রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী জাহাজের সুরক্ষায় আইনের খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন

অন্যান্য অর্থনীতি এইমাত্র জাতীয় ঢাকা বানিজ্য রাজধানী রাজনীতি

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী জাহাজের সুরক্ষায় নতুন আইনের খসড়ায় চূড়ান্ত সায় দিয়েছে সরকার, যেখানে এসব জাহাজে ৫০ শতাংশ পণ্য পরিবহনের বিধান রাখা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গতকাল সোমবার তার কার্যালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকে ‘বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ (সুরক্ষা) আইন, ২০১৯’ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। গত ২৮ জানুয়ারি আইনের খসড়াটির নীতিগত অনুমোদন দিয়েছিল মন্ত্রিসভা। সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, ১৯৮২ সালের অধ্যাদেশ অনুযায়ী সমুদ্রপথে পরিবাহিত পণ্যের ৪০ শতাংশ পতাকাবাহী জাহাজে পরিবহনের বিধান ছিল। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী মার্শাল ল’ আমলের আইনকে বাংলায় রূপান্তর করে নতুন করে করা হচ্ছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, নতুন আইনে সমুদ্রপথে পরিবাহিত পণ্যের ৫০ শতাংশ পতাকাবাহী জাহাজে পরিবহনের প্রস্তাব করা হয়েছে। পতাকাবাহী জাহাজ মানে বাংলাদেশে নিবন্ধিত যে কোনো জাহাজ। শফিউল জানান, কোনো জাহাজ এই আইনের কোনো বিধান লঙ্ঘন করলে ওই জাহাজ কর্তৃপক্ষকে সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত প্রশাসনিক জরিমানা করা হবে। অধ্যাদেশে জরিমানার পরিমাণ নির্ধারণ করা ছিল না। প্রশাসনিক জরিমানা নিয়ে সংক্ষুদ্ধ হলে ৩০ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আপিল করা যাবে বলেও জানান তিনি। আইনটির নীতিগত অনুমোদনের দিন মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেছিলেন, সমুদ্রপথে ৫০ শতাংশ পণ্য বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজে পরিবহনের বিধানটি বাধ্যতামূলক নয়।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক নীতিমালার খসড়া অনুমোদন: নিজ নিজ মাতৃভাষা সংরক্ষণ, পুনরুজ্জীবন, বিকাশ, চর্চা, প্রচার-প্রসারে অবদান রাখায় ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক’ দেবে সরকার। দুই বছর পর পর এই পদক দিতে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট পদক নীতিমালা, ২০১৯’ এর খসড়ায় চূড়ান্ত সায় দিয়েছে মন্ত্রিসভা। মন্ত্রিসভা বৈঠকের পর সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক’ নামে নতুন পদক চালু করা হচ্ছে, একুশে ফেব্রুয়ারিকে সামনে রেখে দুই বছর পর পর এই পদক দেওয়া হবে। জাতীয় ক্ষেত্রে দুটি এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে দুটি করে মোট চারটি পদক দেওয়া হবে। পদকের মূল্যমান ধরা হয়েছে জাতীয় ক্ষেত্রে চার লাখ টাকা, আর আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে পাঁচ হাজার ডলার। পৃথিবীর বিভিন্ন মাতৃভাষা সংরক্ষণ, পুনরুজ্জীবন, বিকাশ, চর্চা, প্রচার ও প্রসারের জন্য এই পুরস্কার দেওয়া হবে। এই পদক দিতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের পরিচালকের নেতৃত্বে বাছাই কমিটি থাকবে। এ ছাড়া শিক্ষামন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি মনোনয়ন কমিটি থাকবে বলেও মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান। রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ১৯৫২ সালের যে দিনটিতে বাঙালির রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল রাজপথ, সেই ২১ ফেব্রুয়ারি এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হয় সারা বিশ্বে। ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেস্কোর এক ঘোষণায় ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি পায়।
বিকেএসপি আইন অনুমোদন: বাংলাদেশে ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি) আইন, ২০১৯ এর খসড়াও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সচিব শফিউল জানান, ১৯৮৩ সালের অধ্যাদেশকে আইনে রূপান্তর করা হচ্ছে। প্রস্তাবিত আইনে বোর্ডের সদস্যদের মধ্যে এক তৃতীয়াংশ সদস্য উপস্থিত থাকলে কোরাম হবে, বছরে দুইবার সভা করার বিধান রাখা হয়েছে। যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রীর দায়িত্বে যিনি থাকবেন তিনি হবেন বোর্ডের চেয়ারম্যান, ২০ সদস্যের পরিষদ হবে, মনোনীত সদস্যদের মেয়াদ হবে তিন বছর। অধ্যাদেশে অন্যান্য যেসব বিষয় ছিল সেগুলোকে নতুন আইনে আগের মতই রাখা হয়েছে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। বাংলাদেশ ও স্পেনের মধ্যে স্বাক্ষরের জন্য উপস্থাপিত সংস্কৃতি, শিক্ষা ও বৈজ্ঞানিক সহযোগিতা বিষয়ক চুক্তির খসড়া অনুমোদনে এর আগে গৃহীত সিদ্ধান্ত বাতিলের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। শফিউল আলম বলেন, ২০১৪ সালে একটি সিদ্ধান্ত হয় স্পেন সরকার এসব ক্ষেত্রে চুক্তি করতে চায়। পরে স্পেন জানায় তারা শুধু সংস্কৃতি বিষয়ে চুক্তি করতে চায়, শিক্ষা ও বৈজ্ঞানিক বিষয়ে চুক্তি করবে না। সংস্কৃতি বিষয়ে স্পেনের সঙ্গে চুক্তিটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান তিনি।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *