বিশ্বে ২২৫ কোটি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হবে

অন্যান্য আন্তর্জাতিক এইমাত্র জাতীয় জীবন-যাপন জীবনী রাজধানী স্বাস্থ্য

জলবায়ু পরিবর্তন-তাপমাত্রা বৃদ্ধি

মহসীন আহমেদ স্বপন : জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে ২০৮০ সালের মধ্যে সারা বিশ্বের ২২৫ কোটি মানুষ ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হবে। বাদ পড়বে না যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার মত উন্নত দেশও।
একটি নতুন গবেষণায় সতর্ক করা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ডেঙ্গু জ্বরের বিস্তার বৃদ্ধি পাচ্ছে। নেচার মাইক্রোবায়োলজি জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণায় দক্ষিণ-পূর্ব আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও জাপানের উপকূলীয় অঞ্চল এবং অস্ট্রেলিয়ার অভ্যন্তরীণ অঞ্চলে ডেঙ্গুর উল্লেখযোগ্য প্রসারের সম্ভাবনা পাওয়া গেছে।
বর্তমানে এ রোগটি ব্রাজিল এবং ভারতের মতো উষ্ণ জলবায়ু পরিবেশে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে বিস্তার পেয়েছে। ডেঙ্গু জ্বর রোগটি প্রথম ১৯৫২ সালে আফ্রিকাতে দেখা যায়। পরবর্তীতে এশিয়ার বিভিন্ন দেশ যেমন- ভারত, শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড, মিয়ানমার এবং ইন্দোনেশিয়াতে এটি বিস্তার লাভ করে। বাংলাদেশে ২০০০ সালে প্রথম এডিসবাহিত ডেঙ্গু রোগীর সন্ধান পাওয়া যায়।
বিশ্বব্যাপী প্রতিবছর, ডেঙ্গুতে ১০ কোটি মানুষ আক্রান্ত হয়। এ রোগের লক্ষণগুলো যথেষ্ট তীব্র, যার মধ্যে জ্বর, হাড়ের জোড়ায় ব্যথা এবং অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ হতে পারে। প্রচ- ব্যথার কারণে এই রোগকে ‘ব্রেক বোন ফিবার’ বলা হয়ে থাকে।
ডেঙ্গুতে প্রতিবছর আনুমানিক ১০ হাজার রোগী মারা যায়। এডিস মশা ডেঙ্গু ভাইরাস সংক্রামিত করে থাকে।
লন্ডন স্কুল অফ হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিকাল মেডিসিনের সহকারী অধ্যাপক ও গবেষণাপত্রের সহ-লেখক অলিভার ব্র্যাডি বলেছেন, আগামী কয়েক বছরে যুক্তরাষ্ট্রে আরও বেশি লোক ডেঙ্গুর ঝুঁকিতে পড়বেন।
বিশ্বব্যাপী, সমীক্ষায় অনুমান করা হয়েছে যে ২০৮০ সালে ২২৫ কোটিরও বেশি মানুষ ডেঙ্গু হওয়ার ঝুঁকিতে পড়তে পারে। যে অঞ্চলগুলোতে এই রোগের বিস্তার হচ্ছে সেখানে জনসংখ্যাও বাড়ছে প্রচ- গতিতে।
২০০০ সালের প্রথম থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত ১০০ বছরে জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য বিশ্বের তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি বাড়তে পারে। আর এর ফলে নতুন নতুন অঞ্চলের উষ্ণতা বৃদ্ধি পাবে। এডিস মশার বিস্তারও বেশি পাবে কারণ এডিস মশা উষ্ণ অঞ্চল পছন্দ করে।
গবেষক ড. ব্র্যাডি এবং তার সহকর্মীরা মশার আচরণ এবং নগরায়নের বিষয়ে গবেষণা করে ধারণা করছেন, এডিস মশা ডেঙ্গু ছড়িয়ে দেয় বিশেষত শহরগুলোতে। আর ২০৮০ বিশ্বে নগরায়ন হবে ৮০ শতাংশ অঞ্চলে। এর ফলে আরো উষ্ণতা বাড়বে।
ব্রাডি বলেন, উষ্ণতা কমাতে পারলেই আমরা এই রোগের বিস্তারও কমাতে পারব।
উষ্ণতা বৃদ্ধি পেলে ডেঙ্গু ভাইরাস প্রসারিত করতে সহায়তা করে কারণ মশা কিছুটা গরম পরিবেশ পেলে আরও বেশি জায়গায় রোগটি ছড়াতে সুবিধা পায়।
গবেষণায় অনুমান করা হয়েছে বিশেষত ইউরোপে এ রোগের প্রকোপ কম হবে। কারণ এখানে বছরের বেশী সময় তাপমাত্রা কম থাকে। এই অঞ্চলে এই রোগের বিস্তার আইবেরিয়ান উপদ্বীপের কিছু অংশ এবং ভুমধ্যসাগরের আশে পাশে সীমাবদ্ধ থাকবে।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *