ফেসবুক বন্ধু? না শত্রু?

অপরাধ

ফারুক হোসেন (পুলিশ পরিদর্শক) : বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কোনটি? যে কাউকে এ প্রশ্ন করা হলে নিঃসন্দেহে সবাই ফেসবুকের কথা বলবে। বর্তমানে একটি গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগমাধ্যম হলো ফেসবুক। এর মাধ্যমে খুব সহজেই বন্ধুত্বের হাত বাড়ানো যায়। তবে ফেসবুকিং অনেকের আসক্তিতে পরিণত হয়েছে। ফেসবুকের টানে উঠতি বয়সের ছেলেমেয়েরা কৃত্রিম আড্ডার দুনিয়ায় ডুবে যাচ্ছে। ফেসবুকের যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি রয়েছে অপকারিতাও।


বিজ্ঞাপন

প্রথমে আসি উপকারিতা সম্পর্কে। একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী তার আইডির মাধ্যমে সারা দুনিয়ার যে যেখানে আছে তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। তার অবস্থান সম্পর্কে জানতে পারেন। এমনকি তার ছবি সহকারে তাকে দেখতে পারেন। এর মাধ্যমে আমরা অতি সহজেই বিভিন্ন মানবিক উদ্যোগ যেমন রক্ত সংগ্রহ, চিকিৎসার জন্য টাকা সংগ্রহ ইত্যাদি কাজে শামিল হতে পারি, যা একসময় মানুষ কল্পনাও করেনি। মানুষের সঙ্গে মানুষের যোগাযোগের বড় মাধ্যম হয়ে উঠেছে এই ফেসবুক। একযুগ আগের মানুষ যোগাযোগের জন্য চিঠি বা ফ্যাক্স ব্যবহার করতো। এগুলো এখন মৃতপ্রায়।
তবে ফেসবুক আসক্তি সমাজে সৃষ্টি করছে নানা বিড়ম্বনা। এ ক্ষেত্রে ‘ফেক নিউজ’ বা ভুয়া খবর দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেকে একাধিক ভুয়া আইডি খুলে নানা ধরনের ভুয়া খবর বা ভুয়া খবরের লিংক দিয়ে সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে। এছাড়া ছেলেরা মেয়ে সেজে আর মেয়েরা ছেলে সেজে আইডি খুলে নিছক মজা করার জন্যও নানা পোস্ট দিয়ে থাকে। কিন্তু এর পরিণতি কী ভয়াবহ হতে পারে, তা একবারও ভেবে দেখে না তারা। ফেসবুক ব্যবহারের মাধ্যমে অনেকে যৌনতাও ছড়িয়ে দিচ্ছে। এসব কারণে ফেসবুক ব্যবহারে আমাদের সতর্ক হওয়া উচিত, যাতে করে আমরা সমাজ থেকে হারিয়ে না যাই। সামাজিক যোগযোগমাধ্যমের অপব্যবহার রোধ করতে হবে। আমরা সবাই জানি, অতিরিক্ত কোনো কিছুই ভালো নয়। ফেসবুকের দায়িত্বশীল ও পরিমিত ব্যবহারই এর একমাত্র সমাধান হতে পারে। আসুন এ ব্যাপারে সচেতন হই এবং অন্যকে সচেতন করি।
লেখক : মোঃ ফারুক হোসেন, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত), কোতোয়ালি মডেল থানা, ময়মনসিংহ।