সড়ক আইন: প্রথম দিনে সোয়া লাখ টাকা জরিমানা

অপরাধ আইন ও আদালত এইমাত্র

নিজস্ব প্রতিবেদক : নতুন সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়নে সোমবার রাজধানীর আটটি পয়েন্টে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়। প্রথম দিনই বিভিন্ন কারণে বেশ কিছু গাড়ির মালিক ও চালককে এক লাখ ২১ হাজার ৯শ’ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। দেয়া হয়েছে ৮৮টি মামলা।


বিজ্ঞাপন

এদিন রাজধানীর আটটি স্পটে বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী বাসসহ ব্যক্তিগত গাড়ির ফিটনেস, রুট পারমিট, ট্যাক্স টোকেন, চালকের লাইসেন্স ইত্যাদি পরীক্ষা করা হয়।

২০১৮ সালের শেষ দিকে পাস হওয়া সড়ক পরিবহন আইনটি নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর গত ১ নভেম্বর থেকে কার্যকর করা হয়। তবে শুরুতে আইনটি কঠোরভাবে প্রয়োগ না করে ১৭ দিন ধরে সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালায় পুলিশ। সে সময় এই আইনের বিভিন্ন ধারার সাজাগুলো কঠোরভাবে প্রয়োগ করা হবে বলেও চালক ও মালিকদের সতর্ক করে দেওয়া হয়। যাত্রীদেরও এই আইনের অধীনে রাস্তা পারাপারসহ বিভিন্ন বিষয়ে সতর্ক থাকার জন্য বিভিন্ন স্পটে মাইকিং করে প্রচারণা চালায় ট্রাফিক বিভাগ। এই প্রচারণা শেষ হওয়ার পর আজ থেকে এ আইন প্রয়োগে মাঠে নেমেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

সোমবার সকাল থেকেই রাজধানীর উত্তরা, বনানী, মতিঝিল, মিরপুর, যাত্রাবাড়ী ও মানিক মিয়া এভিনিউ এলাকায় অভিযান চালায় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ অভিযানে যেসব যানবাহনের ফিটনেস, রুট পারমিট, ট্যাক্স টোকেন হালনাগাদ এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিল না বলে তাদের জরিমানা করা হয়। আটটি স্পটে অভিযানের মধ্যে প্রথম দিনে ভ্রাম্যমাণ আদালত মোট জরিমানা করেছে এক লাখ ২১ হাজার ৯শ’ টাকা।

রাজধানীর যাত্রাবাড়ী স্পটটির অধীনে রায়েরবাগ, শনির আখড়া, ধোলাইপাড় ও সায়েদাবাদ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন বিআরটিএ’র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাজহারুল ইসলাম। তিনি জানান, সকাল থেকে শুরু হওয়া মোবাইল কোর্ট চলে দুপুর পর্যন্ত। অভিযানে ২৪টি পরিবহনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে এবং জরিমানা আদায় করা হয়েছে ৫২ হাজার টাকা। এসব গাড়ির ফিটনেস, রুট পারমিট, ট্যাক্স টোকেন এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিল না বলে জরিমানা করা হয়। তাছাড়া ভারী যানবাহন হালকা যানের লাইসেন্স দিয়ে চালানোর মতো ঘটনাও আমরা দেখেছি।

বিআরটিএ’র ভ্রাম্যমাণ আদালত-৭ এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ হাসান পাটোয়ারী ও ভ্রাম্যমাণ আদালত-৮ এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ সাদিয়া তাজনীন মানিক মিয়া এভিনিউয়ের দুই পাশে একইসঙ্গে অভিযান পরিচালনা করেন। সংসদ ভবন এলাকায় পরিচালিত এই দুই আদালত বিভিন্ন পরিবহনের বিরুদ্ধে ৩০টি মামলা করেন, জরিমানা করা হয় ২৭ হাজার ৫শ’ টাকা।

এসময় ভাড়ার তালিকা না রাখাসহ কম সিট দেখিয়ে বেশি সিট বানানো ও নারীদের জন্য আসন বরাদ্দ না রাখার কারণে গণপরিবহনগুলোকে জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। একইসঙ্গে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে দৈনন্দিন যেসব ঝামেলার মুখোমুখি হতে হয় সেগুলো জানাতে থাকেন যাত্রীরা। গাড়ির পরিচ্ছন্নতা, বাসে ওঠা নামায় জোর-জবরদস্তিসহ নানা বিষয়ে সমাধান চান তারা। হায়দার নামে এক যাত্রী বলেন, আমরা ভাড়া দিয়ে বাসে যাতায়াত করি কিন্তু, এমন আচরণ করা হয় যেন, এই বাসে আমাকে উঠিয়ে বিশেষ দয়া দেখানো হচ্ছে। যাত্রীদের অভিযোগগুলো বিবেচনায় নিলে নাগরিক অধিকার নিশ্চিত হবে আশা করি।

উভয় ম্যাজিস্ট্রেট জানান, অভিযানের মূল উদ্দেশ্য নতুন আইনের প্রয়োগ। তবে সাধারণ মানুষকে সচেতন করার জন্য সর্বনিম্ন জরিমানা করা হচ্ছে। অভিযানে গাড়ির ফিটনেস রেজিস্ট্রেশন, ট্যাক্স টোকেন, চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্সের ব্যত্য় পেলে মামলা ও জরিমানা করা হচ্ছে । তবে এখনও কাউকে জেল দেওয়া হয়নি।’

এছাড়া বনানীতে অভিযান পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এম এম সামিরুল ইসলাম। তিনি মোট ১১টি মামলায় জরিমানা করেন ২১ হাজার টাকা। সামিরুল ইসলাম বলেন, বাসচালকরা কিছুটা আতঙ্কিত নতুন আইন নিয়ে। তবে আমরা সচেতন করার জন্যই মূলত সর্বনিম্ন পর্যায়ে জরিমানা করছি। আমাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম প্রতিদিনই চলবে


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *