চাপ বাড়ছে সদরঘাট-বাস টার্মিনালে

অর্থনীতি এইমাত্র জাতীয় জীবন-যাপন

শুরুতেই ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়
মহসীন আহেমদ স্বপন : শুরু হয়েছে ঈদের ট্রেন, বাস ও লঞ্চ যাত্রা। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বাস টার্মিনাল, রেল ষ্টেশন ও লঞ্চ ঘাটে ঈদে বাড়ি ফেরা মানুষের ঢল নেমেছে। তবে, রেলের শিডিউলে কিছুটা বিপর্যয় হলেও বাস বা লঞ্চের ক্ষেত্রে এখনো তেমনটা দেখা যায়নি।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় কমলাপুর থেকে ছেড়ে যাবার কথা নীলসাগর এক্সপ্রেসের। সে হিসেবে এই ট্রেনের যাত্রীরা ভোর থেকে স্টেশনে অপেক্ষায়। আর ঈদের ঝাক্কি ঝামেলা এড়াতে অনেকেই আরও আগে এসে প্লাটফর্মে অপেক্ষায় ছিলেন। কিন্তু ৮টার ট্রেন শেষে স্টেশন ছাড়ে সোয়া ১০ টায়।
ঈদ যাত্রার শুরু হতে না হতেই সঙ্গী হয়েছে এমন দেরি। তবু, বাড়ির টানে এসব দেরিকে তেমন আমলে নিচ্ছেন না কেউ। নাড়ির টানে গ্রামের পথে এবার প্রতিদিন ঢাকার দুই স্টেশন থেকে ট্রেনে পা রাখবেন অর্ধলাখ যাত্রী। এর মধ্যে ৩৩ টি আন্তনগর ট্রেনের ৩০ হাজার টিকিট রয়েছে। বাকিরা স্ট্যান্ডিং টিকিটে যাবেন।
কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার আমিনুল হক জানান, ঈদের ৩৭ টি আন্তঃনগর ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা হয়েছিল। এর মধ্যে উত্তর ও পশ্চিম বঙ্গের ১৬ টি ট্রেনের প্রতিদিন ১৪০৯৫ টি টিকিট ছিল।
ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে ৬টি ট্রেনের অগ্রিম টিকিট দেওয়া হয়েছে। ঢাকা নোয়াখালী রোডসহ সাতটি ট্রেনের টিকিট ৪৮৭৯ টি। ঢাকা জামালপুর রুটের স্পেশালসহ পাঁচটি ট্রেনের টিকিট বিক্রি করা হয়েছে। ঢাকা নেত্রকোনা-মোহনগঞ্জ ভোটের দুটি আন্তঃনগর ট্রেনের মোট টিকিট ১২৫৮ টি। ঢাকা-সিলেট রুটে ৪টি এবং ঢাকা কিশোরগঞ্জের রুটে তিনটিসহ সাতটি আন্তঃনগর ট্রেনের মধ্যে মোট টিকিট ৪ হাজার ৫৪৮ টি। সব মিলিয়ে দিনে ঢাকা থেকে ৩৭টি আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট ছিল ২৮ হাজার ২২৪ টি। রেলওয়ে স্টেশন সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার আগামী ৮ জুনের, ৩১ মে ৯ জুনের, ১ জুন ১০ জুনের ও ২ জুন ১১ জুনের ফিরতি টিকিট কমলাপুর থেকে বিক্রি হচ্ছে। তবে, আগের মত ফিরতি টিকিটে তেমন ভিড় নেই।
কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের ম্যানেজার আমিনুল হক জানান, চাঁদ দেখা যাওয়ার ওপর নির্ভর করছে ৫ ও ৭ জুনের ঈদের টিকিট বিক্রি। ৫ জুন ঈদ না হলে ৪ জুন সন্ধ্যা থেকে দেওয়া হবে পরের দিনের টিকিট।
বিআইডব্লিউটিএ জানায়, ঢাকা নদীবন্দরের হিসেবে এ বছর ঈদ করতে সদরঘাট হয়ে নৌপথে ঘরে ফিরবেন প্রায় অর্ধকোটি মানুষ। ৪৩ টি রুটে প্রতিদিন লঞ্চ চলবে ২১৫ টি। ঈদে এবার ঝড় বাদল থাকতে পারে। সে আশংকায় তিন নম্বর বিপদসংকেত দিলেই নৌযান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হবে।
ঢাকা নদী বন্দরের তথ্য অনুযায়ি, এ ঈদে ঢাকা বরিশাল রুটে লঞ্চ চলবে ২৩টি, ঢাকা চাঁদপুর রুটে ২৫টি, ঢাকা-পটুয়াখালি রুটে ১৩টি, ঢাকা হুলারহাট ভান্ডারিয়া রুটে চলবে ১০ টি, ঢাকা ভোলা রুটে ৮ টি।
সদরঘাট টার্মিনাল থেকে দিনে গড়ে দূরপাল্লার নৌযান চলাচল করে ৯০টি। ঢাকা থেকে ১৫০টি রুট ধরে এক লাখ ৭০ হাজার যাত্রী সদরঘাট হয়ে চলাচল করে স্বাভাবিক সময়ে। ঈদ যাত্রায় নৌপথে যাত্রীর চাপ পড়ে দ্বিগুণের বেশি। তবে এসময় ঢাকার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সদরঘাট পৌঁছতে গিয়ে বেশ দুর্ভোগে পড়তে হয় যাত্রীদের। বিভিন্ন এলাকা থেকে সদরঘাট পর্যন্ত বাস কম থাকায় গুলিস্তান থেকে হেঁটে সদরঘাটে ছুটতে হয় অনেককে।
সড়কপথেও এবার টিকিটের হাহাকার দেখা গেছে। সড়কপথে সবচেয়ে বেশি যাত্রী চাপ পড়বে ১ থেকে ৩ জুন। এর মধ্যে ৩ জুনের কোনো এসি বা নন এসি বাসের সিট পাওয়া যাচ্ছে না।
মহাখালি টার্মিনাল সূত্র জানায়, চাঁদরাত পর্যন্ত এখান থেকে বাস চলবে। তবে, ঈদের দিন বেশিরভাগ দূরপাল্লার রুটে বাস চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে, রাত থেকেই আবার কিছু কিছু রুটে বাস চলাচল শুরু হবে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *