শেখ হাসিনার জন্য প্রস্তুত ইডেন গার্ডেন

আন্তর্জাতিক এইমাত্র ক্রিকেট খেলাধুলা

স্পোর্টস ডেস্ক : ইডেন গার্ডেনে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচ দেখতে শুক্রবার সকালে কলকাতায় যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে গোলাপী বলের দিন-রাতের ঐতিহাসিক টেস্ট ম্যাচটি দেখতে যাচ্ছেন তিনি। এর আগে ২২-২৬ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া টেস্ট ম্যাচটি দেখার জন্য ভারতের ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান সৌরভ গাঙ্গুলীও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।


বিজ্ঞাপন

শুক্রবার সকাল ১০ টা ২৫ মিনিটে কলকাতায় নামছেন শেখ হাসিনা। দমদম বিমানবন্দরেই তাকে স্বাগত জানাবেন ভারতীয় ক্রিকেটের বোর্ড প্রেসিডেন্ট সৌরভ গাঙ্গুলী। বিমানবন্দরে আনুষ্ঠানিকতা শেষে কলকাতাল হোটেল তাজে যাবেন প্রধানমন্ত্রী। সংক্ষিপ্ত সফরকালে সেখানেই অবস্থান করবেন তিনি। পরে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে (স্থানীয় সময়) ইডেন গার্ডেন স্টেডিয়ামে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর সঙ্গে ঘণ্টা বাজিয়ে ঐতিহাসিক টেস্ট ম্যাচটির উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাকে সঙ্গ দেবেন সৌরভ গাঙ্গুলী, বিসিসিআই সচিব জয় শাহ, সাবেক ক্রিকেটার শচীন টেন্ডুলকার, রাহুল দ্রাবিড়, নাঈমুর রহমান দুর্জয়, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ও সিএবির কয়েকজন কর্মকর্তা।

খেলা দেখতে ইডেনে উপস্থিত থাকবেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ, ভিভিএস লক্ষ্মণ, টেনিস তারকা সানিয়া মির্জা, ব্যাডমিন্টন তারকা পিভি সিন্ধু, বিশ্বজয়ী বক্সার মেরি কমসহ একঝাঁক ব্যক্তিত্ব। ভিভিআইপিদের দিকটি মাথায় রেখে কড়া নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হচ্ছে গোটা ইডেন চত্বর।

বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যেকার টেস্ট ম্যাচটির প্রথম সেশন স্টেডিয়ামে বসে উপভোগের পর আবার হোটেলে ফিরে যাবেন শেখ হাসিনা। প্রথম দিনের খেলা শেষে সন্ধ্যায় আবারও ইডেনের মাঠে ফিরে আসবেন তিনি। সেখানে সংক্ষিপ্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পর ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গল আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেবেন শেখ হাসিনা।

এরপর ২০০০ সালে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে আয়োজিত প্রথম টেস্টে খেলা দুই দলের ক্রিকেটারদের সংবর্ধনা দেওয়া হবে। ইডেনেই শেখ হাসিনা, মমতা ব্যানার্জি, অমিত শাহ, সৌরভ, শচীন, নাজমুলরা তাদের সক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখবেন। ইডেন টেস্টেই শেখ হাসিনাকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে বিশ্ব বাংলার তৈরি ডিজাইনার শাড়ি ও অন্য উপহারসামগ্রী তুলে দেওয়া হবে। তবে অনুষ্ঠানের পর গোলাপি রঙের আতশবাজি প্রদর্শনী হওয়ার কথা থাকলেও শেখ হাসিনার নিরাপত্তার কথা ভেবে তা বাতিল হতে পারে। সংগীত পরিবেশন করবেন বাংলাদেশের রুনা লায়লা, কলকাতার জিৎ গাঙ্গুলী।

জানা গেছে, শেখ হাসিনার নিরাপত্তা এমন থাকবে, সেখানে সমস্ত সিএবি সদস‌্যরাও ক্লাবহাউস সংলগ্ন জায়গায় থাকতে পারবেন না। সিএবিকে বলে দেওয়া হয়েছে, কিছু কর্তা থাকতে পারবেন। তবে যারা থাকবেন, সেটা আগে থেকে তালিকা করে জানিয়ে দিতে হবে। তার বাইরে একজন লোকও সেখানে থাকতে পারবেন না।

পরে কলকাতায় একদিনের সংক্ষিপ্ত সফর শেষ করে নেতাজী সুবাস চন্দ্র বোস বিমানবন্দর থেকে রাত ১০টায় (ভারতীয় সময়) দেশের উদ্দেশে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিশেষ বিমানে উঠবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাত সাড়ে ১১টার দিকে (বাংলাদেশ সময়) তার ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা রয়েছে।

এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের জানান, পূর্ব নির্ধারিত অন্যান্য ব্যস্ততার কারণে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কলকাতায় শেখ হাসিনার সঙ্গে যোগ দেবেন না। তবে শেখ হাসিনাকে রাষ্ট্রীয় অতিথির মর্যাদা দেয়া হবে।

ইডেনে দিবারাত্রির টেস্ট আকর্ষণীয় করে তুলতে আয়োজকদের চেষ্টার কমতি নেই। কিন্তু সব উদ্যোগ তখনই পূর্ণতা পাবে, যখন মাঠের খেলাটা হবে জমজমাট। আয়োজকেরা আশাবাদী, দুই দলই উপহার দেবে রোমাঞ্চকর এক ম্যাচ।

গোলাপি বলের টেস্ট উপলক্ষে ভারতের যত আয়োজন—

* ঢাউস গোলাপি রাঙা হিলিয়াম বেলুন ওড়ানো হয়েছে ইডেনে।

* এই টেস্ট উপলক্ষ্যে থাকছে বিশেষ দুটি মাসকট ‘পিংকু-টিংকু’।

* টেস্ট শুরুর আগে নামবে আট প্যারা ট্রুপার। ভারতীয় বিমানবাহিনী এটা তত্ত্বাবধান করবে। আটজন আটটি গোলাপি বল নিয়ে নামবে। তাঁরা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্র্রী ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে হস্তান্তর করবেন গোলাপি বল।

* বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী দুই দলের অধিনায়ককে গোলাপি বল হস্তান্তর করবেন।

* টস করতে সোনার তৈরি বিশেষ কয়েন ম্যাচ রেফারিকে হস্তান্তর করবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ।

* দুই দেশের জাতীয় সংগীত বাজাবে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।

* জাতীয় সংগীতের পর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বাজাবেন ইডেনের ঘণ্টা।

* এই টেস্টে উপস্থিত থাকতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে ভারতের সাবেক সব অধিনায়ককে। তাঁরা ল্যাপ অব অনার দেবেন, প্রদক্ষিণ করবেন পুরো মাঠ। এটা হবে চা বিরতিতে।

* অন্য খেলার ভারতীয় কিংবদন্তি যেমন—বক্সিংয়ে মেরি কম, টেনিসের সানিয়া মির্জা, শুটিংয়ে অভিনব বিন্দ্রাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

* আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে ২০০০ সালের নভেম্বরে অভিষেক টেস্ট খেলা বাংলাদেশ দলের সব খেলোয়াড়কে।

* মাঠে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন দুই শ নৃত্য শিল্পী।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *