শোভন-রাব্বানীকে চ্যালেঞ্জ

অপরাধ এইমাত্র ঢাকা রাজধানী রাজনীতি

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি : ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন এবং সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী তার বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা গল্প’ বলছেন দাবি করে তাদের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফারজানা ইসলাম। নিজেকে স্বচ্ছ দাবি করে দুর্নীতি নিয়ে ওঠা বিষয়ে ভালো অনুসন্ধানের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।


বিজ্ঞাপন

শনিবার দুপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জাবি ভিসি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী যে চিঠি দিয়েছে, সেই গল্পটা তাদের সাজানো অপপ্রচার। আমি জোরের সাথে বলছি, গল্পটা মিথ্যা। তারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা গল্প ছুড়ছে, আমি তাদের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছি প্রমাণ করতে। শুধু তাদের না, আমি অনুসন্ধান করতে বলছি আপনাদেরকে (সাংবাদিকদের)। আমি তদন্ত করতে বলব চ্যান্সেলর এবং ইউজিসিকে, যে তদন্ত করে দেখুন আসল সত্যটা কী।’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের দুর্নীতি নিয়ে নতুন গুঞ্জন কয়েক দিন ধরেই ডালপালা মেলছে। এতদিন বিভিন্ন গণমাধ্যমে উপাচার্যের মধ্যস্থতায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগকে দুই কোটি টাকা ভাগ করে দেয়ার অভিযোগ উঠে। এরমধ্যেই কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর একটি বিবৃতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। যেখানে তিনি দাবি করেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগকে এক কোটি ৬০ লাখ টাকা দেয়া হয়েছে। এই বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হলে তারা উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করেন। কিন্তু টাকার বিষয়ে তারা কিছু জানেন না।

তবে পাল্টা বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ ‘কোনো টাকা লেনদেন হয়নি’ দাবি করে রাব্বানীর বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগ আনে। শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ অফিস ও জাবি শাখা ছাত্রলীগ পৃথক পৃথক বিবৃতি দেয়।

একদিন পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ফারজানা বলেন, ‘শোভান-রাব্বানী এখন বলছে, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগকে এক কোটি ৬০ লাখ টাকা দেয়া হয়েছে। কিন্তু তারা আমার কাছে চার থেকে ছয় শতাংশের দাবি নিয়ে এসেছিল, সেটি তো একবারও বলেনি।’

‘তারা বলেছিল, অন্য জায়গায় কাজের পার্সেন্টেজ অনেক বেশি, আমাদের এখানে শোনা যাচ্ছে কম। এত কমে তো পারা যাবে না। আমি (উপাচার্য) বলেছি, আমি কমানো-বাড়ানোর কেউ না। আমার সাথে টাকা নিয়ে কোনো কথা বলবে না। তোমরা সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে আসছ, সাক্ষাৎ হয়ে গেলে তোমরা চলে যেতে পার।’

উপাচার্য বলেন, ‘ছাত্রলীগ আমাকে ব্যবহার করতে চেয়েছে। তারা দেখেছে জাহাঙ্গীরনগরে আন্দোলন চলছে, এই সুযোগে তাদের অপকর্ম ঢাকতে। এজন্য আমাকে জড়িয়ে টাকা দেয়ার বিষয়টা ট্যাগ করে দিয়েছে।’

ভিসি বলেন, ‘কিছু লোক আছে যারা আমাকে দুর্নীতিগ্রস্ত বানানোর জন্য চেষ্টা করছে। আমি এসবকে ভয় পাই না। আমার মনে হয় এসব নিয়ে ভালো অনুসন্ধান হওয়া দরকার।’

তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, ‘আমি যখন হাসপাতালে ছিলাম তখনও শোভন-রাব্বানী আমাকে ছাড় দেয়নি। রাত ১১টার পর হাসপাতালে গিয়ে আমার সাথে শিডিউল নিয়ে কথা বলেছে। আমি যখন শুনলাম আমার কক্ষের বাইরে এবং হাসপাতালের নিচে প্রায় ৩০০ ছেলে এসেছে তখন আমি অনিরাপদ বোধ করেছিলাম। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা লোকজন আরও দুঃশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছিল। কারণ, আমার ঠিক উল্টো পাশে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াও ভর্তি ছিলেন।’


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *