নানা আয়োজনে হুমায়ূন আহমেদকে স্মরণ

জাতীয় জীবন-যাপন ঢাকা সারাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রয়াত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকীকে গাজীপুরের পিরুজালী গ্রামে নুহাশ পল্লীতে নানা আয়োজনে তাকে স্মরণ করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে নুহাশ পল্লীতে জনপ্রিয় এই লেখকের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান তার ছোট ভাই আহসান হাবীব, তার স্ত্রী আফরোজা আমিন, বোন সুফিয়া হায়দার, রোকসানা আহমেদ, শ্বশুর মোহাম্মদ আলী ও অন্যান্য স্বজনেরা। এ সময় ফুল দিয়ে নুহাশপল্লীর কর্মীরাও হুমায়ূন আহমেদের শ্রদ্ধা জানান। পরে সবাই কবর জিয়ারত ও দোয়া করে হুমায়ূনের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন। ক্যান্সার নিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের একটি হাসপাতালে ২০১২ সালে ১৯ জুলাই মারা যান নন্দিত এ কথাসাহিত্যিক। লেখকের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন এবং তার দুই ছেলে নিশান ও নিনিদ দেশের বাইরে থাকায় তারা মৃত্যুবার্ষিকীর কর্মসূচিতে যোগ দিতে পারেনি। তবে শাওন নিউয়র্কে স্বামীকে নিয়ে একটি স্মরণসভায় যোগ দেবেন বলে তার বাবা মোহাম্মদ আলী জানান। কবর জিয়ারত শেষে লেখকের ছোটা ভাই কার্টুনিস্ট আহসান হাবিব বলেন, হুমায়ূন আহমেদের সকল স্বপ্ন বাস্তাবায়ন করা সম্ভব হয়নি। তবে তার অনেক স্বপ্নই বাস্তবায়িত হয়েছে। ক্যান্সার হাসপাতাল নির্মাণসহ অনেক স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে রয়েছে। তিনি বলেন, হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে পারিবারিকভাবে একটি মিউজিয়াম স্থাপনেরও পরিকল্পনা রয়েছে। তাকে নিয়ে একটি আর্কাইভ নির্মাণ করা হয়েছে। অনেকে হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে গবেষণা করছেন। এ আর্কাইভ গবেষণা কাজে সহায়তা করবে। তিনি প্রকাশক ও সংশ্লিষ্টদের প্রতি হুমায়ূন আহমেদের লেখাগুলো নির্ভুলভাবে প্রকাশের অনুরোধ জানান। হিমু পরিবহণের সভাপতি মো. আসলাম হোসেন জানান, হুমায়ূন আহমেদের সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ‘হিমু পরিবহন’ বাসে করে ঢাকা, ফরিদপুর, নরসিংদী ও গাজীপুর থেকে ৬০জন তরুণ-তরুণী নুহাশ পল্লীতে যান। তরুণরা হুমায়ূন আহমেদের সৃষ্ট জনপ্রিয় চরিত্র ‘হিমু’র বেশভূষায় হলুদ পাঞ্জাবি পড়েছিলেন। আর তরুণীদের পরণে ছিলো নীল শাড়ি। হিমুরা একযোগে ৪০ জেলায় একযোগে তাদের প্রিয় লেখকের স্মরণে নানা কর্মসূচি পালন করছে। তার মধ্যে বৃক্ষরোপন, চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, বইমেলা রয়েছে। হিমুদের উদ্যোগে ইতোমধ্যে ১০টি জেলা পাঠাগার স্থাপন করা হয়েছে। স্মৃতিচারণে লেখকের শ্বশুর মোহাম্মদ আলী বলেন, ২০১২ সালের এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন হুমায়ূন। তিনি নেই, কিন্তু তিনি বেঁচে আছেন লক্ষ পাঠকের হৃদয়ে। নুহাশপল্লীর ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম বুলবুল জানান, দিনটি উপলক্ষে সকাল থেকে কোরআনখানি ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। দুপুরে এলাকার বিভিন্ন মাদ্রাসার এতিম শিশু ছাড়াও অতিথিদের দুপুরের খাওয়ার আয়োজন করা হয়। হুমায়ূন আহমেদ ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোণা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার কুতুবপুরে জন্মগ্রহণ করেন। ডাক নাম কাজল। ফয়জুর রহমান আহমেদ ও মা আয়েশা ফয়েজ দম্পতির প্রথম সন্তান তিনি। এদিকে বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি এবং সৃজনশীল প্রকাশক ও পরিষদের নেতৃবৃন্দরাও নুহাশপল্লীতে হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুবার্ষিকীর কর্মসূচিতে যোগ দেন।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *