এক মহান বীর মুক্তিযোদ্ধা/অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তার সন্তান হয়েও কেন আমার এই করুন পরিনতি,,,?

জীবন-যাপন

নিজস্ব প্রতিনিধি : মোঃ সালাউদ্দিন সোহাগ, পিতা-মরহুম আব্দুল আহাদ(বাচ্চু মজুমদার),সাং-চাপাচোঁ পশ্চিম পাড়া(মজুমদার বাড়ি), ডাকঘর-গুনবতী,থানা-চৌদ্দগ্রাম, জেলা-কুমিল্লা। আমার পিতা মরহুম আবদুল আহাদ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আর্টিলারিতে (ওসিইউ,তার লাল বহি নং-১০৩৪১০৩)পদে দীর্ঘ অনেক বছর চাকুরী করিয়া অত্যন্ত সন্মানের সহিত অবসরপ্রাপ্ত হন। আমার পিতা ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় সেনাবাহিনীর আর্টিলারিতে থাকা অবস্থায় অংশগ্রহণ করে থাকেন । উনি মুক্তিযোদ্ধাদের সময় ১৮টি যুদ্ধ কামানের দায়িত্বে থেকে হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত বোম্পিং করেছিলেন। একদিন মাইন সেট‌আপ করার সময় অসাবধানতাবশত ব্লাস্ট হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন,যাহার কারণে আমার পিতার কানের শ্রবণ শক্তিও হারান।এর কিছুদিন পর চিকিৎসকাধীন অবস্থায় আমার পিতাকে হানাদার বাহিনী বন্ধি করে পাকিস্তানের কারাগারে নিয়ে যায়,সেখানে দেশ ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর সাথে পাশাপাশি রুমে অত্যন্ত অমানবিক ভাবে কারাবন্দি ছিলেন।পরবর্তীতে উক্ত জেল হ‌ইতে সেনাবাহিনী আমার পিতা কে বাহির করেন,এবং দুইটি গোল্ড মেডেল প্রদান করেন। বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা বারবার সুযোগ দেয়া সত্ত্বেও তাহার জীবনদ্দশায় তিনি কখনও মুক্তিযুদ্ধের ভাতার জন্য বা তালিকায় নাম উঠানোর জন্য চেষ্টা কিংবা আবেদন ও করেন নাই, এরকম একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার করুন মৃত্যুর কাহিনী আমি আপনাদের অবগত করতে চাই। আমার পিতার সঙ্গে আমার এক‌ই এলাকার দূঃসম্পর্কের আত্বীয় এবং পাড়া প্রতিবেশী ওৎপ্রেতভাবে জড়িত জনৈক ব্যক্তিবর্গ আমাদের প্রায় ৫০ ডিসিম সম্পত্তি গ্রাস করার জন্য প্রতিনিয়ত আমার পিতাকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করছিল। আমার পিতা সর্বশেষ তার বিগত অনেক গুলো বছর এই সম্পত্তির জন্য মামলাও জীবন যুদ্ধ করতে করতে গত ০৪/০৮/২০২০ইং স্ট্রোক করলে আমরা চৌদ্দগ্রাম সরকারী মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।এবং আমাদেরকে মৃত্যু সনদ প্রদান করেন যাহাতে উল্লেখ ছিল আমার পিতা স্ট্রৌক করে মারা গেছেন। আমরা যথা নিয়মে আমার পিতাকে বাড়িতে দাফন করার জন্য নিয়ে আসার পর উক্ত আমার পিতার জমির মামলার বিবাদী পক্ষদ্বয়ের পাঁয়তারার কারণে এবং বিবাদী পক্ষ মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে ৯৯৯ ফোন করে পুলিশকে মিথ্যা তথ্য দিলে পুলিশ আসিয়া আমার পিতার লাশকে জোর করে নিয়ে যায়। আমরা পুলিশকে সেনাবাহিনীর লোক, মহান মুক্তিযুদ্ধা বঙ্গবন্ধুর সথে কারাবন্দী এবং তাহার লাল বহি দেখানোর পরও তারা কোন কর্ণপাত করে নাই ।এবং বলে যে তারা খবর পাইছে আমার পিতাকে নাকি আমার বোন পাথর দিয়ে হত্যা করেছে। এরপর তারা আমার পিতার মৃত দেহকে গরুর মত গলায় রশি বাঁধিয়া সিএনজি করে অত্যন্ত খারাপ ভাবে নিয়ে যায়। আমরা থানায় গেলে সেখান থেকে পোষ্টমর্টৈম করিয়া কোন প্রকার সমস্যা না পাইয়া আমাদেরকে লাশ বুঝিয়ে দেয়। তারপর আমরা সেনাবাহিনী কুমিল্লা ক্যান্টরমেন্ট এ ফোন দিলে সেনাবাহিনীর টিম আসিয়া আমার পিতার লাশ কে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করে। সেনাবাহিনী চলে যাবার পর বিকেলে আমার বোনকে জমির বিবাদী পক্ষ মারে এবং তার মাথায় হত্যার উদ্দেশ্যে কয়েকটি কোপ দেয়,আমরা সথে সাথে মামলা করি।তার কয়েক মাস পর মামলার জের ধরে আমার মা কেও হত্যার উদ্দেশ্যে শারীরিক ভাবে মারধোর ও জখম করে। আমরা আবারও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে মামলা করি। এমনকি ভিসি, এসপি, চেয়ারম্যান সহ সবাই কে দরখাস্ত করে সশরীরে উপস্থিত হয়ে অবহিত করি ।বর্তমানে আসামি পক্ষের কারণে আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি, এলাকার লোকজন আমাদের পক্ষে থাকলেও আসামি পক্ষ সন্ত্রাসী হ‌ওয়ার কারণে ভয়ে আমাদের পক্ষে কেউ কথা ও বলতে পারছেনা।আমার পিতার মৃত্যুর পর থেকে জমির রায় আমাদের পক্ষে হ‌ওয়াতে ঐসব জমির বিবাদী পক্ষ জোর পূর্বক জমি দখলে নিয়ে আমাদের উপর প্রতিনিয়ত অত্যাচার নির্যাতন জোর জুলুম চালিয়ে যাচ্ছে, আমাদের বাড়ি ঘরে পাথর ও ময়লা আবর্জনা টিনের চালে নিক্ষেপ করে এবং রাতে জোরে জোরে দরজা জানালা ধাক্কা ধাক্কি করে পালিয়ে যায়। তাদের অত্যাচারে আমরা এলাকায় বসবাস করতেও এখন অনেক কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।তারা সন্ত্রাসী হ‌ওয়ায় আমার মা বোন কে মেরেও আসামিরা হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে আমাদের বাড়ির সামনে দিয়ে বুক ফুলিয়ে ঘুরাঘুরি করছে,আমাদেরকে হুমকি ধামকি দিয়ে বলছে বাড়ি থেকে চলে যেতে।আমাদের বসত বাড়িও জমিটুকু ছাড়া আমাদের আর কিছুই নাই,আমার পিতা আবেদন না করাতে আমরা মুক্তিযোদ্ধার কোন প্রকার সু্যোগ সুবিধা কিংবা ভাতাদিও পাইনি।এখন করোনা কালীন সময়ে অনেক অভাব অনটনে এবং সারক্ষণ মৃত্যুর ভয় নিয়ে জীবন যাপন করছি, এমতাবস্থায় কি করবো বুঝতে পারছি না,আমার কাছে সমস্ত প্রমাণ পত্র থাকা সত্ত্বেও সবার দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কিছুই করতে পারছি না,সব জায়গায় শুধু টাকা আর ক্ষমতার খেলা অথচ আমার কাছে দু’টোর একটা ও নেই, অতঃপর আমি ক্ষান্ত হয়ে গেছি, এখন দেশ, জাতি,সকল বীর মুক্তিযোদ্ধা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সহ সকল বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের কাছে আমার আকুল আবেদন আমি এখন কি করবো কোথায় যাব?
মোঃ সালাউদ্দিন সোহাগ, ফোন- ০১৮১৩৬৯৪১৬৬


বিজ্ঞাপন