাশনাল প্রাইজ ইন দি ফিল্ড অফ ক্রিয়েটিভ ইকোনমি’ পুরস্কার প্রবর্তন করছে সংস্থাটি। এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ইউনেস্কো এ ধরনের ২৩টি পুরস্কার চালু করেছে। এই প্রথম ইউনেস্কো বাংলাদেশের কোনও প্রথিতযশা সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তির নামে আন্তর্জাতিক পুরস্কার চালু করলো।’


বিজ্ঞাপন

আগামী ছয় বছর ধরে প্রতি দুই বছর পরপর ৫০ হাজার ডলার সমমানের এই পুরস্কার দেওয়া হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এরপর আবার জাতিসংঘের নিয়ম অনুযায়ী পুরস্কারটি নবায়ন করতে হবে। পুরস্কারটি প্রথমবারের মতো আগামী ২০২১ সালের নভেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য ইউনেস্কোর ৪১তম সাধারণ সভা চলাকালে প্রদান করা হবে।’

গত বছর পুরস্কার প্রবর্তনের জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে একটি প্রস্তাব অনুমোদিত হয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘গত আগস্ট ২০১৯ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সদয় অনুমোদন গ্রহণের পর প্যারিসের বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও ইউনেস্কোতে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধির মাধ্যমে ইউনেস্কো মহাপরিচালক বরাবর আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পাঠিয়েছিলাম আমরা।’

তিনি বলেন, ‘ইউনেস্কোর অধিক্ষেত্র যেমন– শিক্ষা, সংস্কৃতি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, বাকস্বাধীনতা প্রভৃতি ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুর অবদান ও বাংলাদেশ সরকারের ইউনেস্কোর প্রতি অঙ্গীকারের কথা বিবেচনায় নিয়ে ইউনেস্কো বঙ্গবন্ধুর নামে পুরস্কার প্রবর্তনে সম্মতি প্রদান করে। ইউনেস্কো সচিবালয়ে গত ২-১১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত ৫৮ সদস্য বিশিষ্ট ইউনেস্কো নির্বাহী পরিষদের ২১০তম অধিবেশনের প্রথম পর্বে এ প্রস্তাবটি বিবেচনার জন্য ইউনেস্কো সচিবালয় উত্থাপন করে। ১১ ডিসেম্বর নির্বাহী পরিষদের প্লেনারি সেশনে সর্বসম্মতিক্রমে এ প্রস্তাব গৃহীত হয়।’

কে পুরস্কার পাবে তা পাঁচ সদস্যের জুরি নির্ধারণ করবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘পুরস্কার প্রদানের ক্ষেত্রে সমাজের অনগ্রসর নারী, অভিবাসী ও প্রবাসী জনগোষ্ঠীর সৃজনশীল অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে প্রাধান্য দেওয়া হবে।’

উল্লেখ্য, গত বছর ইউনেস্কোর ৪০তম সাধারণ সভায় বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন ‘শতবার্ষিকী কর্মসূচি তালিকা’য় অন্তর্ভুক্ত করে সংস্থাটি। মুজিববর্ষে এ পুরস্কার প্রবর্তনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনে ইউনেস্কো সরাসরিভাবে সম্পৃক্ত হলো। এর আগে, ইউনেস্কো ২০১৭ সালে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড আন্তর্জাতিক রেজিস্টারে অন্তর্ভুক্ত করে। এর আগে ১৯৯৯ সালে ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করার মাধ্যমেও ইউনেস্কো বাংলাদেশকে সম্মানিত করে।

এছাড়া ষাটগম্বুজ মসজিদ, পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার এবং সুন্দরবনকে বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে এবং বাউল গান, জামদানি, মঙ্গল শোভাযাত্রা ও শীতল পাটিকে বিশ্ব অপরিমেয় ঐতিহ্য হিসেবে ঘোষণা করার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশকে সুপরিচিত করেছে।