জীবিকার চেয়েও জীবন অগ্রগণ্য

অন্যান্য বিবিধ

মোস্তাফিজুর রহমান : করোনা ভাইরাসের শক্তিশালী আক্রমণে হঠাৎ করেই ক্রমশ আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা অপ্রত্যাশিতভাবে বেড়েই চলেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও সরকারের বিভিন্ন উইং থেকে জনগণকে নিরাপত্তামূলক সতর্কবার্তা জানানোর পরও জনসমাবেশ নিরুৎসাহিত করার উল্লেখযোগ্য সুফল মেলেনি। সুরক্ষা সামগ্রী পরিধান ব্যাতিত কারণে অকারণে চলছে আড্ডা, পিকনিক, সভা সেমিনার ও বিভিন্ন এক্সিবিশন। মার্কেটগুলোতে মাস্ক ছাড়াই বহুলাংশে চলছে ক্রেতাদের ঘোরাফেরা। সচেতনতার অভাব পরিলক্ষিত হওয়ায় দেশের মানুষকে নিরাপদ রাখার স্বার্থে ও সংক্রমণের হার হ্রাস করার প্রত্যয়ে লকডাউন ছাড়া কোন বিকল্প পথ খোলা নেই। আমরা জনগণ, আমরাই স্বাস্থ্যবিধি ভঙ্গ করে দেশের মানুষকে মৃত্যুর দিকে ধাবিত করছি।


বিজ্ঞাপন

আগামী ০৫/০৪/২০২১ ইং হতে সপ্তাহব্যাপী দেশজুড়ে লকডাউনের ঘোষণা হয়েছে। পরিস্থিতি অনুধাবনে লকডাউনের কালক্ষণ বৃদ্ধিপেয়ে হয়তো দীর্ঘায়িত হতে পারে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় লকডাউনের পক্ষে বহুলাংশ মানুষের মতামত থাকলেও বাস্তবতা বিবেচনায় প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর কিছু অংশ রোজগারের অভাবে আর্থিক সমস্যার সন্মুখীন হতে পারে মর্মে শংকিত । রাষ্ট্রযন্ত্র তার দেশের জনগণের সার্বিক নিরাপত্তা ও পরিস্থিতি অনুধাবনে লকডাউন ঘোষণা করে নিশ্চয়ই সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কারণ ক্ষুধা আর মৃত্যু দুয়ের ব্যালেন্স একইসাথে সম্ভব নয়। জীবন থাকলেই ক্ষুধার প্রশ্ন বিধায় জীবনকে সুরক্ষিত করতে পাবলিক মুভমেন্ট সংরক্ষিত করাটাই শ্রেয়। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মৌলিক প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে সরকার নিশ্চয়ই বিকল্প ব্যবস্থা করবে, পাশাপাশি বিত্তশালী মানবিক অনেক মানুষ পূর্বের ন্যায় কর্মহীন ভিকটিম জনগোষ্ঠীর পাশে বিভিন্নভাবে হয়তো সহায়তা করবে বলে আমরা আশাবাদী । লকডাউনের সময়ে সরকারের অনুদানে হয়তো অভাব ঘুচবে না কিন্তু নিরাপত্তাজনিত কারনে ডালভাতের নূন্যতম প্রাপ্তি নিয়েই এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য সকলকে সার্বিক সহযোগিতা ও স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন করার জন্য উদ্দুদ্ধ করা একান্ত প্রয়োজন।

বেচে থাকার প্রয়োজনে সতর্কতা ও নির্দেশনা পরিপালন করা সকলের জন্য অপরিহার্য। নিজে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন, অন্যকে উদ্দুদ্ধ করুন এবং প্রয়োজন ব্যাতিত ঘরের বাইরে ঘোরাফেরাকে নিরুৎসাহিত করুন। পৃথিবী হয়তো অচিরেই আবার সুস্থ হয়ে উঠবে কিন্তু অসতর্কতার জন্য আমরা যাদের হারিয়েছি বা হারাবো, তারা কখনো আমাদের সাহায্যের হাতিয়ার হয়ে সংসারের চালিকাশক্তির দায় নিবেনা। সুতরাং বেচে থাকার প্রয়োজনেই নিজ আলয়ে অবস্থান করুন, পরিবেশকে ভাইরাসমুক্ত রাখুন।

আল্লাহ সকলকে সুরক্ষিত রাখুক।