ঔষধ ও ঔষধের কাচামাল আমদানিতে কি কি নিয়ম কানুন মেনে চলা উচিৎ?

স্বাস্থ্য

আজকের দেশ রিপোর্ট : ঔষধ যেমন একটি জীবন বাচানোর জন্য অতি প্রয়োজনীয় দ্রব্য তেমনি আবার এর অপব্যবহার হলে জীবননাশের কারণও হতে পারে। তাই আমাদের দেশে ঔষধ ও ঔষধের কাচামাল ও ঔষধের মোড়ক সামগ্রী আমাদানির ক্ষেত্রে কিছু শর্ত রয়েছে।


বিজ্ঞাপন

আমদানি নীতি আদেশ ২০১৫-১৮ পর্যালোচনায় দেখা যায়, উক্ত আদেশের ২৪(৬) তে ঔষধ শিল্পের কাচামাল ও মোড়ক সামগ্রী আমদানির বিষয় উল্লেখ আছে।

উক্ত অনুচ্ছেদের বর্ননানুযায়ী কোন স্বীকৃত ঔষধ প্রস্ততকারী শিল্প প্রতিষ্ঠান কর্তৃক তার উৎপাদিত ঔষধের ক্ষেত্রে ঔষধ উৎপাদনে বার্ষিক কি পরিমাণ কাচামাল ও মোড়ক সামগ্রী লাগবে তার বর্ননা, পরিমাণ, মূল্য সম্বলিত তালিকার অনুমোদন মহাপরিচালক ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর হতে নিতে হবে। এমন তালিকাকে ব্লকলিস্ট বলা হয়।

উক্ত তালিকা বা ব্লকলিস্টে ঔষধ, ঔষধের উপকরণ, পরিমাণ, মূল্যের পাশাপাশি কিছু শর্ত বর্নিত থাকে সেই শর্তে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর ব্যাতিত অন্য কোন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ঔষধ/ উপকরণ আমদানিতে পূর্বানুমতি নেওয়ার প্রয়োজন হলে সেই কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিতে হবে।

ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর ব্লকলিস্ট অনুমোদনের পরে এর একটি কপি কাস্টমস কর্তৃপক্ষের নিকট ও একটি কপি প্রধান নিয়ন্ত্রক, আমদানি রপ্তানি কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করতে হবে।

আমদানিকৃত কাচামাল ও মোড়ক সামগ্রীর আমদানি ইনভয়েস, ও এনালাইসিস সনদ মহাপরিচালক ঔষধ প্রশাসন কর্তৃক প্রত্যয়ন অথবা PSI Pre-Shipment inspection Agent প্রত্যয়ন পত্রের ভিত্তিতে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ পন্য খালাস প্রদান করবেন।

অপর দিকে আমদানি নীতি আদেশ অনুচ্ছেদ ২৬(১৬) তে ঔষধ আমদানির বিষয় উল্লেখ আছে উক্ত অনুচ্ছেদের বর্ননা অনুযায়ী ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর কর্তৃক সরাসরি গেজেট বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আমদানিযোগ্য ঔষধের তালিকাভুক্ত ঔষধ সমূহ ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর কর্তৃক পূর্ব অনুমোদন করে তারপর আমদানি করতে হবে।

উক্ত অনুমোদন পত্রে ঔষধের পরিমাণ, ট্রেড নাম, জেনেরিক নাম, মূল্য ঔষধ প্রশাসন কর্তৃক প্রদত্ত রেজিষ্ট্রেশন নং, উৎপাদন তারিখ মেয়াদউত্তীর্ণের তারিখ উল্লেখ থাকতে হবে।

শুধু ঔষধ নয়। ঔষধ ব্যাতিত স্টেরাইল সার্জিক্যাল ব্যান্ডিজ, ডিসপোজেবল সিরিঞ্জ,স্টেরাইল ব্লাড ব্যাগ, Complete Infusion set, Parts and Fitting for infusion set আমদানিতেও ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর প্রত্যয়ন পত্রের ভিত্তিতে পন্য খালাসযোগ্য হবে ।

ব্যাগেজ রুলের আওতায় যাত্রী কর্তৃক নিজের আগমনের ক্ষেত্রে যাত্রীর নিজের অসুস্থতার প্রেস্ক্রিপশেনের আওতায় জরুরী বিবেচনায় যুক্তিসঙ্গত পরিমাণ কিছু ঔষধ আনতে পারবেন, তার জন্য কোন শুল্ককর পরিশোধ করতে হবে না।

তবে যাত্রী কর্তৃক বাণিজ্যিক পরিমান ঔষধ আনা হয়েছে বলে মনে হলে কাস্টমস তা আটক রশিদ দিয়ে (Detention Memo) আটক করবেন । মানে তাৎক্ষণিকভাবে এ ঔষধ শুল্ককর পরিশোধ করেও খালাস নেওয়া যাবে না।

তবে আটককৃত ঔষধ খালাসের নিমিত্তে পরবর্তীতে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ছাড়পত্র দাখিল করা হলে।

আমদানি নীতি আদেশ ভংগের দায়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কর্তৃক ন্যায়নির্নয়ন সাপেক্ষে শুল্ক-করাদি এবং অর্থদন্ড পরিশোধ সাপেক্ষে খালাস নেওয়া যাবে।

যাত্রী কর্তৃক সাথে না এনে পরবর্তীতে ঔষধ আমদানির ক্ষেত্রেও ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের প্রত্যয়ন ছাড়া পন্য খালাস দেওয়া যাবে না।

কোন ঔষধের কেমন শুল্ককর হবে তা ট্যারিফ বইতে বর্নিত হারে হবে। এখানে কিছু কিছু জীবননাশী ঔষধের ক্ষেত্রে শুল্ককর নাও থাকতে পারে সেটা নির্ভর করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ঐ ঔষধ শুল্ককর থেকে অব্যাহতি আছে কিনা। যেমন বর্তমানে Covid-19 Vaccine আমদানিতে কোন শুল্ককর নেই।