পিরোজপুরে জেএসসির ফরম পূরণে অতিরিক্ত ফি আদায়!

অপরাধ আইন ও আদালত সারাদেশ

পিরোজপুর প্রতিনিধি : পিরোজপুরের সদরসহ জেলার অধিকাংশ সরকারী ও বেসরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালশের জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি)পরীক্ষায় ফরম পূরণে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এদিকে নির্বাচনী পরীক্ষায় যারা অকৃতকার্য হয়েছে, তাদের গুনতে হয়েছে অতিরিক্ত জরিমানা। জেলার বহু স্কুলের কোমল মতি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে অনেক তথ্য জানা গেছে। সরকারের সদিচ্ছার কারণেই এ বছর বিলম্ব ফিসহ ২৭৫ টাকা ধার্য করেছে শিক্ষা বোর্ড। অথচ জেলার অনেক স্কুল-মাদ্রাসা ৫০০-৭০০টাকা পর্যন্ত আদায় করছে।
জেলা শিক্ষা কার্যালয়ের তথ্যমতে, পিরোজপুরের সদরসহ মঠবাড়ীয়া, ভান্ডারিয়া, কাউখালি, নাজিরপুর ও নেছারাবাদের বেশির ভাগ স্কুল ও মাদ্রাসাগুলোতে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছে স্ব স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো। অথচ নিয়মনীতি ছাড়াই খেয়াল খুশী মত অপরাধ করে যাচ্ছে সুকৌশলে। আর ভুক্তভোগী হচ্ছে অসহায় পরিবারের অভিভবকরা। গত ৩০ শে জুলাই থেকে ৫ই আগষ্ট পর্যন্ত প্রতিটি স্কুল ও মাদ্রাসায় ফরম পূরণ হয়েছে। বিলম্ব ফি দিয়ে ৬ আগষ্ট থেকে ৭আগষ্ট করা হয়েছে ফরম পূরণ।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অনেক প্রতিষ্ঠানে ৭০০ টাকারও অধিক নেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত অর্থ আদায় করতে প্রধান শিক্ষকদের একবারও বিবেক জাগ্রত হয়নি। নাম না প্রকাশের শর্তে সদ্য সরকারি হওয়া এক সরকারি স্কুলের শিক্ষক সাংবাদিকদের বলেন, আসলে আমাদের বিবেক বোধ নষ্ট হয়ে গেছে। আমাদের বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। উনি শেষ সময়েও নীতিহীন ভাবে জগন্য কাজ করে যাচ্ছেন। লোভের কারণে আজও চরম বিতর্কিত, ভগবান ওনাকে ক্ষমা করবে কিনা জানিনা। গত ১৫ জুন সরকারি বয়স শেষ কিন্তু লোভের কারণে বেসরকারি সুবিধা নিতে নিঃলজ্জতার পরিচয় দিচ্ছে। এদিকে একাধিক শিক্ষার্থী বলে, স্কুল শিক্ষকদের নানা জরিমানা, স্কুলের কল্যাণ তহবিলসহ বিভিন্ন বিষয় দেখিয়ে অতিরিক্ত অর্থ নিচ্ছে। তাদের চাহিদা মত অর্থ না দিলে শিক্ষকেরা ফরম পূরণ করবে বলে হুমকিও দেয়। আসলে চলতি সময় থেকে বিগত সময়ে জেএসসি ও এসএসসির ফরম পূরণের সময় কিছু কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন অজুহাত দিয়ে বাড়তি ফায়দা হাসিলের জন্য ব্যাস্ত থাকে। এ ব্যাপারে জেলা শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাজী ওবায়দুর হক গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, জেলার বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান ২৫০ টাকায় ফরম পূরণ করেছে। তবে দু একটা স্কুল অতিরিক্ত অর্থ একটু নিয়েছে। তবে উপজেলায় একটু অনিয়ম বেশি হয়েছে। এদিকে জেলার আর এক শিক্ষক নেতা নাম না প্রকাশের শর্তে গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, নাজিরপুর ও নেছারাবাদের বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান অনিয়ম করেছেন। যেমন স্বরূপকাঠি সরকারি পাইলটের প্রধান শিক্ষক স্বপন দত্ত বিগত সময় থেকেই চরম বিতর্কে জড়িয়ে প্রতিষ্ঠানের বারোটা বাজিয়েছেন। ভাগ্য ভালো সরকারি হয়েছে তাই হয়তো সকল দূর্ণীতির হাত থেকে রক্ষা পেতে পারেন। তবে দুদক যদি অডিট পরিচালনা করেন তাহলে খবর আছে। বিগত সময়ের আয় ও ব্যায়ের হিসাব নিলেই দত্ত বাবু দূর্ণীতিতে ফেঁসে যাবেন বলে জেলার বিজ্ঞ শিক্ষকরা মনে করেন। এদিকে বিতর্কিত না হয়ে অনেক শিক্ষকরা অকপটে স্বীকারও করেছেন যে আমরা স্কুলের স্বার্থে গড়ে ৪০০ টাকার মত অর্থ নিয়েছি।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. আজাহারুল ইসলাম বলেন, জেএসসির ফরম পূরণে কোন টাকা নেওয়ার নিয়মনীতি নেই। জেলার যে সমস্ত উপজেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যদি বাড়তি অর্থ নেয় তাহলে সেটা মহা অন্যায়। বিষয়টি খতিয়ে দেখারও কথাও বলেন গণমাধ্যমকর্মীদের। পাশাপাশি ঘটনার সত্যতা পেলে এদের বিরুদ্ধে আইনানুসারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *