ভোক্তা অধিদপ্তরের অভিযান

বানিজ্য

নিজস্ব প্রতিনিধি : পবিত্র রমজান উপলক্ষ্যে নিত্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে ছুটিরদিনে রাজধানী ও জেলা-উপজেলা পর্যায়ের বিভিন্ন বাজার ও প্রতিষ্ঠানে অভিযান পরিচালনা করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
ঢাকাসহ সারাদেশে ৪৫টি মনিটরিং টিম কর্তৃক ভোক্তাস্বার্থ বিরোধী বিভিন্ন অপরাধে ৮৬টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে মোট ৪,১২,০০০/- জরিমানা আরোপ ও আদায় করা হয়।


বিজ্ঞাপন

ঢাকা মহানগরীতে ১০টি মনিটরিং টিম কর্তৃক ১৫টি পাইকারী ও খুচরা বাজার এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তদারকি করা হয়। রাজধানীর এসকল বাজার ও প্রতিষ্ঠানে অভিযান পরিচালনা করেন প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক মোঃ মাসুম আরেফিন, আফরোজা রহমান, বিকাশ চন্দ্র দাস,সহকারী পরিচালক শাহনাজ সুলতানা, ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ফাহমিনা আক্তার ও প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক তাহমিনা বেগম।

এছাড়া বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক পরিচালিত মোবাইল টিমের সাথে বাজার তদারকি করেন অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রজবী নাহার রজনী, প্রনব কুমার প্রামানিক, ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মাগফুর রহমান ও সহকারী পরিচালক মাহমুদা আক্তার।

রাজধানীর বাইরে বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক ও জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালকগণের নেতৃত্বে জেলা উপজেলা পর্যায়ের বিভিন্ন বাজার ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে তদারকি এবং সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালিত হয়।

রাজধানীর উত্তর বাড্ডা, মধ্য বাড্ডা, ভাটারা,গুদারাঘাট, বসুন্ধরা কাঁচাবাজার,কাওরান বাজার, শাহ আলী বাজার, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, মোহাম্মদপুর টাউনহল, কাঁঠালবাগান, মালিবাগ, শান্তিনগর, খিলগাঁও, বাসাবো, রামপুরা এলাকার বিভিন্ন কাঁচাবাজার, নিত্যপণ্যের দোকান, ফার্মেসী ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে তদারকিকালে সবজি, পেঁয়াজ, ছোলা, ডাল, ভোজ্যতেল, চিনি,খেজুরসহ অন্যান্য নিত্যপণ্য যৌক্তিকমূল্যে বিক্রয় হচ্ছে কিনা তা তদারকি করা হয়। একইসাথে সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে মূল্য তালিকা সঠিকভাবে প্রদর্শন, নির্ধারিত দামে পণ্য বিক্রয়,পণ্যের ক্রয় রসিদ সংরক্ষণ, মূল্য তালিকায় প্রদর্শিত মূল্যের সাথে বিক্রয় রসিদের গরমিল, সঠিক ওজন, মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্য ও ঔষধ, নকল পণ্যসহ ভোক্তাস্বার্থ বিরোধী কোন অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে কিনা তা পর্যবেক্ষণ করা হয়। তদারকিকালে বাজারে নিত্যপণ্যের পর্যাপ্ত মজুত, সরবরাহ স্বাভাবিক ও পণ্যমূল্য স্থিতিশীল পরিলক্ষিত হয় এবং সরকার নির্ধারিত দামে ভোজ্যতেল, পেঁয়াজ, ছোলা, ডাল,চিনিসহ অন্যান্য নিত্যপণ্য বিক্রি হতে দেখা যায়। এসময় পণ্যের মূল্যতালিকা প্রদর্শন না করা, নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশী দামে পণ্য বিক্রয়, মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষধ বিক্রয়ের অপরাধে ফার্মেসীসহ কয়েকটি নিত্যপণ্যের দোকানকে জরিমানা আরোপ করা হয় এবং এ ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড হতে বিরত থাকার জন্য সতর্ক করা হয়।

আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, স্বাস্থ্য বিভাগ, কৃষি বিভাগ, মৎস্য বিভাগ, ক্যাবসহ সংশ্লিষ্ট শিল্প ও বণিক সমিতির প্রতিনিধিবৃন্দ অধিদপ্তর পরিচালিত বাজার অভিযানে সহযোগিতা প্রদান করেন।

বাজার তদারকিকালে ভোক্তা অধিকার বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ভোক্তা ও ব্যবসায়ীবৃন্দের মধ্যে লিফলেট, প্যাম্পলেট বিতরণ এবং করোনাকালে মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি পরিপালনের জন্য হ্যান্ডমাইকে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া হয়।

এছাড়াও জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে ভোক্তা অধিকার নিশ্চিতকরণসহ স্থিতিশীল বাজার ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন।

এ বিষয়ে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাবলু কুমার সাহা বলেন, পবিত্র রমজান ও করোনা মহামারীকালে নিত্যপণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও অধিদপ্তরের বাজার তদারকি ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। ভোক্তাস্বার্থ সুরক্ষায় নিত্যপণ্যের মূল্য তালিকা প্রদর্শন,ক্রয় রশিদ সংরক্ষণ এবং যৌক্তিক ও ন্যায্যমূল্যে নিত্যপণ্য বিক্রয় করতে সম্মানিত ব্যবসায়ীগণকে উদাত্ত আহবান জানান তিনি।

এছাড়াও তিনি নিত্যপণ্যের বাজারে স্বাস্থ্যবিধি পরিপালনের জন্য ভোক্তা-ব্যবসায়ীদের অনুরোধ করেন।

এদিকে বানিজ্য মন্ত্রণালয়াধীন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, মুন্সীগঞ্জ জেলা কার্যালয় কর্তৃক মুন্সীগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার তেলেরপাম্প এলাকায় তদারকি কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।

একটি ফার্মেসিতে মনিটরিং এ দেখা যায়, মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ও তারিখ কাটা ওষুধ বিক্রির জন্য প্রদর্শন করা হচ্ছে। একটি রেস্টুরেন্টে মনিটরিং এ দেখা যায়, খাবারের মূল্য তালিকা প্রদর্শন করা হচ্ছে না। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ অনুযায়ী প্রতিষ্ঠান ২টিকে জরিমানা করা হয় এবং সংশোধন হবার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়।

ব্যাটালিয়ন আনসার মুন্সীগঞ্জ এর একটি টিম অভিযানে সহযোগিতা করেন। জনস্বার্থে এ তদারকি মূলক কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।