অভয়নগরে তিন বন্ধু মিলে হিজড়া আলমগীরকে যৌন নির্যাতন করে হত্যা : থানায় মামলা : আটক-১ 

অপরাধ সারাদেশ

অভয়নগর (যশোর) প্রতিনিধি : যশোরের অভয়নগরে তৃতীয় লীঙ্গের হিজড়া আলমগীরকে তারই তিন বন্ধু মিলে যৌন নির্যাতন ও পরে গাছে বেঁধে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত আটক সাগর মোল্যা সোমবার (৮ মার্চ) যশোরের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মাহাদী হাসানের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করেন। হত্যাকান্ডে ইয়াছিন ও আবুল কালামের জড়িত থাকার কথাও স্বীকার করেন তিনি।
আটক সাগর মোল্যা উপজেলার পাঁচকবর এলাকার স্বপন মোল্যার ছেলে। পলাতক ইয়াছিন ও আবুল কালাম উপজেলার ধোপদী গ্রামের ফকির বাগান এলাকার বাসিন্দা।
সাগর মোল্যার দেওয়া স্বীকারোক্তিতে হত্যাকান্ডের বর্ননা মোতাবেক নিহত আলমগীর হাওলাদার, ইয়াছিন, আবুল কালাম ও সাগর মোল্যা সহ মোট চার বন্ধু ছিলো। দীর্ঘদিন তারা একসঙ্গে ইয়াবা সেবন করে আসছেন। বিগত ২ মার্চ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ইয়াছিন ও আবুল কালাম মোবাইল ফোনে আলমগীরকে ইয়াবা নিয়ে ফকির বাগানে আসতে বলেন। রাতে চার বন্ধু ঐ বাগানে একসঙ্গে ইয়াবা সেবন করেন। এরপর ইয়াছিন ও আবুল কালাম আলমগীরের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করে। বিষয়টি আলমগীর জানিয়ে দেবে বলে হুমকি দেন। এই নিয়ে কথাকাটাকাটি শুরু হলে এক পর্যায়ে তারা তিনজন আলমগীরকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। তখনই বাগানের একটি গাছের সঙ্গে হাত-পা বেঁধে বিবস্ত্র অবস্থায় রেখে পালিয়ে যান।
উল্লেখ্য, গত ৩ মার্চ বুধবার সকালে উপজেলার ধোপাদী গ্রামের ফকিরবাগানে একটি দেবদারু গাছের সঙ্গে হাত-পা বাঁধা গলায় ফাঁস দেওয়া বিবস্ত্র অবস্থায় আলমগীর হাওলাদারের লাশ উদ্ধার করে অভয়নগর থানা পুলিশ। এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহতের মা আমেনা বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা অভয়নগর থানার এসআই গৌতম কুমার নিহত আলমগীরের মোবাইল ফোনের কললিস্ট দেখে সন্দেহভাজন সাগর মোল্যাকে আটক করেন। এরপর সাগরের জবানবন্দি মোতাবেক হত্যাকান্ডে তার আরও দুই বন্ধুর জড়িত থাকার বিষয়টি উঠে আসে। তবে ঐ দুই বন্ধু হত্যাকান্ডের পরই গা ঢাকা দিয়ে পলাতক রয়েছে। তাদেরকে ধরতে থানা পুলিশের অভিযান অব্যহত রয়েছে।
আলমগীর হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা অভয়নগর থানার এসআই গৌতম কুমার বলেন, আলমগীর হত্যাকান্ডের ঘটনায় মামলা করার পর মামলাটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমার কাছে তদন্ত দায়ভার অর্পণ করেন। এরপর বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিশ্চিত হই সাগর এ হত্যাকান্ডের ঘটনার সাথে জড়িত। এরপর প্রথমে সাগরকে আটক করা হয়। পরে তার স্বীকারোক্তিতে হত্যাকান্ডের সাথে তার আরো দুই বন্ধুর জড়িত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। তবে তারা এখনো পর্যন্ত পলাতক রয়েছে। পুলিশ তাদের ধরতে বিভিন্ন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে তিনি জানান।
অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ মনিরুজ্জামান জানান, হিজড়া আলমগীর হত্যায় তার মা বাদি হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। থানা পুলিশের অভিযানে আসামীদের একজনকে আটক করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। অপর ২জনকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।


বিজ্ঞাপন