পাত্রী চাই বিজ্ঞাপনে অভিনব প্রতারণা

অপরাধ

অসংখ্য নারীর স্বপ্ন তছনছ

 

 

নিজস্ব প্রতিবেদক : শিক্ষিত চাকরিজীবী। স্ত্রী মৃত, সন্তান নেই। যেকোনো জেলার পাত্রী সরাসরি যোগাযোগ করুন। পাত্রী চেয়ে জাতীয় দৈনিকে এভাবেই প্রতি সপ্তাহে বিজ্ঞাপন দিতেন ফরিদপুরের কামরুজ্জামান। আগ্রহীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ঘনিষ্ঠতা বাড়াতেন। বিয়েতে রাজি হলে স্বপ্নে দেখা ইচ্ছা পূরণের অনুরোধ করতেন। এভাবে বহু নারীর কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া কথিত পাত্রকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
প্রতি শুক্রবার জাতীয় দৈনিকে পাত্রী চেয়ে বিজ্ঞাপন। বিজ্ঞাপনের ভাষা এক হলেও ফোন নম্বর আর পাত্রের বয়সে কিছুটা হেরফের। এমনটা হতেই পারে। তবে খটকা লাগে তখনই যখন এই সবগুলো বিজ্ঞাপনদাতা হন একজন।
পাত্রী চেয়ে বিজ্ঞাপনদাতা এই পাত্রের নাম কামরুজ্জামান। বিজ্ঞাপনে তার বয়স কখনো ৪০ কখনো বা ৪১ কিংবা ৪৪ হলেও বাস্তবে তার বয়স ৬০ ছুঁইছুঁই। বিজ্ঞাপন দেখে বিয়ে করতে আগ্রহী অসংখ্য পাত্রীর স্বপ্ন তছনছ করার মাস্টারমাইন্ড কথিত এই পাত্রকে গ্রেফতারের পর পুলিশ আবিষ্কার করেছে তার প্রতারণার অভিনব সব কায়দা।
পাত্র সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার মিথ্যা পরিচয়। পাত্রীকে কাবু করার এটি তার প্রধান অস্ত্র। বিয়েতে রাজি পাত্রীকে তিনি একটি স্বপ্ন পূরণের অনুরোধ করেন। দাম্পত্য জীবন সুখী করতে মাজারে দুটি কিংবা তিনটি গরু মানতের স্বপ্নের কথা জানান হবু পাত্রীকে। বলেন মানত আদায় না করে সংসার শুরু করা যাবে না। এভাবে অসংখ্য পাত্রী তার প্রতারণার শিকার হয়েছেন।
ভুক্তভোগী নারীরা জানান, মানতের জন্য মাজারে তিনটি গরু দেয়ার জন্য টাকা দিয়েছি। এভাবে প্রায় ৫ লাখ টাকা দিয়েছি।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার কায়সার রিজভী কোরায়েশী বলেন, কামরুজ্জামানের বিভিন্ন ব্যাংক একাউন্ট, মোবাইল ব্যাংকিং লেনদেনের তথ্য অনুসন্ধান করা হচ্ছে। এতে দেখা গেছে প্রায় ১৪ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার কাজী শফিকুল আলম বলেন, শীর্ষস্থানীয় পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়া তার বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের একটি কৌশল। প্রতারণা করে টেলিফোনে বিয়ে করার তথ্যও রয়েছে।
পাত্রী চেয়ে বিজ্ঞাপনের নামে কি পরিমাণ নারীদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন তিনি তার খোঁজ নিচ্ছে পুলিশ।


বিজ্ঞাপন