বায়ুদূষণে সবাইকে ছাড়িয়ে বাংলাদেশ

এইমাত্র জাতীয় জীবন-যাপন ঢাকা রাজধানী

দূষণবিরোধী অভিযানে ১৪ কারখানার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন


বিজ্ঞাপন

 

বিশেষ প্রতিবেদক : ভারত, পাকিস্তানসহ বিশ্বের সবক’টি দেশকে পিছনে ফেলে বায়ু দুষণ তালিকার একেবারে উপরে উঠে উঠেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের চেয়ে প্রায় ২১ পিএম কম বায়ু দূষণ নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তান। এরপরেই ভারত, আফগানিস্তান ও বাহরাইনের অবস্থান।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বৈশ্বিক বায়ু দূষণ পর্যবেক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান এয়ার ভিজ্যুয়ালের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে গড় বায়ু দূষণের পরিমাণ ৯৭ দশমিক ১০। অন্যদিকে পাকিস্তানের ৭৪ দশমিক ২৭, ভারতের ৭২ দশমিক ৫৪, আফগানিস্তানের ৬১ দশমিক ৮০ এবং বাহরাইনের বায়ু দূষণের পরিমাণ ৫৯ দশমিক ৮০ পিএম ২.৫।
এয়ার ভিজ্যুয়াল ঘণ্টায় ঘণ্টায় বায়ু দূষণের তথ্য হালনাগাদ করে। সোমবার সকাল ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত বিশ্বে সবচেয়ে দূষিত বায়ুর শহরের মধ্যে ৫ নম্বরে ছিল ঢাকা। ওই সময় ঢাকা শহরে বায়ু দূষণের পরিমাণ ছিল ১৭১ পিএম। তখন ২০৯ পিএম নিয়ে প্রথমে ভারতের দিল্লি, তারপর ১৯২ পিএম নিয়ে পাকিস্তানের লাহোর, ১৮৭ পিএম নিয়ে কলকাতা ও ১৮২ পিএম নিয়ে মঙ্গলিয়ার উলানবাতর চতুর্থ স্থানে ছিল।
তীব্র বায়ু দূষণের কারণে ভারতসহ বিভিন্ন দেশ সতর্কতা জারি এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে বায়ু দূষণ নিয়ে এখন পর্যন্ত এ ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি বাংলাদেশ। কোনো রকম নাগরিক সচেতনা বাড়ানোর প্রচেষ্টাও লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।
দূষণবিরোধী অভিযানে ১৪ কারখানার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন : বায়ুদূষণ বিরোধী অভিযান চালিয়ে রাজধানীর শ্যামপুর লাল মসজিদ এলাকায় ১৪টি কারখানার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে পরিবেশ অধিদফতর। পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালক রুবিনা ফেরদৌসের নেতৃত্বে সোমবার দুপুর ১টা ১৮মিনিটের দিকে এ অভিযান শুরু হয়।
উচ্চ আদালতের নির্দেশে এ অভিযান চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন রুবিনা ফেরদৌস।
তিনি বলেন, যেসব কারখানায় তরল বর্জ্য থাকে সেখানে ইটিপি (তরল বর্জ্য পরিশোধনাগার) ও এটিপি (এয়ার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট) থাকা বাধ্যতামূলক। কিন্তু আমরা যেসব কারখানার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছি তাদের ইটিপি ও এটিপি ব্যবস্থা নেই। তাই আদালতের নির্দেশে অভিযান চালিয়ে আমরা এ পদক্ষেপ নিয়েছি।
আদালতের কী নির্দেশ আছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কারখানা বন্ধ করে দেয়ার নির্দেশ আছে। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিলে কারখানা তো বন্ধ হয়েই যাবে।
পরিবেশ অধিদফতরের এই পরিচালক আরও বলেন, এখানে যে কারখানাগুলো আছে তার অধিকাংশের বায়ুদূষণ রোধ সংক্রান্ত কোনো ব্যবস্থা নেই। আমরা ১৪টি কারখানার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছি। এছাড়া ২৫টি কারখানায় আদালতের তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। নিষেধাজ্ঞা শেষ হলে ওগুলোতেও আমরা অভিযান চালাব।
রুবিনা ফেরদৌসের নেতৃত্বে চলা এ অভিযানে পরিবেশ অধিদফতরের মহানগরের পরিচালক সোহরাব আলী, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাকসুদুল ইসলাম ও কাজী তামজিদা আহমেদ অভিযানে অংশ নিচ্ছেন।
এর আগে বায়ুদূষণ বিরোধী অভিযান চালাতে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে র‌্যাব ও পুলিশ নিয়ে হাজির হন পরিবেশ অধিদফতরের কর্মকর্তারা। পাশাপাশি অভিযানে অংশ নিতে ওয়াসা ও বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারাও আসেন।
র‌্যাব ও পুলিশ নিয়ে পরিবেশ অধিদফতরের কর্মকর্তারা শ্যামপুর লাল মসজিদের সামনে উপস্থিত হওয়ার পর মসজিদের বিপরীত দিকে অবস্থিত সালমান প্লাজা সুপার মার্কেটের সামনে অবস্থান নেন একদল শ্রমিক। এরপর দুপুর ১২টার দিকে ঘটনা স্থলে আসেন স্থানীয় সংসদ সদস্য বাবলা। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তিনি অভিযানে নেতৃত্ব দেয়াদের অভিযান না চালানোর অনুরোধ করেন। তবে স্থানীয় সংসদ সদস্যের সঙ্গে প্রায় দেড় ঘণ্টা আলোচনা করে অভিযানে নামেন পরিবেশ অধিদফতরের কর্মকর্তারা।
কর্মকর্তারা অভিযানে বের হলে সংসদ সদস্য বাবলা সাংবাদিকদের বলেন, আদালতের নির্দেশ রয়েছে, সুতরাং অভিযান চালাতে হবে। ওনারা এখন অভিযান চালাবেন।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *