শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি ১১সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধি

শিক্ষাঙ্গন

বিশেষ প্রতিনিধি : শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটি ১১ সেপ্টেম্বর ২০২১ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। গতকাল শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সভাপতিত্বে এক ভার্চুয়াল সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।


বিজ্ঞাপন

সভায় আরো সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় যে, আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী করোনার সংক্রমণের হার ৫ শতাংশ বা তার কম থাকলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া যায়। বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ দেশ বাংলাদেশে বিশাল সংখ্যক শিক্ষার্থী পারিবারিক পরিমণ্ডলে স্বল্প পরিসরে অনেকের সাথে বসবাস করে। করোনার কারণে দীর্ঘ ১৭ মাস শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। শিক্ষার্থীরা বিশেষত শিশু-কিশোরেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে না যেতে পারায় এবং বেশিরভাগ সময় বাড়িতে থাকতে বাধ্য হওয়ায় সমবয়সীদের সাথে মেশা ও অবাধে খেলাধুলা করার সুযোগ না পাওয়ায় তাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর এর বিরূপ প্রতিক্রিয়াসহ সম্ভাব্য সকল নেতিবাচক প্রভাবের বিষয়টি সম্পর্কে সরকার সম্পূর্ণ সচেতন। প্রধানমন্ত্রীর সদয় নির্দেশনা রয়েছে সম্ভব দ্রুততম সময়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার। এ সার্বিক বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার ক্ষেত্রে সংক্রমণের হার ৫ শতাংশ বা তার চেয়ে কিছুটা বেশি থাকলেও ঠিক কোন পর্যায়ে পৌঁছালে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা যায় সে বিষয়ে কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় টেকনিক্যাল পরার্মশক কমিটির পরার্মশ চাওয়া হবে। এ বিষয়ে আগামী সপ্তাহে একটি যৌথ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় স্কুল রিওপেনিং প্ল্যান চূড়ান্ত করে রেখেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার ক্ষেত্রে এই পরিকল্পনা যথাযথ বাস্তবায়ন এবং স্বাস্থ্যবিধি পুরোপুরি মেনে প্রতিষ্ঠান পরিচালনার বিষয়টি কার্যকরভাবে মনিটরিংয়ের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানসমূহ কর্তৃক বাধ্যতামূলক দৈনিক প্রতিবেদন প্রেরণ নিশ্চিতকরণে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহায়তায় ‘চেকলিস্ট’ প্রণয়ন করা হবে আগামী ৭ দিনের মধ্যে।

আগামী সাত দিনের মধ্যে সকল বিশ্ববিদ্যালয় তাদের সকল শিক্ষার্থীর তথ্য নিয়ে, যে সকল শিক্ষার্থীরা এখনও টিকা গ্রহণের জন্য রেজিস্ট্রেশন করেনি কিন্তু শিক্ষার্থীর জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) আছে তাদের তালিকা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে প্রেরণ করবে এবং যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নেই কিন্তু বয়স ১৮ পেরিয়ে গেছে তাদের একটি তালিকা প্রণয়ন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে যাদের এনআইডি নেই কিন্তু বয়স ১৮ এর ওপর তাদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) পাওয়ার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সহযোগিতা চাইবে।

জাতীয় পরিচয় পত্র থাকা সত্ত্বেও যে সকল শিক্ষার্থী এখনও টিকা নিতে পারেনি তাদের এবং শিক্ষক কর্মচারী যাদের এখনও টিকা নেয়া বাকি রয়েছে তাদের টিকাদান সহজ করবার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোকে টিকাদান কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা এবং প্রয়োজনে সকল জেলায় একটি (বা প্রয়োজনে একাধিক হতে পারে) করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কারিগরি সহায়তায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে শুধু শিক্ষার্থী ও শিক্ষক কর্মচারীদের জন্য টিকাদান কেন্দ্র স্থাপন ও পরিচালনারও ব্যবস্থা করা হবে।

সভায় আরো যুক্ত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মোঃ জাকির হোসেন, শিক্ষা উপমন্ত্রী মোঃ মহিবুল হাসান চৌধুরী, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কাজী শহীদুল্লাহ, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মোঃ মাহবুব হোসেন, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মোঃ আমিনুল ইসলাম খান, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব গোলাম মোঃ হাসিবুল আলম, সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যগণ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত কলেজের অধ্যক্ষগণ, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক, সকল বোর্ডের চেয়ারম্যানগণ, দুই মন্ত্রণালয়ের সকল অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বৃন্দ, কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির সভাপতি শেখ কবির, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রীনা ফ্লোরা ও ডা. নাছিমা আখতারসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ।