জালিয়াতি করে ওসি-এসআই ধরা

অপরাধ আইন ও আদালত এইমাত্র জাতীয় ঢাকা রাজধানী

বিশেষ প্রতিবেদক : স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ৩৫ লাখ টাকার চেক জালিয়াতি ও ভুয়া স্বাক্ষর দিয়ে তুলতে গিয়ে গ্রেফতার হয়েছেন ঢাকা রেঞ্জের এক পরিদর্শক (ওসি) ও উপ-পরিদর্শক (এসআই)। সরকারি কর্মচারী হয়েও স্বেচ্ছায় পরস্পর যোগসাজশে জালিয়াতির মাধ্যমে চেকে ভুয়া স্বাক্ষর করে টাকা উত্তোলনের চেষ্টা করার অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার আসামিদের ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ। এসময় মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাদের জেলে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা রমনা থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম মোরশেদ আল মামুন ভুইয়া তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
কারাগারে যাওয়া দুই পুলিশ সদস্য হলেন- ঢাকা রেঞ্জের পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) মীর আবুল কালাম আজাদ (৪৫) ও উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোস্তাফিজুর রহমান (৩৮)।
মীর আবুল কালাম আজাদ নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানার দেলপাড়া গ্রামের মৃত জাফর আলী খানের ছেলে এবং মোস্তাফিজুর রহমান টাঙ্গাইল সদরের বায়েটা গ্রামের আকবর হোসেনের ছেলে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম বলেন, আসামিরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রধান হিসাবরক্ষক কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে ৩৫ লাখ টাকার চেক সংগ্রহ করে। তারা চেকটি লিখে জাল স্বাক্ষর করে সোনালী ব্যাংক কাকরাইল শাখায় জমা দেয়। চেকের স্বাক্ষরের সাথে নমুনা স্বাক্ষরের মিল না থাকায় বাংলাদেশ ব্যাংক আমাকে ফোন করে।
তিনি আরও বলেন, আসামিরা ডিআইজি ঢাকা রেঞ্জ অফিসে ক্যাশ শাখায় কর্মরত ছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে সরকারী কর্মচারী হয়েও স্বেচ্ছায় পরস্পর যোগসাজশে জালজালিয়াতির আশ্রয়ে চেকে ভুয়া স্বাক্ষর করে টাকা উত্তোলনের চেষ্টা করার অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে।
মামলার বাদী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রধান হিসাবরক্ষক কার্যালয়ের নীরিক্ষা ও হিসাব কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, আসামিরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রধান হিসাবরক্ষক কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে ৩৫ লাখ টাকার চেক সংগ্রহ করে। তারা চেকটি নিজেরা লিখে জাল স্বাক্ষর করে সোনালী ব্যাংক কাকরাইল শাখায় জমা দেয়। চেকের স্বাক্ষরের সাথে নমুনা স্বাক্ষরের মিল না থাকায় বাংলাদেশ ব্যাংক বাদীকে ফোন করে।
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে মীর আবুল কালাম আজাদ ও মোস্তাফিজুর রহমানের নামে রমনা থানায় পেনাল কোডের ৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/৩৪ ধারায় মামলা করি।
শফিকুল ইসলাম মামলার অভিযোগে বলেন, মামলার আসামি ঢাকা রেঞ্জের পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) মীর আবুল কালাম আজাদ (৪৫) ও উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোস্তাফিজুর রহমান (৩৮) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রধান হিসাবরক্ষক কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে ৩৫ লাখ টাকার চেক সংগ্রহ করে। গত ২৪ জুলাই নিজেরা চেক লিখে জাল স্বাক্ষর করে সোনালী ব্যাংক কাকরাইল শাখায় জমা দেয়।
২৮ জুলাই বাংলাদেশ ব্যাংক আমাকে ফোন করে জানায় যে, ওই চেকের সাথে নমুনা স্বাক্ষরের মিল নেই। তখন আমি সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজারকে আসামিদের নামের হিসাবে জমা না করার জন্য অনুরোধ করি এবং বাংলাদেশ ব্যাংকে ওই চেকটির ক্লিয়ারেন্স না দেওয়ার জন্য অনুরোধ করি। আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে জাল-জালিয়াতির আশ্রয়ে ভুয়া স্বাক্ষর করে সোনালী ব্যাংক কাকরাইল শাখা থেকে ৩৫ লাখ টাকা উত্তোলনের চেষ্টা করে। জাল জালিয়াতি ও ভুয়া স্বাক্ষরের বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করি। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে ঢাকা ডিআইজি রেঞ্জ অফিসে কর্মরত পুলিশের সহায়তায় তাদের বিরুদ্ধে ২৮ আগস্ট রমনা থানায় মামলা করি।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *