চাঞ্চল্যকর সুত্র বিহীন মামলার রহস্য উদঘাটন

অপরাধ

গ্রেফতার ২ : নেপথ্যে পরকিয়া সম্পর্ক
নিজস্ব প্রতিনিধি : গত ২১ এপ্রিল সকাল বেলা কাশিমপুর থানাধীন সারদাগঞ্জ হাজী মার্কেট পুকুরপাড় এলাকায় জনৈক জামাল উদ্দিনের সেফটিক টাংকিতে অজ্ঞাত পরিচয়ের হাত, পাঁ, মাথাবিহীন লাশ পাওয়া যায়। কাশিমপুর থানা পুলিশ উক্ত লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করে ময়না তদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন।


বিজ্ঞাপন

এমতাবস্থায় অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে কাশিমপুর থানার মামলা নং-১১, তারিখ-২২/০৪/২০২১ ইং ধারা-৩০২/২০১/৩৪ দঃ বিঃ রুজু হয়।

মামলা রুজু হওয়ার পর জাকির হাসান, উপ-পুলিশ কমিশনার অপরাধ (উত্তর) তত্ত্বাবধানে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় অপরাধ (উত্তর) বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার রেজওয়ান আহমেদ এর নেতৃত্বে কাশিমপুর থানা পুলিশ কাশিমপুর থানা এলাকার বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে।

উক্ত ঘটনায় সন্ধিগ্ধ হিসেবে তনয় সরকার (৩১), পিতা-আদিত্য সরকার, সাং-নরকোনা, থানা-মধুখালী, জেলা-ফরিদপুর এ/পি-সারদাগঞ্জ হাজী মার্কেট (হাজী মতিউর রহমান এর বাড়ীর ভাড়াটিয়া), কাশিমপুর, গাজীপুর মহানগর এবং আরিফা বেগম (২৪), পিতা-মৃত আশরাফ আলী, সাং-নারায়নপুর, থানা-চিবিরবন্দর, জেলা-দিনাজপুর এ/পি- সারদাগঞ্জ হাজী মার্কেট (মাওলানা শফিউল্লাহ এর বাড়ীর ভাড়াটিয়া), কাশিমপুর, গাজীপুর মহানগরদেরকে গ্রেফতার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে উভয়ে হত্যার ঘটনায় নিজেদের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে এবং নিহতের পরিচয় সুমন মোল্লা (২৮), পিতা-জাফর মোল্লা, মাতা-রেকসনা বেগম, সাং-গোলা বরননী বাজার, থানা-চিতলমারী, জেলা-বাগেরহাট এ/পি-সারদাগঞ্জ হাজী মার্কেট (মাওলানা শফিউল্লাহ এর বাড়ীর ভাড়াটিয়া), কাশিমপুর, গাজীপুর মহানগর হিসেবে প্রকাশ করে।

আসামীদের স্বীকারোক্তি এবং দেখানো মতে সারদাগঞ্জ হাজী মার্কেট পুকুরপাড় ময়লার স্তুপ হইতে হত্যা কান্ডে ব্যবহৃত চাপাতি ও করাত এবং চক্রবর্তী তেঁতুইবাড়ী মোজার মিল সংলগ্ন ময়লার ভাগাড় থেকে নিহতের খন্ডিত হাত, পা ও মাথা সহ পাঁচ টুকরা দেহাংশ গলিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এছাড়া নিহতের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন আসামী তনয়ের দেখানো মতে তাহার বসত ঘর হইতে উদ্ধার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় ভিকটিম সুমনের স্ত্রী আরিফার সাথে আসামী তনয়ের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এই নিয়া ভিকটিম সুমন আসামী তনয়কে কয়েকবার মারপিট করেছিল।

এই কারণে তারা ভিকটিম সুমনকে হত্যার পরিকল্পনা করে এবং ঘটনার দিন ইং ১৯/০৪/২০২১ তারিখ রাত অনুমান ১০.৩০ ঘটিকার দিকে আরিফা ভিকটিম সুমনকে দুধের সাথে ঘুমের ঔষধ খাওয়ায়। অতঃপর ভিকটিমের স্ত্রী আরিফা আসামী তনয়কে ফোন করে ডেকে আনে এবং দুজনে মিলে বালিশ চাপাঁ দিয়ে ভিকটিমকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে আরিফার বসত ঘরের মধ্যে রেখে দেয়।

পরের দিন লাশ করাত দিয়ে মাথা, দুই হাত, দুই পা বিচ্ছিন্ন করে এবং চাপাতি দিয়ে পেট কেটে দেয়। নিহতের হাত, পা ও মাথাবিহীন শরীর আরিফার ব্যবহৃত কাথা দিয়ে বেধে পার্শ্ববর্তী জামাল উদ্দিনের সেফটিক ট্যাংকিতে ফেলে দেয় এবং দেহ হইতে বিচ্ছিন্ন ০৫ (পাঁচ) টি অংশ পলিথিনে মুড়িয়ে চক্রবর্তী তেঁতুইবাড়ী মোজার মিল সংলগ্ন ময়লার ভাগাড়ে ফেলে দেয়।