স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভুয়া বিসিএস ক্যাডার পরিচয়দানকারী প্রতারক আটক

অপরাধ চট্টগ্রাম

নিজস্ব প্রতিনিধি : মর্জিনা আক্তার ০৩ সন্তানের জননী। তার স্বামী গত ০৮ মাস পূর্বে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে ইন্তেকাল করেন। কিছুদিন পূর্বে তার স্বামীর ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে মোজাম্মেল হক নামক এক ব্যাক্তি ফোন করে নিজেকে তার স্বামীর পরিচিত ও ২৫তম বিসিএস ক্যাডার (পুলিশ) বলে জানায়। তিনি ঐ দিন মোজাম্মেল হকের সাথে কথাবার্তার একপর্যায়ে তার বড় ছেলে শাহরিয়ার ফারুক আবির কে সরকারী মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয় ২০২১ইং সালে ভর্তির জন্য পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করিয়েছে, কিন্তু দুর্ভাগ্য বশতঃ লটারীতে আসে নাই বলে জানান। তার সাথে ২/৩ দিন কথা বলার একপর্যায়ে ছেলেকে মুসলিম স্কুলে ভর্তি করানোর জন্য কোন ব্যবস্থা করা যাবে কিনা জানতে চাইলে মোজাম্মেল হক ব্যবস্থা করা যাবে, তবে কিছু টাকা লাগবে বলে জানায়। তিনি ছেলেকে মুসলিম হাই স্কুলে ভর্তি করার জন্য টাকা নিয়া দর কষাকষি করে মোজাম্মেল হক এর কথা অনুযায়ী গত ২২/০১/২০২১ইং তারিখ দুপুর অনুমান ১২.৩০ ঘটিকার সময় কোতোয়ালী থানাধীন লালদিঘী জেলা পরিষদ মার্কেটস্থ ইউসিবি ব্যাংকের এটিএম বুথের সামনে রাস্তার উপর গেলে আসামী ‘‘বরাবর, প্রশাসক মহোদয়, কোর্ট হিল, চট্টগ্রাম। বিষয়ঃ- ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য আবেদন” তৈরী করিয়া উক্ত আবেদনের বাম পার্শ্বে জনাব মোহাম্মদ মুমিনুর রহমান, জেলা প্রশাসক, চট্টগ্রাম, ‘‘ ভর্তির জন্য অনুমতি করা হল’’ ২১/০১/২০২১ইং তারিখের স্বাক্ষরিত ও গোপনীয় শাখা, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, চট্টগ্রাম সীলযুক্ত আবেদনটি মর্জিনা আক্তার পক্ষে ছেলের নাম, ঠিকানা ও ভর্তির লটারীর আইডি সহ লিখিত আবেদনখানা তার নিকট উপস্থাপন করে জানায় যে, তার ছেলের স্কুলে ভর্তির ব্যবস্থা করেছে এবং ছেলের ভর্তি বাবদ নগদ ১৬,০০০/- (ষোল হাজার) টাকা গ্রহণ করে।একপর্যায়ে মর্জিনা আক্তার মোজাম্মেল হকের দেওয়া জেলা প্রশাসক, চট্টগ্রাম এর সুপারিশ ও স্বাক্ষরযুক্ত পত্রটি মুসলিম হাই স্কুল, চট্টগ্রামের প্রধান শিক্ষকের নিকট উপস্থাপন করলে মুসলিম হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক এ বিষয়ে কিছু জানেন না এবং জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কার্যালয়, চট্টগ্রামে গিয়া উক্ত আবেদনের বিষয়ে খোঁজখবর নিতে বলে। মোজাম্মেল হক এর দেওয়া আবেদন নিয়ে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কার্যালয়, চট্টগ্রামে উপস্থাপন করলে দায়িত্বরত লোকজন উক্ত আবেদন জাল বলে জানায়। মর্জিনা আক্তার মোজাম্মেল হক এর মোবাইল নম্বরে কল করলে সে মোবাইল বন্ধ করে দেয়। এ সংক্রান্তে মর্জিনা আক্তার বাদী হয়ে এজাহার দায়ের করলে দঃ বিঃ আইনে ১৭০/৪০৬/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১ ধারায় ০১টি মামলা রুজু হয়।


বিজ্ঞাপন

মামলার তদন্তকারী অফিসার এসআই/মোহাম্মদ আইয়ুব উদ্দিন মামলার তদন্তকালে একাধিক সোর্স নিয়োগ করে। একাধিক সোর্স নিয়োগ করে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মোজাম্মেল হককে সদরঘাট থানাধীন কামাল গেইট এলাকা থেকে ১৪/০২/২০২১ তারিখ রাত ০৮.৪৫ ঘটিকায় আটক করেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে সে উক্ত ঘটনার কথা স্বীকার করে।

উল্লেখ্য যে, ধৃত মোজাম্মেল হক (৪০) এর বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম এর বোয়ালখালী থানায় মামলা নং-১৯, তাং-১৬/০৮/০৮, ধারা-৪০৬/৪২০/৫০৬ দঃ বিঃ রুজু আছে।

প্রতারণার পদ্ধতি- সচিবের ভিজিটিং কার্ড এডিট করে সচিবের নাম পদবী ঠিক রেখে কার্ডের নিচে থাকা সচিবের মোবাইল নম্বর এবং ইমেইল আইডি মুছে ফেলে মোজাম্মেল হক নিজের মোবাইল নম্বর এবং ইমেইল আইডি প্রতিস্থাপন করে নিজেকে উপ-সচিব হিসেবে পরিচয় দিয়ে উক্ত ভিজিটিং কার্ড ব্যবহার করে বিভিন্ন ব্যক্তিকে চাকুরি দেওয়ার নামে প্রতারণা করে টাকা আত্মসাৎ করেন।