ইয়াবা পাচারের কথা জেনে যাওয়ায় মেজর সিনহা হত্যা

অপরাধ আইন ও আদালত

নিজস্ব প্রতিবেদক : কক্সবাজারের টেকনাফে পুলিশ চেকপোস্টে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ হত্যাকাণ্ড পূর্ব পরিকল্পিত। টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ এ হত‌্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী বলে জানিয়েছে র‌্যাব। রোববার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন র‌্যাবের লিগ‌্যাল অ্যান্ড মিডিয়া পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ।


বিজ্ঞাপন

সংবাদ সম্মেলনে আশিক বিল্লাহ বলেন, ‘ইয়াবা পাচারের বিষয়ে ওসি প্রদীপের বক্তব‌্য নিতে যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা। এ সময় তাকে হুমকি দেয়া হয়। ইয়াবা পাচারের ওসি প্রদীপের সংশ্লিষ্টার প্রমাণ তার কাছে ছিলো। এ কারণে তাকে পরিকল্পিতভাবে হত‌্যা করা হয়।’ রোববার (১৩ ডিসেম্বর) অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার চার্জশিট দাখিল করে র‍্যাব। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ১২ জন দোষ স্বীকার করে আদালতের অনুকম্পা চেয়ে জবানবন্দী দিয়েছেন বলেও জানায় র‍্যাব। প্রদীপসহ ১৫ জনকে হত্যা মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে। আসামিদের ১৪ জনই গ্রেপ্তার আছে। একমাত্র পলাতক আসামি এএসআই সাগর।

সিনহা সামান্য ক’দিনেই প্রদীপের ত্রাসের রাজত্বের সন্ধান পেলেও আইন শৃঙ্খলাবাহিনী কেন তা জানতো না; এটা ব্যর্থতা কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে র‍্যাবের দাবি, আইন শৃঙ্খলাবাহিনী ব্যর্থ সেটা তারা মনে করেন না।

গত ৩১ জুলাই টেকনাফে মেরিন ড্রাইভ সড়কে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। দেশ-বিদেশে আলোড়ন সৃষ্টি করা এই ঘটনায় তার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বাদী হয়ে টেকনাফের বিচারিক হাকিম আদালতে মামলা করেন। টেকনাফের বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলী, টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিতসহ মোট নয় পুলিশ সদস্যকে এই মামলায় আসামি করা হয়। বিচারক তামান্না ফারাহ মামলাটি আমলে নিয়ে টেকনাফ থানাকে অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন। মামলার তদন্তভার দেয়া হয় র‌্যাবকে।

আদালতের নির্দেশে সিনহার বোনের করা মামলার তদন্ত করে র‌্যাব। এছাড়া এই ঘটনার তদন্তে গত ১ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে প্রধান করে গঠিত ওই কমিটি এরই মধ্যে তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। ওসি প্রদীপ, পরিদর্শক লিয়াকতসহ ৬৮ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। প্রশাসনিক ওই তদন্তে কক্সবাজারে চেকপোস্টে পুলিশের ভূমিকা অপেশাদার ও হটকারী বলে মন্তব্য করা হয়। ভবিষ্যতে এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে বেশকিছু সুপারিশ করেন তারা। প্রশাসনিক ওই তদন্তের পর এখন ফৌজদারি অপরাধের ঘটনায় চার্জশিট দাখিল হলো।