ফুটবল খেলা এবং ব্যবসার নামে ঢাকায় এসে প্রতারণা

অপরাধ এইমাত্র রাজধানী

নিজস্ব প্রতিবেদক : ফুটবল খেলা এবং ব্যবসার নামে ঢাকায় এসে প্রতারণায় জড়াচ্ছেন অনেক আফ্রিকান। সম্প্রতি আফগানিস্তান থেকে ডলার ভর্তি বক্স পাঠানোর নামে প্রতারণাকারী দুই আফ্রিকানসহ চক্রের তিন সদস্যকে আটক করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিট। পুলিশ বলছে, চক্রের একটি অংশ দেশে অবস্থান করে অপর অংশটি থাকে দেশের বাইরে। তারাই মূলত বিদেশি কোম্পানির কাগজপত্র পাঠিয়ে প্রতারিত করে মানুষজনকে।


বিজ্ঞাপন

গত বছর ৯ সেপ্টেম্বর এই ভুয়া ছবি ব্যবহার করে আমেরিকান আর্মির নার্স পরিচয় দিয়ে ইনস্টাগ্রামে যোগাযোগ করা হয় ঢাকার বেসরকারি কর্মকর্তা জিল্লুর রহমানের সঙ্গে। এরপর হোয়াটসঅ্যাপে ওই নারী জিল্লুর রহমানকে জানায়, তিনি এখন আফগানিস্তানে কর্মরত অবস্থায় একটি ডলার ভর্তি বক্স কুড়িয়ে পেয়েছেন। ডলার ভর্তি বক্সটি জিল্লুরকে পার্সেলে পাঠানোর প্রস্তাব দিলে লোভে পড়ে প্রতারকের ফাঁদে পা দেয় জিল্লুর।

তিনদিন পর বক্সটি ‘জেভিকে ইন্টারন্যাশনাল মুভার্স’ নামে ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে জানিয়ে জিল্লুরের হোয়াটসঅ্যাপে একটি রশিদ পাঠায় প্রতারক। পরদিন চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্মকর্তা পরিচয়ে এক নারী বক্সটি বুঝে নিতে চার্জ বাবদ ৬৫ হাজার টাকা দাবি করলে বক্স হাতে না পেয়েই এবি ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাঠিয়ে দেয় জিল্লুর। এরপরও পার্সেল বুঝিয়ে না দিয়ে কূটনীতিক পরিচয়ে দিয়ে আরো চার লাখ ৬৯ হাজার টাকা দাবি করলে সিটি ব্যাংকের দুটি অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠিয়ে দেয় জিল্লুর। অবশেষে পার্সেল না দিয়েই যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় প্রতারক চক্রটি।

ভুক্তভোগী জিল্লুর বলেন, একটা পার্সেল আসবে। আপনার কাস্টমস ফি আসতে পারে নাও আসতে পারে। যদি দেয়া লাগে তাহলে ফি দিয়ে সংগ্রহ করে নিবেন। এটা কারো সঙ্গে শেয়ার করবেন না। এ পার্সেলের জন্য আমি ৫ লাখ ৩৪ হাজার টাকা নিয়ে নেয়। এরপরে যখন আমার কাছে আরও আট লাখ টাকা চায় তখনই বিষয়টি বুঝতে পারি।

এ ঘটনায় তেজগাঁও থানায় অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে করা মামলার তদন্ত করে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে ৩ জনকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিট। এদের মধ্যে একজন বাংলাদেশি ও বাকি ২ জন গাম্বিয়া ও ক্যামেরুনের নাগরিক। এদের ছাড়াও এই চক্রের আরো এক সদস্য ফ্রান্সে অবস্থান করে প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানায় পুলিশ।

ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিবি) এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, ফেসবুকে প্রায়শ আমেরিকান নেভি, আমেরিকান নার্স, আর্মি পরিচয়ে ফেক আইডি খুলেন প্রতারক চক্র। ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজে ম্যাজেজ পাঠায় আর বিশ্বাসটা ওই জায়গায় তৈরি হয়।

আফ্রিকা থেকে ফুটবল খেলার ও ব্যবসার নাম করে অন-অ্যারাইভাল ভিসায় বাংলাদেশে এসে অবস্থান করা কয়েক হাজার আফ্রিকানকে নজরদারিতে রাখা হচ্ছে বলে জানায় গোয়েন্দা পুলিশ।