পাওনা না মিটিয়ে উল্টো বিটিআরসির বিরুদ্ধে মামলা

অপরাধ আইন ও আদালত এইমাত্র জাতীয়

নিজস্ব প্রতিবেদক : অডিপ আপত্তির ‘পাওনা’ টাকা আদায়ে বিটিআরসির দাবিকে ‘অযৌক্তিক ও ত্রুটিপূর্ণ’ মন্তব্য করে মীমাংসার জন্য পৃথক মামলা করেছে দেশের দুই শীর্ষ মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোন ও রবি। ঢাকার দেওয়ানি আদালতে গত ২৫ আগস্ট রবি এবং ২৬ আগস্ট গ্রামীণফোন মামলা দুটি দায়ের করে।


বিজ্ঞাপন

মামলার বিষয়ে গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানায়, ‘যে অডিটের ভিত্তিতে বিটিআরসি অযৌক্তিক অর্থ দাবি করছে সেটার প্রক্রিয়া, কার্যপ্রণালী এবং ফলাফল নিয়ে আমরা বরাবরই আপত্তি জানিয়ে এসেছি। ত্রুটিপূর্ণ ওই অডিট ঘিরে সৃষ্ট অচলাবস্থার নিরসনে আমরা বারবার সালিশী প্রক্রিয়াসহ স্বচ্ছ গঠনমূলক আলোচনার আহ্বান জানিয়েছি।

কিন্তু তাতে সাড়া না পেয়ে হতাশা প্রকাশ করে গ্রামীণফোন জানায়, ‘দুঃখজনকভাবে আমাদের সকল প্রচেষ্টা বিটিআরসি অগ্রাহ্য করেছে এবং এই অযোক্তিক অডিট দাবি আদায়ে অন্যয্যভাবে বল প্রয়োগ করেই যাচ্ছে। এরই প্রেক্ষিতে গত ২৬ আগস্ট গ্রামীণফোন একটি দেওয়ানি মামলা দায়ের করতে বাধ্য হয়েছে। বিষয়টি এখন মহামান্য আদালতে বিবেচনাধীন।’

রবি আজিয়াটা লিমিটেডের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘বিটিআরসির নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উত্থাপিত প্রশ্নবিদ্ধ আপত্তিসমূহ আলাপ-আলোচনা এবং বিকল্প সালিশ নিষ্পত্তির (আরবিট্রেশন) মাধ্যমে সমাধানে আমরা সর্বোচ্চ আন্তরিকতার সাথে চেষ্টা করেছি। কিন্তু দুঃখজনকভাবে বিটিআরসি আমাদের সে প্রস্তাবে সাড়া না দিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ নিরীক্ষা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দাবিকৃত অর্থ আদায়ে আইন বহির্ভূত পদক্ষেপ নিয়েছে।’

এই পরিস্থিতিতে আদালতে যাওয়া ছাড়া রবির বিকল্প ছিল না দাবি করে প্রতিষ্ঠানটির চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার শাহেদ আলম বলেন, বিষয়টি বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন এবং এ বিষয়ে এ মুহূর্তে আর কোনো মন্তব্য করা সমীচিন নয় বলে আমরা মনে করছি।

বিটিআরসির দাবি, গ্রামীণফোনের কাছে নিরীক্ষা আপত্তির দাবির ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা এবং রবির কাছে ৮৬৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে তাদের। টাকা শোধে বিলম্বের মাশুল ও সুদও ধরা হয়েছে এর মধ্যে।

প্রথম ধাপে ব্যান্ডউইথ কমিয়ে দিয়ে এবং দ্বিতীয় ধাপে বিভিন্ন ধরনের সেবার অনুমোদন ও অনাপত্তিপত্র দেওয়া বন্ধ রেখেও কাজ না হওয়ায় গত ৫ সেপ্টেম্বর ‘চূড়ান্ত’ পদক্ষেপে যায় সরকার।

টাকা না দেওয়ায় গ্রামীণফোন ও রবির টু জি ও থ্রি জি সেবার লাইসেন্স কেন বাতিল করা হবে না- তা জানতে চেয়ে দুই অপারেটরকে ‘কারণ দর্শাও’ নোটিস পাঠায় টেলিযোগাযোগ খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি।

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন ২০০১ এর ৪৬(২) ধারা অনুযায়ী মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোন ও রবির টু জি ও থ্রি জি সেবার লাইসেন্স কেন বাতিল করা হবে না, আগামী ৩০ দিনের মধ্যে তা জানাতে বলা হয় নোটিশে।

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নোটিসের জবাব না দিলে বা পাওনা টাকা পরিশোধ না করলে পরবর্তী পদক্ষেপ বিষয়ে সোয়া ১২ কোটি গ্রাহকের এই দুই অপারেটরে প্রশাসক নিয়োগের মত পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে বলেও বিটিআরসির পক্ষ থেকে জানানো হয়।

তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বিটিআরসির ওই নোটিসকে ‘অযৌক্তিক’ আখ্যায়িত করে গ্রামীণফোন বলেছিল, নিয়ন্ত্রক সংস্থার এই ‘অন্যায্য’ পদক্ষেপের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থাই তারা নেবে।

আর রবি হুঁশিয়ার করেছিল, এই পদক্ষেপের ফলে বিনিয়োগকারী ও গ্রাহকদের মধ্যে বিরূপ প্রভাব পড়বে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *