মেধা ও যোগ্যতা

অন্যান্য বিবিধ

মোস্তাফিজুর রহমান : কিছু মানুষ মেধাবৃত্তিতে অসাধারণ প্রতিভার অধিকারী হয়ে থাকে। আবার কেউবা কম মেধাবী হয়েও নিজকে খুব যোগ্য হিসেবে গড়ে তুলে। দুইজনই আমজনতার বিচার ও এসেসমেন্টে সুপার ট্যালেন্টেড হিসেবেই বিবেচিত এবং প্রসংশিত। দু’জনই যদি সর্বসাধারণের বিচারে অসাধারণ হিসেবে বিবেচিত হয়, তাহলে উভয়ে কেন কর্মক্ষেত্রে সমান অবদান রাখতে পারেনা! এটা খুবই ভাবার বিষয়।


বিজ্ঞাপন

মেধা এবং যোগ্যতা দুটিই ভালনারেবল একটা বিষয়।
মেধা হচ্ছে :
খুব কঠিন কোন বিষয়কে খুব সহজে ও স্বল্প সময়ে আয়ত্তে আনা বা পুরানো কোন বিষয়ের তথ্য ইন্সট্যান্টলি রিমাইন্ড করার প্রতিভা অর্জন করা মাত্র।

যোগ্যতা হচ্ছে :
পরিবেশ ও পরিস্থিতির প্রয়োজনানুসারে সঠিক ও উপযোগী কোন সিদ্ধান্ত গ্রহন করে ক্ষেত্রের উন্নয়ন সাধন ও তরান্বিত করা এবং উদ্দুদ্ধ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের পথ বেছে বের করা।
মেধাবী মানুষগুলো নিজের জন্যও বেশীরভাগ ক্ষেত্রে হুমকি হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে, যতক্ষণ না সে পরিস্থিতি অনুধাবন করার যোগ্যতা অর্জন করে। শুধুমাত্র মেধাবৃত্তির কদর দিয়ে ভাগ্যকে সুপ্রসন্ন করা সম্ভব নয় কিন্তু মেধা প্রখর হলে নিজকে যোগ্য করে গড়ে তুলতে কালক্ষেপণ কম হয়।

আপনার সন্তান কি মেধাবী না যোগ্য?

এমন প্রশ্নের জবাবে অনেকেই বলে থাকেন আমার সন্তান প্রচন্ড মেধাবী মাশাল্লাহ। মেধা অনেকটা বিধাতার দান বলেই আমরা বিশ্বাস করি কিন্তু মেধাকে প্রস্ফুটিত করার পূর্বশর্ত হলো যোগ্যতা অর্জনের জন্য মেধাকে কাজে লাগানো। মেধা বিধাতার দান হলেও যোগ্যতা অর্জনের অক্ষমতার ক্ষেত্রে স্রষ্টার এমন কোন ডিসক্রিমিনেটিভ ইন্ডিকেশন কারো প্রতি নেই। যোগ্যতা অর্জন করার অভিপ্রায় ব্যক্তির সদিচ্ছার উপর নির্ভর করে বিধায় চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতির সাথে নিজকে মানিয়ে নিতে এবং অবস্থান সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে যোগ্যতা অর্জনের কোন বিকল্প নেই।কিছুক্ষেত্রে মেধাবীদের ভাগ্য আর্থিকভাবে সুপ্রসন্ন হলেও সকল পরিবেশে নিজকে খাপ খাওয়াতে পারেনা শুধুমাত্র যোগ্যতার অভাবে।

সুতরাং আপনার সন্তানকে শুধুমাত্র মেধাবৃত্তির ট্রেডিশনে নির্ভরশীল না করে যোগ্য হিসেবে গড়ে তুলুন, যোগ্যদের অধিক মেধার আশীর্বাদ থাকলে যে কোন ক্ষেত্রে অর্জনের সঠিক স্বাক্ষর রাখতে সহজতর হয়। আমি মেধাবী সন্তানের অভিভাবক না হয়ে যোগ্য সন্তানের অভিভাবক হতে চাই। কারণ শয়তানও প্রচন্ড মেধাবী ছিলো কিন্তু পরিস্থিতির অনুধাবনে শয়তানকে মানুষ ঘৃনাভরে দেখে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি শিক্ষকই মেধাবী কিন্তু সকলেই সমান যোগ্যতার অধিকারী নয় বিধায় সার্বিক বিষয়ে আলোচিত হিসেবে আমরা লোকমুখে গুটি কয়েকের নামই শুনে থাকি।