ঈদে ঢাকা ফাঁকা, নেই কোলাহল ও যানজট

রাজধানী

আজকের দেশ রিপোর্ট : বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাস ও লকডাউনকে উপেক্ষা করে রাজধানী ঢাকা শহর থেকে ঘরমুখো হাজারো মানুষ গ্রামে গেছেন। এবার গ্রামে যেতে গিয়ে ঘরমুখো মানুষেরা বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা, বিধিনিষেধ ও লকডাউনের বেড়াজালে আবদ্ধ হয়েছেন।


বিজ্ঞাপন

তারপরও তারা সকল বাধা-বিঘ্ন অতিক্রম করে ভ্রমণযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছেন। এমনকি, বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে গ্রামের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছেন। ঝুঁকি নিতেও ঘরমুখো মানুষেরা পিছপা হননি। ফলে, অনেকে নিহত ও আহত হয়েছেন। আর এ ব্যতিক্রমধর্মী দৃশ্যগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সকল মিডিয়ায় ভেসে উঠেছে অবলীলায়।

সরকার ঘোষিত লকডাউন চলমান থাকায় ঘরমুখো মানুষেরা এবারই প্রথম এধরনের দৃশ্যের অবতারণা করেছেন। কেননা, বাঙালির আবেগ, বিবেক ও উচ্ছ্বাস একটু বেশি বৈকি! এজন্য অনেকে পায়ে হেঁটে, দৌড়ঝাঁপ, লম্ফঝম্প ও রশিতে ঝূলে গ্রামের বাড়ি যান। পাশাপাশি, রিক্সা, সিএনজি, অটোরিকশা, পিকআপ ভ্যান, ট্রাক ইত্যাদি বাহনেও তাদেরকে বাড়ি যেতে দেখা যায়।

মোদ্দাকথা হচ্ছে, বাড়ি যেতেই হবে, পরিবারের সাথে ঈদ করতে হবে। এটাই ঘরমুখো মানুষের একমাত্র লক্ষ্য, শত প্রতিকূলতা, প্রতিবন্ধকতা ও মহামারী তাদের কাছে তুচ্ছ ও মামুলি বিষয়। তাদের কাছে হয়তোবা, জীবনের চেয়ে জীবন আনন্দের গুরুত্ব বেশি। আর এ কারণেই আশঙ্কা করা হচ্ছে, দেশে করোনা ঝুঁকি অনেকাংশে বৃদ্ধি পেতে পারে।

করোনা ও লকডাউনের জন্য হাজারো কর্মমুখী মানুষের কর্ম স্থবির হয়েছে। একারণে, বিগত কয়েক মাস যাবত শহর ছেড়ে বহু সংখ্যক মানুষ গ্রামে চলে গেছেন। ব্যবসা-বাণিজ্য মন্দাভাব অবস্থা বিরাজমান, গ্রামে যাওয়ার এটাও অন্যতম মূল কারণ। আর্থিক সংকটের কারণে অধিকাংশ মানুষ গ্রামমুখী হয়েছেন।

আর এ কারণেই রাজধানী ঢাকার শহর এখন একেবারেই ফাঁকা। নেই কোন কোলাহল, নেই যানজট ও নেই কোনো কর্মব্যস্ততা, করোনাকালীন সময়ে গত বছর থেকে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা বন্ধ রয়েছে। পাশাপাশি, এ রমজানে সরকার লকডাউন ঘোষণা করায় সরকারি অফিস-আদালত, ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে।

ঢাকার মিরপুর, মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, ফার্মগেট, মহাখালী, গুলশান, বনানী, তেজগাঁও, শাহবাগ, বাংলামটর, মতিঝিল, আজিমপুর, কলাবাগান, হাতিরপুল, পলাশী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদি এলাকার সড়কগুলো ফাঁকা পরিলক্ষিত হয়। অধিকাংশ আবাসিক এলাকা ও বাসাবাড়ি তালাবদ্ধ। এদিকে, ঢাকায় অবস্থানরত বাসিন্দারা লকডাউন ও প্রচণ্ড তাপদাহে বাসার বাইরে বের হচ্ছেন না।

তবে, যারা আবেগ, বিবেক, উচ্ছ্বাস ও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে লকডাউন চলমান অবস্থায় পরিবার-পরিজনের সাথে ঈদুল ফিতর উদযাপন করতে গ্রামে গেছেন। সরকারের চলমান লকডাউনের সময় বর্ধিত করার সম্ভাবনা রয়েছে। যারা ঘরমুখো হয়েছেন তারা ঢাকায় ফিরতে আবারো ঝুঁকিতে পড়তে পারেন। হয়তোবা, ঐসব দৃশ্য জাতী আবার পরিলক্ষিত করতে পারেন।

ঈদ ও ঈদের পূর্ব মুহূর্তে অধিকাংশ মানুষ গ্রামে চলে যাওয়ায় ঢাকা শহর এখন ফাঁকা। শহরের সড়কগুলোতে পরিবার-পরিজন নিয়ে চলাচল করতে বেশ স্বাচ্ছন্দবোধ করছেন বিনোদন পিঁপাসুরা। এ মুহূর্তে তাদের স্বাচ্ছন্দ্যময় বাহন হচ্ছে রিকশা ও মোটরসাইকেল। ঢাকা শহরের একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে নির্দ্বিধায় চলাফেরা করতে পারছেন তারা।

রাজধানী শহরের নির্ঝঞ্ঝাট বাসিন্দারা এরকম ঢাকা শহর সবসময় কামনা করেন। তারা আশা প্রকাশ করেন, রাজধানী ঢাকা কোলাহলমুক্ত, পরিবেশবান্ধব ও যানজটমুক্ত থাকবে। এটাই তাদের একমাত্র চাওয়া, তবে তারা এ আশঙ্কাও প্রকাশ করেন, তাদের এ চাওয়া বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে পূর্ণ হওয়া অসম্ভব।