ফের শতাধিক মৃত্যু

এইমাত্র জাতীয় জীবন-যাপন সারাদেশ স্বাস্থ্য

ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ঢুকলেই সংক্রমণের সুনামি ঘটবে

 

এমএ স্বপন : মহামারি করোনাভাইরাসের ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট বা ধরণ বাংলাদেশে প্রবেশ করলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।
ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট চারদিকে ৩০০ গুণ সংক্রমণ ছড়ানোর ক্ষমতা রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র ও লাইন ডিরেক্টর (অসংক্রামক ব্যাধি নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন। এজন্য দেশের জনগণকে সার্বক্ষণিক মাস্ক পরিধানসহ প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান তিনি।
এদিকে বিশ্বজুড়ে মহামারি আকার ধারণ করা করোনা ভাইরাসে দেশে চার দিন পর আবারও গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ১০১ জন। এ নিয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ৫৩ জনে। এরআগে গত চার দিন যথাক্রমে ৮৩, ৮৮, ৯৮, ৯৫ জন করে মৃত্যুবরণ করেছিল। এছাড়া গত ১৯ এপ্রিল দেশের ইতিহাসে একদিনে সর্বোচ্চ ১১২জনের মৃত্যু হয়েছিল। তার আগের তিন দিনে যথাক্রমে ১০২, ১০১, ১০১ জন করে মৃত্যুবরণ করেছিল।
এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৯২২ জন। এতে দেশে এখন পর্যন্ত মোট করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৪৫ হাজার ৩২২ জনে।
করোনাভাইরাস নিয়ে রোববার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, এদিন সুস্থ হয়েছেন আরও ৪ হাজার ৩০১ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৬ লাখ ৫৭ হাজার ৪৫২ জন।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র বলেন, ভারতে অসম্ভব রকমের করোনার সংক্রমণ ঘটছে। প্রতিবেশী দেশটিতে যে দুটি ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে- ডাবল বা ত্রিপল মিউটেশন ভাইরাস, তা সারাবিশ্বে বিস্ময় হিসেবে দেখা দিয়েছে। এই ডাবল কিংবা ত্রিপল মিউটেশন ভাইরাস যেন কোনোভাবেই দেশে আসতে না পারে সেজন্য সবাইকে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। রোববার দুপুরে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতর কর্তৃক ভার্চুয়াল স্বাস্থ্য বুলেটিন প্রচারকালে তিনি এসব কথা বলেন।
অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন বলেন, আগামী ২৮ এপ্রিল সরকার ঘোষিত ‘কঠোর লকডাউন’ শেষ হবে। রোববার থেকে সীমিত পরিসরে দোকানপাট ও শপিংমল খুলে দেয়া হয়েছে। বর্তমানে জনগণের সহযোগিতা একান্তভাবে কাম্য। দীর্ঘস্থায়ী লকডাউন পরিপূর্ণ সমাধান নয় এবং এর ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
জনগণকে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে জানিয়ে এ বিশেষজ্ঞ বলেন, জনগণকে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। মুখে সার্বক্ষণিক মাস্ক পরিধান করতে হবে এবং নির্দিষ্ট সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। প্রয়োজনে কঠোর হয়ে জনগণকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে বাধ্য করতে হবে।
সম্প্রতি ভারতের জিনোম বিজ্ঞানীরা করোনাভাইরাসের যে ‘ডাবল মিউট্যান্ট ভ্যারিয়েন্ট’ চিহ্নিত করেছেন, সেটি নিয়ে উদ্বেগ আছে। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এই ডাবল মিউটেশনের কারণে ভাইরাসটি মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ফাঁকি দিতে পারে। টিকা তখন কাজ করে না। আর ‘ডাবল মিউট্যান্ট’ আতঙ্ক কাটতে না কাটতেই সম্প্রতি শোনা যাচ্ছে ‘ট্রিপল মিউট্যান্ট ভ্যারিয়্যান্ট’ এর কথা। ইতোমধ্যে পশ্চিমবঙ্গসহ দেশটির বেশ কয়েকটি রাজ্যে এ ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে।
নতুন এই স্ট্রেইনে আক্রান্তদের শারীরিক অবস্থারও দ্রুত অবনতি ঘটছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের শিক্ষক ড. শাফিউন নাহিন শিমুল জানান, বাংলাদেশের বিশাল সীমান্ত ভারতের সাথে। তাই আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ যতই বন্ধ থাকুক-তাতে সেখানকার ভাইরাস আসবে না এই নিশ্চয়তা নেই।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সময়মতো লাগাম পরানো না গেলে এবার সংক্রমণের সুনামি ঘটবে।
ফের শতাধিক মৃত্যু : বিশ্বজুড়ে মহামারি আকার ধারণ করা করোনা ভাইরাসে দেশে চার দিন পর আবারও গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ১০১ জন। এ নিয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ৫৩ জনে। এরআগে গত চার দিন যথাক্রমে ৮৩, ৮৮, ৯৮, ৯৫ জন করে মৃত্যুবরণ করেছিল। এছাড়া গত ১৯ এপ্রিল দেশের ইতিহাসে একদিনে সর্বোচ্চ ১১২ জনের মৃত্যু হয়েছিল। তার আগের তিন দিনে যথাক্রমে ১০২, ১০১, ১০১ জন করে মৃত্যুবরণ করেছিল।
এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৯২২ জন। এতে দেশে এখন পর্যন্ত মোট করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৪৫ হাজার ৩২২ জনে।
করোনাভাইরাস নিয়ে রোববার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, এদিন সুস্থ হয়েছেন আরও ৪ হাজার ৩০১ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৬ লাখ ৫৭ হাজার ৪৫২ জন।
এর আগে শনিবার করোনায় ৮৩ জন মারা যান ও নতুন করে ২ হাজার ৬৯৭ জন করোনা আক্রান্ত হন।
এদিকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও প্রাণহানির পরিসংখ্যান রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডওমিটারের তথ্যানুযায়ী, রোববার সকাল পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে মারা গেছেন ১৩ হাজার ৩৯০ জন এবং নতুন করে ৮ লাখ ২১ হাজার ৬৭৪ জনের শরীরে এই ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে বিশ্বে মোট করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৩১ লাখ ১২ হাজার ৭৫২ জনের এবং আক্রান্ত হয়েছেন ১৪ কোটি ৭০ লাখ ৪৪ হাজার ৩৮৯ জন। এ ছাড়া সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১২ কোটি ৫০ লাখ ৪৫ হাজার ৫৪৮ জন।
করোনায় এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও মৃত্যু হয়েছে বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশ যুক্তরাষ্ট্রে। তালিকায় শীর্ষে থাকা দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনা সংক্রমিত হয়েছেন ৩ কোটি ২৭ লাখ ৮৯ হাজার ৬৫৩ জন। মৃত্যু হয়েছে ৫ লাখ ৮৫ হাজার ৮৮০ জনের।
আক্রান্তে দ্বিতীয় ও মৃত্যুতে তৃতীয় অবস্থানে থাকা ভারতে এখন পর্যন্ত সংক্রমিত হয়েছেন ১ কোটি ৬৯ লাখ ৫১ হাজার ৭৬৯ জন এবং মারা গেছেন ১ লাখ ৯২ হাজার ৩১৯ জন।
আক্রান্তে তৃতীয় এবং মৃত্যুতে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ব্রাজিল এখন পর্যন্ত করোনায় ১ কোটি ৪৩ লাখ ৮ হাজার ২১৫ জন সংক্রমিত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ৮৯ হাজার ৬০৯ জনের।
আক্রান্তের দিক থেকে চতুর্থ স্থানে রয়েছে ফ্রান্স। দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৫৪ লাখ ৭৩ হাজার ৫৭৯ জন। ভাইরাসটিতে মারা গেছেন ১ লাখ ২ হাজার ৭১৩ জন।
আক্রান্তের দিক থেকে রাশিয়া রয়েছে পঞ্চম স্থানে। দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৪৭ লাখ ৫৩ হাজার ৭৮৯ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ১ লাখ ৭ হাজার ৯০০ জন।
এদিকে আক্রান্তের তালিকায় তুরস্ক ষষ্ঠ, যুক্তরাজ্য সপ্তম, ইতালি অষ্টম, স্পেন নবম এবং জার্মানি দশম স্থানে রয়েছে। এই তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ৩৩তম।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান থেকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হয়। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশসহ বিশ্বের ২১৮টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে কোভিড-১৯।


বিজ্ঞাপন