ঝুঁকিপূর্ণ পদ্ধতিতে মাদক পাচারের নতুন পথ

অপরাধ আইন ও আদালত এইমাত্র চট্টগ্রাম জাতীয় জীবন-যাপন ঢাকা বানিজ্য রাজধানী সারাদেশ

চট্টগ্রাম কারাগারে ইয়াবার রমরমা কারবার!

বিশেষ প্রতিবেদক : মাদকবিরোধী সাঁড়াশি অভিযান, বন্দুকযুদ্ধে ব্যাপক প্রাণহানিতেও বন্ধ হচ্ছে না ইয়াবা পাচার। বরং পাচারকারীরা নিত্যনূতন কৌশলে কারবার টিকিয়ে রাখার চেষ্টায়। ইদানীং ইয়াবার বেশ কিছু চালান ধরা পড়েছে যেখানে পাচারকারীরা লোক ভাড়া করে তাদেরকে ইয়াবা গিলিয়ে বা পায়ুপথ দিয়ে শরীরের ভেতরে রেখে পাচার করে নিয়ে এসেছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা জানান, পাচারে বাহক হিসেবে ব্যবহার করা ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে ঢাকায় চালান নিয়ে আসতে একেকটি ইয়াবা বড়ির জন্য পাঁচ টাকা করে দেওয়া হয়। ক্ষেত্র বিশেষে বাড়ানো হয় টাকার পরিমাণ। তাই একেকটি চালানে সর্বোচ্চ সংখ্যক ইয়াবা নিয়ে আসে তারা। আর এ ক্ষেত্রে জীবনটাকেই ঝুঁকিতে ফেলে দিনেও কুণ্ঠাবোধ করছে না তারা।
মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক খোরশেদ আলম জানান, এই প্রক্রিয়ায় ইয়াবা পাচারে মৃত্যুও হতে পারে। কারণ, মানুষের পাকস্থলি খাবার হজমের জন্য যে রস থাকে, সেটি ইয়াবা বড়িকেও গলিয়ে ফেলতে পারে। কোনো কারণে একটু বেশি সময় পেটে থাকলেই এই ঝুঁকি তৈরি হয়। একাধিক ব্যক্তির মৃত্যুও হয়েছে এই প্রক্রিয়ায়।
আর পায়ু পথ দিয়ে ক্রমাগত এগুলো বের করতে থাকলে ক্যান্সারের ঝুঁকি থাকে বলে বিশেষজ্ঞরা তাদের জানিয়েছেন বলে বলেন মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এই কর্মকর্তা।
মুগদা জেনারেল হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক সুদ্বীপ রঞ্জন দেবও জানিয়েছেন একই কথা। তিনি বলেন, ইয়াবা বড়ি পেটের ভেতর গলে গেলে মৃত্যু নিশ্চিত। আর যদি তা নাও গলে তাহলেও ক্যান্সারের ঝুঁকি থাকে। মলমুত্র ত্যাগে সমস্যা হয়, মস্তিস্কেও প্রভাব ফেলে।
একাধিক চালান ধরা পড়ার পর বাহকরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানিয়েছেন, বিশেষ কায়দায় প্রথমে স্কচটেপ পেঁচিয়ে ইয়াবার ছোট প্যাকেট করা হয়। পরে সেই প্যাকেট কলায় ঢুকানো হয়। আর সেই কলা না চিবিয়ে গিলে ফেলা হয়। আবার কিছু প্যাকেট পিচ্ছিল করে পায়ুপথ দিয়ে পেটে ঢুকানো হয়। ঝুঁকিপূর্ণ এই বহনে অনেকের মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে।
মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর উত্তরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় চার হাজার ৫০টি ইয়াবা বড়ি। সবগুলো বড়ি পায়ুপথ ও পেটের মধ্যে বিশেষ কায়দায় রাজধানীতে আনা হয়েছিল। ঝুঁকিপূর্ণ এই পদ্ধতিতে মাদক পরিবহনে তাদের দেওয়া হতো ১০ হাজার টাকা। অনেক সময় বড়িপ্রতি হিসাব করে পরিশোধ করা হতো।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর বলছে, এই প্রক্রিয়ায় ইয়াবার চালান তথ্য ছাড়া ধরা কঠিন। কারণ, পরীক্ষা-নিরীক্ষার সুযোগ নেই। এ জন্য বিশেষ এক ধরনের স্ক্যানার কেনার প্রক্রিয়া চলছে।
র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক সারোয়ার-বিন-কাশেম বলেন, এর আগেও অভিনব এমন চালান আমরা বেশ কয়েকটি ধরেছি। মঙ্গলবার রাতে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে; এর মধ্যে একজনকে পেটে ইয়াবা আনার সময় হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। বেশ কয়েকটি সিন্ডিকেটের তৎপরতা আমাদের নজরদারিতে রয়েছে।
গত ২১ মে কক্সবাজারের টেকনাফে তিন নারীর পেটের ভেতর থেকে তিন হাজার ১৫০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করে বিজিবি। ওই নারীদের এক্স-রে করে কাল রঙের স্কচটেপ মোড়ানো অবস্থায় পেটের ভেতরে মাদকের বড়ি উদ্ধার করা হয়।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জামাল উদ্দীন আহমেদ বলেন, এ ধরনের চালান একসময় খুব আসত। এখন সেটা কমেছে। কারণ এটা ঝুঁকিপূর্ণ কাজ। এ ধরনের কর্মকা- বন্ধে আমরা তৎপর রয়েছি। এরই মধ্যে স্ক্যানার কেনার প্রক্রিয়া চলছে। ফলে শুধু সোর্সে খবর বাদেও আমরা এ ধরনের মাদক চালান বন্ধ করতে পারব।
র‌্যাবের আইন আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান বলেন, এ ধরনের চালান ধরা পড়ছে। তবে জীবনের মায়া তো সবারই আছে। এভাবে ইয়াবা বহনে শরীরে বিভিন্ন সমস্যা তৈরি হতে পারে। যারা এগুলো বহন করে তারা জানে রাস্তাঘাটে যেকোনো জায়গায় তাদের স্ক্যানিং করা যাবে না। আর এসব অভিযান গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতেই করা হয়।
চলতি বছরের ৩ এপ্রিল রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে এক নারীর লাশের ময়নাতদন্ত করতে গিয়ে পেটের ভেতরে ৫৭টি প্যাকেটে ১৫০০ ইয়াবা ট্যাবলেট পাওয়া যায়। চিকিৎসকদের সন্দেহ পাকস্থলিতে ইয়াবা পরিবহনের চেষ্টার কারণেই ওই নারীর মৃত্যু হতে পারে।
২৭ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নিহত যুবকের ময়নাতদন্তের সময় তার শরীরে ১১ প্যাকেট ইয়াবা পাওয়া যায়। মাদক পরিবহনের কারণেও তার মৃত্যু হতে পারে।
চট্টগ্রাম কারাগারে ইয়াবার রমরমা কারবার!: বাংলাদেশ কারা কর্তৃপক্ষের স্লোগান, রাখিব নিরাপদ, দেখাব আলোর পথ। যার মাধ্যমে ব্যক্ত হয়েছে বন্দিদের নিরাপত্তা, শৃঙ্খলা ও সমাজে পুনর্বাসনের প্রতিশ্রুতি। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে চট্টগ্রামসহ দেশের কারাগারগুলোতে ইয়াবাসহ কারারক্ষী ও হাজতি আটকের ঘটনায় সংস্থাটির ভিশন-মিশন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বেরিয়ে আসছে কারাগারে ইয়াবার রমরমা কারবারের কাহিনি।
সম্প্রতি চট্টগ্রাম কারাগারে হত্যাকন্ডের শিকার হন যুবলীগ ক্যাডার ও দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী অমিত মুহুরী। সেই মামলার প্রধান আসামি রিপন নাথ গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন, তিনি কারাগারেই টাকার বিনিময়ে ইয়াবা ও গাঁজা সেবনের সুযোগ পেতেন। খুনি রিপন নাথের এ স্বীকারোক্তির পরপরই কারাগারের পরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
ওই রেশ না কাটতেই গত শনিবার নগরের কদমতলী ফ্লাইওভার থেকে ৫০টি ইয়াবাসহ আটক হন চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের কারারক্ষী সাইফুল ইসলাম (২২)। সেই সূত্রে বেরিয়ে আসে চট্টগ্রাম কারাগারে বসেই ২০ মামলার আসামি হামকা নূর আলমের মাদক কারবারের কাহিনি। সর্বশেষ রোববার (১৬ জুন) নুর মোহাম্মদ (১৯) নামের এক হাজতির পায়ুপথ থেকে উদ্ধার করা হয় ৩৫০ পিস ইয়াবা।
কারাগারে হামকার ইয়াবা কারবার: একসময় হামকা নূর আলম ও তার বিশাল বাহিনী ছিল নগরবাসীর কাছে আতঙ্কের কারণ। ২০১১ সালে রুবি গেট এলাকায় দুটি অস্ত্র ও গুলিসহ পুলিশের হাতে ধরা পড়েন হামকা আলম। সেই থেকে কারাগারেই আছেন তিনি। দুর্র্ধষ হামকা কারাগারে থাকায় বেশ স্বস্তিতে ছিলেন নগরবাসী ও পুলিশ প্রশাসন। কিন্তু শনিবার ইয়াবাসহ পুলিশের হাতে গ্রেফতার কারারক্ষী সাইফুল ইসলামের দেয়া তথ্য ঘুম কেড়ে নিয়েছে পুলিশের। হামকা নূর আলম কারাগারে বসেই চালিয়ে যাচ্ছেন ইয়াবা ও গাঁজার কারবার। তার সহযোগী হিসেবে আছেন খোদ কারারক্ষীরা!
গত শনিবার রাতে নগরের কদমতলী এলাকায় সাইফুল ইসলাম (২২) নামের এক কারারক্ষীকে ৫০ পিস ইয়াবা বড়িসহ গ্রেফতার করে পুলিশ। একটি সিএনজি অটোরিকশায় তল্লাশির সময় সাইফুল আটক হন। এ সময় তার মোবাইল ফোনে একটি কল আসে। সেই ফোনকলের সূত্রে পুলিশ জানতে পারে, এক ব্যক্তি সাইফুলের কাছে আসছেন গাঁজা সরবরাহ করতে। পুলিশ কৌশলে আজিজুল ইসলাম জালাল নামের ওই ব্যক্তিকেও আটক করেন। এরপর সাইফুলের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে রোববার দিদারুল আলম মাসুম ওরফে আবু তাহের মাসুম ও আলো আক্তার নামের আরও দুই ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশ। এরপরই পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে পড়ে থলের বিড়াল।
আটক ওই তিনজন পুলিশকে জানান, হামকা আলমের চাহিদা অনুসারে ওই ৫০ পিস ইয়াবা বহন করে কারাগারে যাচ্ছিলেন সাইফুল। এর আগে কোতোয়ালি থানার বয়লার মাঠ এলাকার আলো নামে এক নারী ইয়াবা বিক্রেতার কাছ থেকে ওই ৫০ পিস ইয়াবা কেনা হয়। সেখান থেকে হামকা আলমের চাহিদা মতো হালিশরের বন্ধু মাসুমের কাছে দুই হাজার টাকার জন্য সিএনজি নিয়ে রওনা হন। পথিমধ্যে পুলিশের হাতে বন্দি হন কারারক্ষী সাইফুল।
তারা আরও জানান, গত দুই বছর ধরে নূর আলম কারাগারে বসেই ইয়াবা সংগ্রহ, বিক্রি ও মাদকের দাম পরিশোধ করতেন। শুধু হামকা আলমই নন, আরও অনেকেই আছেন এ কারবারে। পুলিশ জানায়, হামকা আলমের ইয়াবা কারবার অনেক আগে থেকেই। ২০১৬ সালের ১৬ আগস্ট আদালতে হাজিরা দিয়ে ফেরার পথে তার কাছে ৪০০ পিস ইয়াবা ও তিন কেজি গাঁজা পাওয়া যায়।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন বলেন, ‘আটক কারারক্ষী সাইফুল কারাগারের বিশাল ইয়াবা নেটওয়ার্কের তথ্য ফাঁস করে দিয়েছেন। একে একে এ চক্রের চারজনকে আটক করেছি। মূলত হামকা আলমই কারাগারের মাদক নিয়ন্ত্রণকারী। সবার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার পাশাপাশি তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
কারাগারে ইয়াবা মেলে ৪০০ টাকায়: রাজনৈতিক মামলায় দীর্ঘ এক বছর কারাগারে থেকে সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছেন একটি ছাত্র সংগঠনের চট্টগ্রাম জেলা ইউনিটের নেতা যুবায়ের (ছদ্মনাম)। চট্টগ্রাম কারাগারের পরিবেশ সম্পর্কে তিনি জানান, একসময় কারাগারে রাজনৈতিক কর্মীদের ব্যাপক প্রভাব থাকলেও বর্তমানে সেই জায়গা দখলে নিয়েছেন ইয়াবা ব্যবসায়ীরা। মূলত বাইরে রেখে যাওয়া তাদের বিশাল সম্পদ ও টাকার জোরেই সবকিছু সম্ভব হচ্ছে।
যুবায়ের বলেন, চট্টগ্রাম কারাগারের নয় হাজার বন্দির ৭০ শতাংশই মাদকের কারবারি ও মাদকসেবী। এ সুযোগ নিচ্ছেন মাদক ব্যবসায়ীরা। কারাগারে এখন বেশির ভাগ ইয়াবার কারবারি নিজেদের মতো পরিবেশ তৈরি করে নিয়েছেন। তাদের ইচ্ছা মতো খাওয়া-দাওয়া, প্রয়োজনের অতিরিক্ত সময় মুখরোচক খাওয়া, থাকার জন্য বিশেষ স্থান নির্ধারণ, এমনকি ইচ্ছামতো ঘোরাঘুরি, যেকোনো মুহূর্তে তাদের স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ-সাক্ষাৎ এবং কারা হাসপাতালে থাকাসহ সব মিলিয়ে অনেকটা রাজকীয় জীবন-যাপন করছেন ইয়াবার কারবারিরা।
নগর গোয়েন্দা পুলিশের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে জানান, চট্টগ্রাম কারাগারের ৩২ নম্বর সেলের ৩ নম্বর কারাকক্ষে রাখা হয়েছে হামকা নূর আলমকে। ইয়াবা কারবারের অর্থে কারাগারে বসেই সুবিধা নিচ্ছেন তিনি। সেখান থেকেই তিনি কারাগারের ভেতর ও বাইরে ইয়াবা কেনা-বেচা করে আসছেন। তার সহযোগী হিসেবে কাজ করছেন ছিঁচকে হাজতি থেকে কারারক্ষীরা।
অনুসন্ধানে জানা যায়, কারাগারের ভেতরে এক পিস ইয়াবা বিক্রি হয় ৪০০ টাকায়। তিন পিস একসঙ্গে কিনলে দাম নেয়া হয় এক হাজার টাকা। ১০০ টাকা থেকে শুরু হয় গাঁজার পুটলির দাম।
গত রোববার নুর মোহাম্মদ নামের এক হাজতির পায়ুপথ থেকে উদ্ধার করা হয় ৩৫০ পিস ইয়াবা। চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার কামাল হোসেন জানান, নুর মোহাম্মদ নামের ওই হাজতি সাতটি ছোট পুটলা বানিয়ে ইয়াবাগুলো নিয়ে আসে। তাকে সন্দেহ হলে টয়লেটে নিয়ে ইয়াবাগুলো উদ্ধার করা হয়।
এভাবে কারাগারে বিভিন্ন উপায়ে ঢুকছে ইয়াবা। কারাগারের ভেতর ও বাইরের একটি সিন্ডিকেটের সমন্বয়ে সেখানে রমরমা কারবার চলছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আকারে ছোট হওয়ায় অনেক আসামি কৌশলে এসব ইয়াবা ভেতরে পাচার করছেন। পরে সেখানে মাদকাসক্তদের কাছে এসব চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে।
সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম কারাগারের ভেতরে এখন ইয়াবার বেশ কয়েকটি সিন্ডিকেট আছে, যারা ইয়াবা কারবারে জড়িত। মূলত আসামিদের যখন আদালতে আনা হয়, তখন কৌশলে তাদের হাতে ইয়াবা গুঁজে দেয়া হয়। আসামিরা বিভিন্ন কৌশলে এসব লুকিয়ে রাখেন। সাধারণত ২০ থেকে ৪০ পিস ইয়াবা অনায়াসে শরীরের বিভিন্ন স্থানে লুকিয়ে রাখা যায়। এছাড়া লুঙ্গির সেলাই কিংবা শার্টের কলারে বিশেষ ব্যবস্থায় সংরক্ষণ করে কারাগারে ঢুকছে ইয়াবা। এসব ইয়াবার একেকটি চালান ভেতরে নিয়ে যেতে পারলে এক হাজার টাকা পাওয়া যায়। সঙ্গে কয়েকটি বড়িও মেলে। এমন লোভে মূলত কারাগারে বন্দি মাদকসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা কাজটি করেন। এসব কাজে সহায়তা করেন অসাধু কারারক্ষীরা।
কারাগার-ফেরত বেশ কয়েকজন নাম প্রকাশ না করে জানান, কারাগারের ভেতরে প্রতি পিস ইয়াবা বিক্রি হয় ৪০০ থেকে এক হাজার টাকায়। এর সঙ্গে কয়েকজন কারারক্ষীও জড়িত। মূলত সিন্ডিকেটের চিহ্নিত লোকজন কারাগারে ঢোকার সময় খুব একটা তল্লাশির মুখোমুখি হন না।
চট্টগ্রাম কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. কামাল হোসেন এ প্রসঙ্গে বলেন, কারা প্রশাসন ইয়াবার কারবারে সহায়তা করছে- বিষয়টি এমন নয়। টাকার লোভে কেউ কেউ হয়তো অসৎ পথে পা বাড়াচ্ছে। আটক কারারক্ষী সাইফুলের মোবাইল ফোনের কললিস্ট পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।
অপরাধের সঙ্গে জড়িত কেউই ছাড় পাবে না, বলেও জানান তিনি।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *